নলডাঙ্গার ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
Thumbnail image

নাটোরের নলডাঙ্গার ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন (২২) হত্যা মামলায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলোচিত এ মামলার রায় দেন। মামলায় আসাদুজ্জামানের দুই ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক ও আলীম আল রাজীও আসামি ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। 

রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, গত ৩০ জুন মামলাটি নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছিল। এরপর আদালতে ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এ রায় দিলেন। 

রায়ে যিনি দণ্ডিত হয়েছেন তিনি পলাতক আছেন। অন্য দুজন কারাবন্দী ছিলেন। রায় ঘোষণার জন্য তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তারা খালাস পাওয়ায় কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। পলাতক আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন। গ্রেপ্তারের পর তাঁর সাজা কার্যকর হবে। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা উপজেলার আমতলী বাজারের চার রাস্তার মোড়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক জামিউল আলীম জীবন ও তাঁর বাবা ফরহাদ শাহকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এর চার দিন পর ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামিউল আলীম জীবন। 

এর আগে স্বামী ও ছেলেকে মারধরের ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর জামিউলের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এতে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর দুই ভাইকে আসামি করা হয়। জামিউল পরে মারা গেলে এই মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, এলাকার একটি মসজিদের মাইক চুরি নিয়ে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে সালিস অনুষ্ঠিত হয়। জামিউল আলীম ওরফে জীবনকে ওই চুরির ঘটনায় জড়িত করে সন্দেহভাজনদের তালিকা করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই রাতেই জামিউল আলীম ফেসবুক লাইভে এসে সালিস ষড়যন্ত্রমূলক ও আক্রোশবশত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সমালোচনাও করেন লাইভে। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে তাঁর বাবা ফরহাদ শাহকেও পেটানো হয়। 

মামলা তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি আসাদুজ্জামান আসাদ ও তাঁর দুই ভাইকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন নলডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার চৌধুরী। হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় আসাদুজ্জামানকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। আওয়ামী লীগের দলীয় পদও হারান তিনি। 

মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং নিহতের পরিবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, ‘প্রকাশ্যে জামিউলকে পেটানো হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম, রায়ে সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে। কিন্তু আদালতের রায়ে আমরা খুশি হতে পারিনি।’ 

নিহত জামিউলের মা ও মামলার বাদী জাহানারা বেগমও একই কথা বলেছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত