এনায়েতপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের লাশ কবর থেকে না তোলার দাবি

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ০৭
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহত এক ব্যক্তির বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত তিনজনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন না করার ও নিহতের ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বজনেরা। আজ রোববার উপজেলার খুকনী ইউনিয়নে নিজ নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত ইয়াহিয়ার স্ত্রী শাহানা খাতুন, মাদ্রাসা ছাত্র হাফেজ সিয়াম হোসেনের বাবা আব্দুল কদ্দুস ও কলেজছাত্র শিহাব হোসেনের মা শাহনাজ বেগম।

নিহত ইয়াহিয়ার স্ত্রী শাহানা খাতুন বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমার স্বামী ইয়াহিয়া পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এই ঘটনায় আমি মামলা করতে ইচ্ছুক ছিলাম না কিছু লোক এসে আমাদের পুরো পরিবার ও সংসারের দায়িত্ব নেন। তাঁরা আমার কাছে থেকে একটা সই নেন। তারপর সবার মুখে মুখে জানতে পারি তাঁরা এই সই দিয়ে থানায় এজাহার দিয়েছে মামলার বিষয় আমি কিছুই জানি না। আর আমার স্বামীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করতে দেব না। নতুন করে আর শোক নিতে পারব না। স্বামী হারিয়ে এমনিতে আমরা দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। এখন মরা মানুষকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে। আমার চাওয়া একটাই আমার স্বামী যেন শহীদের মর্যাদা পায়।

মাদ্রাসা ছাত্র হাফেজ সিয়াম হোসেনের বাবা আব্দুল কদ্দুস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে থানার সামনে পুলিশের গুলিতে মারা যান। আমরা খবর পেয়ে গিয়ে দেখি ছেলের লাশ এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ওখান থেকে লাশ নিয়ে এসে আমার ছেলের লাশ দাফন করি। কে বা কারা এ বিষয় মামলা করেছে, মামলার বাদীকে তাঁকেও আমরা চিনি না। আমাদের কাছে থেকে মামলার বিষয় অনুমতি নেয় নাই কেউ। আমার ছেলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করবে বলে পুলিশ এসে বলে গেছে। আমার ছেলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করতে দেব না। আমরা তো মামলা করি নাই, লাশ কেন তুলবে। এ মামলা প্রত্যাহার চাই।

কলেজ শিক্ষার্থী শিহাব হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের কাছে মামলা প্রত্যাহার চেয়েছেন তাঁর মা শাহনাজ বেগম। তিনি বলেন, আমার সন্তান শিহাব হোসেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে সে জন্য পুরো পরিবার চরমভাবে কষ্ট পাচ্ছি। এর জন্য মামলা দিয়ে কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি আমরা করতে চাই না। কে মামলা দিয়েছে তাঁকে আমরা চিনি না। আমরা কাউকে মামলা দেওয়ার অনুমতি দেইনি আমি তো মামলা করি নাই। তাই মামলা চালানোর কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি চাই এই মামলা প্রত্যাহার করা হোক।

শিহাব হোসেনের মা আরও বলেন, ‘অহেতুক নিরপরাধ লোকদের আসামি করে শহীদ সন্তানের আত্মাকে কষ্ট দিতে চাই না। মরদেহ যেন কাটা-ছেঁড়া না করা হয়। এই মামলা যেন প্রত্যাহার করা হয়। আর যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য আমার সন্তানের লাশকে ব্যবহার করে ব্যবসা করতে চান তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ স্বাধীনতা তাঁদের প্রতি যেন যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেখানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনেরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত