ছিলেন যাত্রাশিল্পী, আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে কোটিপতি

  • আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মাহাবুব আলম মিরাণ
  • সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে স্থানীয় এমপি মির্জা আজমের মন সহজেই জয় করেন
জামালপুর প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৫৯
মাহাবুব আলম মিরাণ

একসময় যাত্রাশিল্পী হিসেবে কাজ করতেন মাহাবুব আলম মিরাণ। অভাব-অনটনের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে একপর্যায়ে পাড়ি দেন সৌদি আরবে। তিন-চার বছর পর এলাকায় ফিরে যোগ দেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের চর হাটবাড়ি এলাকার এই নেতাকে।

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মির্জা আজমের মন সহজেই জয় করেন মিরাণ। দুই দফায় সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। জমি দখলসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আলিশান বাড়ি, গাড়ি ও শত শত একর ফসলি জমি কিনেছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহাবুব আলম মিরাণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিও। বিগত সরকারের সময় ছিলেন জামালপুর-৩ আসনের এমপি মির্জা আজমের ডান হাত। ৫ আগস্টের পর থেকে সপরিবার আত্মগোপনে আছেন মিরাণ।

সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে প্রায় ৩০ শতাংশ জমির ওপর করেছেন আলিশান বাড়ি। বাড়ির চারপাশে রয়েছে বিশাল বাগান। অভিযোগ রয়েছে, এই বাড়ি করতে ইউনিয়ন পরিষদের জমিও দখল করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশাল আকারের দুটি টিনশেড বাড়ি ভাড়ায় দিয়েছেন তিনি। প্রধান সড়কে রয়েছে চারতলা বাড়ি। অভিযোগ রয়েছে, জামালপুর সদর, ময়মনসিংহ এবং রাজধানীতেও বাড়ি রয়েছে মিরাণের। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁর বিরুদ্ধে মাদারগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনেও।

উপজেলার কালীবাড়ি বাজারের সোহেল বলেন, ‘সে (মিরাণ) একসময় যাত্রাশিল্পী ছিল। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। পরে বিদেশ থেকে ফিরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর মির্জা আজমের আশীর্বাদে বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি হন। পরে সিধুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। সভাপতি হওয়ার পর গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। এখন তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কালীবাড়ি বাজারেই তাঁর কয়েক একর জমি।’

সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের পাশের বাসিন্দা শরিফ উদ্দিন কাইছা মণ্ডল জানান, তাঁর ৪ শতাংশ জমি জোর করে দখলে নিয়েছেন মিরাণ চেয়ারম্যান। তখন প্রতিবাদ করার সাহস পাননি তিনি।

জামালপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘একজন যাত্রাশিল্পী থেকে শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন মাহাবুব আলম মিরাণ। তাঁর বাড়ি, গাড়িসহ বিলাসী জীবনযাপন একজন শিল্পপতিকেও হার মানিয়েছে। শুনেছি জামালপুর, ময়মনসিংহ ও রাজধানীতে বাড়ি আছে।’

মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, ‘সিধুলী ইউপির চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মিরাণের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন। তাঁকে আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত