মুরাদের অপরাজিতা ফুলের চায়ের স্বাদ নি‌তে ছু‌টে আস‌ছে মানুষ

সাদ্দাম হোসেন, বগুড়া থেকে
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ০০
অপরাজিতা ফু‌লের নীল আর বেগুনি রঙের চা পান করতে দূর-দুরান্ত থেকে আসছে মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

অপরাজিতা ফুলের চা তৈরি করে সাড়া ফে‌লে‌ছেন রওনাক হোসেন মুরাদ না‌মে এক চা বি‌ক্রেতা। এ চা পান করতে প্রতিদিন দোকানটিতে আসছেন নানা বয়সের চাপ্রেমীরা। নীল আর বেগুনি রঙের এ চা বিক্রি হয় বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

বগুড়া শহরের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উত্তর পা‌শে ছি‌লিমপুর এলাকায় এই অপরাজিতার চায়ের জন্যই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দোকানটি। দোকানের নাম ‘টুকিটাকি’। প্রতিদিন শুধু এই অপরাজিতা ফুলের চা বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার। অবশ্য চায়ের নামে পরিচিত হলেও এই পানীয়তে কিন্তু কোনো চা পাতা ব্যবহার করা হয় না।

চা বানাতে বানাতেই ৫৬ বছর বয়সী রওনাক হোসেন মুরাদ শোনালেন তাঁর গল্প। তি‌নি ব‌লেন, সাধারণ স্বাদের চা দিয়ে ছোট্ট একটা দোকান চালু ক‌রেছিলাম। বছর দু-এক আগে ছোট মে‌য়ে ইউটিউব দে‌খে এ ফু‌লের চা‌য়ের কথা জানায়। প‌রে ইউ‌টিউবে ভি‌ডিও দে‌খে চা বানানো রপ্ত ক‌রি। এরপর দোকান ও বা‌ড়ির পা‌শে রোপণ ক‌রি অপরাজিতা ফু‌লের গাছ। প্রথম প্রথম এ চা খে‌তে আগ্রহী হননি ক্রেতারা। পরে যখন এক-দুই কাপ ক‌রে বিক্রি শুরু হয় তখন অনেকে এ চা পান কর‌তে শুরু ক‌রেন। এখন ভিড় বেড়েছে শৌখিন চা-পিপাসুদের।

দোকা‌নের পা‌শে অপরাজিতা ফু‌লের গাছ। সেখান থে‌কে তাজা ফুল ছিঁড়ে তৈরি করা হয় নীল আর বেগুনি রঙের চা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দোকা‌নের পা‌শে অপরাজিতা ফু‌লের গাছ। সেখান থে‌কে তাজা ফুল ছিঁড়ে তৈরি করা হয় নীল আর বেগুনি রঙের চা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চা কীভাবে বানান জানতে চাইলে রওনাক হোসেন বলেন, প্রথ‌মে দোকা‌নের পা‌শে লাগা‌নো অপরাজিতা গাছ থে‌কে এক‌টি এক‌টি ফুল ছেঁড়া হয়। এরপর ফুল তুলে নিয়ে বৃন্ত থেকে পাপড়ি আলাদা করে ভালোমতো ধুয়ে গরম পানিতে জ্বাল দেওয়ার ব্যবস্থা করি। পাপড়ি যত সেদ্ধ হ‌বে ততই গাঢ় হ‌বে রং। পরে ছেঁকে পাপড়ি ফেলে দিয়ে পানি ঢালা হয় চায়ের কাপে। হালকা বেগুনি রঙের এ গরম পানিতে চিনি মেশাতেই হয়ে যায় অপরাজিতা ফুলের চা! কয়েক মিনিটেই প্রস্তুত। তবে হালকা বেগুনি রঙের পানিতে লেবু চিপে দিলে এই চা রং বদলে গাঢ় নীল হয়।

রওনাক হোসেন জানান, চা বিক্রি ছাড়া অন্য কোনো পেশা টানেনি তাঁকে। প্রতি কাপ চায়ের দাম ১০টাকা। দোকানের সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় হয়। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার।

চা খেতে আসা র‌ফিক তালুকদার বলেন, মুরাদ চাচার ব‌্যতিক্রমী চা অনেক মজার। তাই এখানে চা খেতে এসেছি।

অপরাজিতা ফু‌লের চা পান করতে এসেছেন এক ক্রেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অপরাজিতা ফু‌লের চা পান করতে এসেছেন এক ক্রেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জিল্লুর নামের আরেক ক্রেতা বলেন, গাঢ় নীল রঙের অপরাজিতা ফুলের চা বন্ধুদের সঙ্গে পান করতে এসেছি। অন্য জায়গা থেকে এখনকার চায়ের আলাদা টেস্ট আছে।

অপরাজিতা চা‌য়ের ভেষজ গুণ সম্পর্কে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক জিপি সাহা ব‌লেন, মানসিক অবসাদ, রক্ত জমাট বাধা, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা প্রতিরোধের পাশাপাশি অপরাজিতার নীল রঙের চায়ে রয়েছে অনেক ভেষজ গুণ। হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষায়, চর্বি কমাতে, মেদ ঝরাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও এটি অনেক কার্যকরী। জাপান, চীনসহ বি‌ভিন্ন উন্নত রাষ্ট্রের মানুষ এই চা পান ক‌রেন বলে জানান জিপি সাহা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত