‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলা মার্ডার হইছে সব ফাউ’, রাবি ছাত্রলীগ নেতা

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ২০: ১০

দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে, ওই শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম (এসএম) হলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাবি ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী আমাকে একটি অভিযোগ দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। যেহেতু এটা হলের বিষয়, সেহেতু এটা হল প্রশাসন দেখবে। আমি হল প্রাধ্যক্ষকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। তবে, তাঁর পদক্ষেপ পছন্দ না হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. সামিউল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের ২১৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী তিনি।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাজবিউল হাসান অপূর্ব।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হল সভাপতি অপূর্ব তাঁর অনুসারীদের নিয়ে তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিক টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে তাঁর মানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার ৭৭৫ টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেন। এ সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অপূর্ব বলেন, ‘এই সিটে থাকতে হলে আজকেই বাকি টাকা যেভাবেই হোক ম্যানেজ করে দিতে হবে।’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী সামিউল আরও জানান, টাকা দিতে না পারায় অপূর্ব তাঁর মা-বাবা তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে অপূর্ব উত্তেজিত হয়ে তাঁর গায়ে হাত তোলেন। এরপর অপূর্বের অনুসারীরা তাঁকে মেঝেতে ফেলে এলোপাতাড়ি কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। কক্ষ থেকে চলে যাওয়ার আগে পরদিন শুক্রবার মধ্যে বাকি টাকা দিতে না পারলে, দুপুরের মধ্যে হল থেকে চলে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সামিউলকে হুমকি দিয়ে তাঁরা বলেন, ‘এসব বিষয় কেউ জানতে পারলে তোর লাশও তোর পরিবার খুঁজে পাবে না। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলা মার্ডার হইছে সব ফাউ।’ এর আগেও ওই রুমে থাকার জন্য সামিউলের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অপূর্ব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়–প্রতিপন্ন করার জন্য আমার প্রতিপক্ষরা এসব মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে।’

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যতটা অভিযোগ করা হচ্ছে, আসলে বিষয়টা ততটাও না। রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের বিষয় থেকে এমনটা ঘটতে পারে। তবে আমরা দুই পক্ষকে ডেকে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি তদন্তের মধ্য দিয়ে মূল ঘটনা বেড়িয়ে আসবে। আর তখন আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত