মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী গ্রাম ব্রজনাথপুর। ২০০০ সালে গ্রামটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বজ্রনাথপুর দাখিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠার পর কয়েক বছর শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। তবে ২০২৩ ও ’২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসাটির সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে। শিক্ষকদের দাবি, প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকেরা হতাশায় ভুগছেন, ছাত্রদের মানোন্নয়নে কাজ করতে পারছেন না। এ কারণেই গত দুই বছর টানা সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে।
আজ সোমবার সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিন গোমস্তাপুর উপজেলার বাড়াবাড়ি ইউনিয়নের মাদ্রাসাটিতে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার নিয়ে মাদ্রাসার মাঠে বসে আছেন সহসুপার আবু বাক্কার সিদ্দিক ও সহকারী শিক্ষক ইজাজুল হক। একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন সহকারী শিক্ষিকা তানছিলা খাতুন। তাঁরা জানান, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর নিয়োগ দেওয়া হয় সুপারসহ ১৫ জন শিক্ষক। স্থানীয়দের দানের টাকায় চলতে থাকে শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু শিক্ষকদের টাকায় জায়গা-জমি ও ভবন হলেও ধীরে ধীরে নিচে নামতে থাকে শিক্ষার মান। যার প্রভাব পড়েছে ২০২৩ ও চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায়। দুই বছরই সবাই ফেল করেছেন।
এ সময় কথা হয় সহকারী শিক্ষক ইজাজুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০০ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও তিনি নিয়োগ পান ২০০৪ সালে। এর পর থেকে ভবন নির্মাণসহ প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো উন্নয়ন এবং কাগজ নবায়ন বাবদ প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন। এরপর প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার আশায় কেটে গেছে ২০টি বছর। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান থেকে একটিও টাকা বেতন পাননি। বাড়ি থেকে টাকা এনে মাদ্রাসায় খরচ যোগাযোগ গিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
তাঁর দাবি, বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সে কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
মাদ্রাসাটির সহসুপার আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে মাদ্রাসায় চাকরি নিয়েছিলাম। নিজের পরিবার থেকে টাকাপয়সা এনে মাদ্রাসার পেছনে খরচ করেছি। টাকা খরচ করতে গিয়ে পরিবারের কাছে অবহেলার পাত্র হয়েছি। যত দিন পেরিয়েছে, অভাবের কারণে তত মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। যার কারণেই শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে কাজ করতে পারিনি। এ ছাড়া সুপারের গাফিলতির কারণে নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্র নবায়ন করা হয়নি।’
আরেক শিক্ষক তানজিলা খাতুন বলেন, ‘আমরা বেতন-ভাতা ছাড়া মানবেতর জীবন যাপন করার পরেও শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবেই পরিচালনা করে আসছিলাম। যা বিগত দিনের দাখিল পরীক্ষার ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে।’
সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া আধুনিক যেসব সামগ্রী থাকার কথা প্রতিষ্ঠানে, সেসবের তিল পরিমাণও নেই। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা নেই। বারবার শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে ২০২৩ ও ’২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় ফলাফলে সবাই ফেল। ২০২৩ সালে ১৪ জন ও এবার আটজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে একজনও পাস করতে পারেনি।
পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থী সিমলা খাতুন বলেন, দেড় বছর আগে মাদ্রাসায় পড়াকালেই তার বিয়ে হয়। স্বামীর সংসারের সামলানোর পাশাপাশি পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। এ ছাড়া পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানে আধুনিক ল্যাবসহ অবকাঠামো নাই। শিক্ষেকরাও পড়িয়েছেন গা ছাড়াভাবে।
মাদ্রাসাটির একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘দান-দক্ষিণায় যুগ যুগ চলা যায় না, যার উদাহরণ এই বজ্রনাথপুর দাখিল মাদ্রাসা। যত দিন মানুষ নিজ ইচ্ছায় দান করেছে, তত দিন সঠিকভাবেই পরিচালিত হয়েছে। এখন মানুষ দান বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আজ মাদ্রাসার ফলাফল শূন্য।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদ্রাসাটি একটি নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান। সেখানে একটি মাদ্রাসা আছে বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না। ফলাফল শূন্য হওয়ার পর আমরা জেনেছি সেখানে একটি মাদ্রাসা ছিল। এ নিয়ে আমাদের কিছু করণীয় নাই।’
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম জানান, পরপর দুই বছর প্রতিষ্ঠানের ফলাফল শূন্য হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী গ্রাম ব্রজনাথপুর। ২০০০ সালে গ্রামটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বজ্রনাথপুর দাখিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠার পর কয়েক বছর শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। তবে ২০২৩ ও ’২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসাটির সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে। শিক্ষকদের দাবি, প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকেরা হতাশায় ভুগছেন, ছাত্রদের মানোন্নয়নে কাজ করতে পারছেন না। এ কারণেই গত দুই বছর টানা সব শিক্ষার্থী ফেল করেছে।
আজ সোমবার সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিন গোমস্তাপুর উপজেলার বাড়াবাড়ি ইউনিয়নের মাদ্রাসাটিতে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার নিয়ে মাদ্রাসার মাঠে বসে আছেন সহসুপার আবু বাক্কার সিদ্দিক ও সহকারী শিক্ষক ইজাজুল হক। একটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন সহকারী শিক্ষিকা তানছিলা খাতুন। তাঁরা জানান, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর নিয়োগ দেওয়া হয় সুপারসহ ১৫ জন শিক্ষক। স্থানীয়দের দানের টাকায় চলতে থাকে শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু শিক্ষকদের টাকায় জায়গা-জমি ও ভবন হলেও ধীরে ধীরে নিচে নামতে থাকে শিক্ষার মান। যার প্রভাব পড়েছে ২০২৩ ও চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায়। দুই বছরই সবাই ফেল করেছেন।
এ সময় কথা হয় সহকারী শিক্ষক ইজাজুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০০ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও তিনি নিয়োগ পান ২০০৪ সালে। এর পর থেকে ভবন নির্মাণসহ প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো উন্নয়ন এবং কাগজ নবায়ন বাবদ প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন। এরপর প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার আশায় কেটে গেছে ২০টি বছর। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান থেকে একটিও টাকা বেতন পাননি। বাড়ি থেকে টাকা এনে মাদ্রাসায় খরচ যোগাযোগ গিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
তাঁর দাবি, বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সে কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
মাদ্রাসাটির সহসুপার আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে মাদ্রাসায় চাকরি নিয়েছিলাম। নিজের পরিবার থেকে টাকাপয়সা এনে মাদ্রাসার পেছনে খরচ করেছি। টাকা খরচ করতে গিয়ে পরিবারের কাছে অবহেলার পাত্র হয়েছি। যত দিন পেরিয়েছে, অভাবের কারণে তত মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। যার কারণেই শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে কাজ করতে পারিনি। এ ছাড়া সুপারের গাফিলতির কারণে নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্র নবায়ন করা হয়নি।’
আরেক শিক্ষক তানজিলা খাতুন বলেন, ‘আমরা বেতন-ভাতা ছাড়া মানবেতর জীবন যাপন করার পরেও শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবেই পরিচালনা করে আসছিলাম। যা বিগত দিনের দাখিল পরীক্ষার ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে।’
সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া আধুনিক যেসব সামগ্রী থাকার কথা প্রতিষ্ঠানে, সেসবের তিল পরিমাণও নেই। শিক্ষকদের বেতন-ভাতা নেই। বারবার শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে ২০২৩ ও ’২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় ফলাফলে সবাই ফেল। ২০২৩ সালে ১৪ জন ও এবার আটজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে একজনও পাস করতে পারেনি।
পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থী সিমলা খাতুন বলেন, দেড় বছর আগে মাদ্রাসায় পড়াকালেই তার বিয়ে হয়। স্বামীর সংসারের সামলানোর পাশাপাশি পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। এ ছাড়া পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানে আধুনিক ল্যাবসহ অবকাঠামো নাই। শিক্ষেকরাও পড়িয়েছেন গা ছাড়াভাবে।
মাদ্রাসাটির একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘দান-দক্ষিণায় যুগ যুগ চলা যায় না, যার উদাহরণ এই বজ্রনাথপুর দাখিল মাদ্রাসা। যত দিন মানুষ নিজ ইচ্ছায় দান করেছে, তত দিন সঠিকভাবেই পরিচালিত হয়েছে। এখন মানুষ দান বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আজ মাদ্রাসার ফলাফল শূন্য।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদ্রাসাটি একটি নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান। সেখানে একটি মাদ্রাসা আছে বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না। ফলাফল শূন্য হওয়ার পর আমরা জেনেছি সেখানে একটি মাদ্রাসা ছিল। এ নিয়ে আমাদের কিছু করণীয় নাই।’
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম জানান, পরপর দুই বছর প্রতিষ্ঠানের ফলাফল শূন্য হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেটে মাদক সেবনকালে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নগরের তালতলা এলাকার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
৫ মিনিট আগেবরগুনার তালতলীতে তরমুজচাষিদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে তরমুজচাষি রাকিব ভদ্দর বাদী হয়ে তালতলী থানায় শহীদুল ইসলামসহ আটজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
১০ মিনিট আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছে বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক মানববন্ধনে তাঁরা এ অভিযোগ করেন।
১৫ মিনিট আগেপদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগে একজন সিনিয়র সহকারী সচিব ও দুই সার্ভেয়ারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে ভূমি মালিকদের ক্ষতিপূরণের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে...
৩২ মিনিট আগে