অচল লাইনে সচল বিল

ফয়েজ আহম্মদ,মদন (নেত্রকোনা) 
Thumbnail image

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) সেবা না পেয়েও নেত্রকোনার মদনের গ্রাহকদের প্রতি মাসেই গুনতে হচ্ছে টেলিফোন বিল। দীর্ঘ আট বছরের বেশি সময় ধরে সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবহারকারীরা। দীর্ঘদিন ধরে বিটিসিএলের লাইনে কাজ না করায় অধিকাংশ তার নষ্ট হয়ে গেছে। জনবল সংকটের কারণে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সংযোগ পুনরায় সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অচল লাইনে সচল বিল থাকায় গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মদন বিটিসিএল অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের (বিটিটিবি) মদন শাখার অফিস ১৯৮৩ সালে উদ্বোধন করা হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে পুনর্গঠন করে এর নাম দেওয়া হয় বিটিসিএল। মদন উপজেলায় তিন শ টেলিফোন সংযোগের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও তখন সর্বোচ্চ গ্রাহকসংখ্যা হয় ১৯০ টি। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৭টি তে। যার মধ্যে সরকারি অফিস ও ব্যক্তি মালিকানা প্রায় ৬১টি টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এর মধ্য কয়েক বছর যাবৎ সরকারি ২৩ টি অফিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও নিয়মিত বিল পরিশোধ করে যাচ্ছেন।

গ্রাহক সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থাপক নিরাময় সরকার জানান, আমি যোগদান করেছি তিন বছর হয়েছে। তখন থেকেই আমার অফিসে টেলিফোনের সেবা নেই। কিন্তু প্রতি মাসেই বিল আসছে যা পরিশোধ করে যাচ্ছি। সেবা সচ্ছল করে দেওয়া জন্য বার বরা বলা হলেও কোনো  কাজ হচ্ছে না। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মাসুদ করিম সিদ্দিকী জানান, টেলিফোনের সেবা নেই কিন্তু বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। মদন বিটিসিএল অফিসে আবেদন করেছি। কিন্তু এর সুরাহা হয়নি। 

এদিকে যাদের টেলিফোনে সংযোগ রয়েছে কিন্তু সেবা পাচ্ছে না। তাঁরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সংশ্লিষ্ট মহলকে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি। অথচ মাসের পর মাস বিল আসছে। ফলে গ্রাহকেরা সেবা না পেয়েও বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ গ্রাহক এখন আর বিটিসিএল যোগাযোগ করেন না।

মদন টেলিফোন ভবন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মদন বিটিসিএল কার্যালয়ে একজন অফিস স্টাফ রয়েছে। ভবনের সামনে টেলিফোন সংযোগে ব্যবহৃত তাড় ও ড্রাম এলোমেলোভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। ভবনের অবস্থা খুবই বেহাল।  

এ সব অনিয়ম অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে মদন টেলিফোন ভবনের (বিটিসিএল) সুপারভাইজার  (টেকনিক্যাল) মো. সোহরাব উদ্দিন জানান, ‘আমাদের লোকবলের সংকটের কারণে সেবা দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এলাকায় টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন আছে। তবে কোনো গ্রাহকের যদি সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ করতে চায় তাহলে সহকারী ব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

 লাইন বিচ্ছিন্ন থাকার পরও কেন বিল আসে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। তবে, তিন মাস পর্যন্ত যদি কেউ বিল পরিশোধ না করে তাহলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। আমাদের জনবল সংকটের কারণে সেটাও করা হচ্ছে না। গ্রাহকগণ যদি বকেয়া বিল পরিশোধ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তাহলে তাঁর কাছে আর বিল যাবে না। নয়তো সরকারি হিসাবে প্রতি মাসে টেলিফোনের জন্য ১৭৮ টাকা বিল পরিশোধ করতে হবে।

নেত্রকোনার বিটিসিএল এর সহকারী প্রকৌশলী (ফোন্স) মো. নাজিম উদ্দিন জানান, অচল সংযোগগুলোর ব্যাপারে আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন করার কোনো আবেদন করেনি। আবেদন করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমাদের নতুন প্রকল্প জি ফোন এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দুই এক মাসের মধ্যেই আমরা জি ফোন প্রকল্পটি চালু করব। তখন পুরান নম্বরগুলো ওই প্রকল্পের(জি ফোন) আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত