মহাস্থানগড়ে মাটি খুঁড়লেই বেরোচ্ছে প্রত্নসামগ্রী, বেচে দিচ্ছেন স্থানীয়রা

গণেশ দাস, বগুড়া
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ২২: ৫৪
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ২১

পুণ্ড্রনগর খ্যাত বগুড়ার মহাস্থানগড়ের মথুরা গ্রামে পদ্মার ভিটার আশপাশের ঢিবিগুলোর মাটি কাটা বন্ধ হয়েছে। তবে এখনো পাওয়া যায়নি উঁচু ঢিবি কাটার সময় মাটির নিচ থেকে বের হওয়া প্রাচীন আমলের মূর্তিটির মুখমণ্ডলের অংশটি। এটি এরই মধ্যে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে। মহাস্থান জাদুঘরের সংরক্ষক রাজিয়া সুলতানা বলছেন, ‘মূর্তির ওই অংশ কোথায় বিক্রি করেছে সেই তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে সেখান থেকেই উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।’ 

ওই গ্রামের প্রাচীন নিদর্শন পদ্মার ভিটার আশপাশের ঢিবিগুলোর মাটি কেটে বিক্রি করা নিয়ে গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) আজকের পত্রিকায় ‘পুণ্ড্রনগরের মাটি বেচে দিচ্ছে যুবলীগ-যুবদল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর গত শনিবার থেকে মাটি কাটা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে মথুরা গ্রামে ঐতিহাসিক পদ্মার ভিটাসংলগ্ন উঁচু ঢিবির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছিল। মাটি কাটতে গিয়ে ছয়টি পাতকুয়ার সন্ধান মেলে। সেখান থেকে অনেক পুরাকীর্তির ভগ্নাংশ, নানা রঙের পাথর ও মালা পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি মূর্তির মাথা ছিল। সেখানে যে যা পাচ্ছে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সব পুরাকীর্তির মধ্যে কিছু নিদর্শন লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করেছেন স্থানীয় আরিফ। তিনি মূর্তির মাথাটি ১৪ হাজার টাকায় বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন।

মাটি কাটার সময় সন্ধান মিলেছে ছয়টি পাতকুয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ছাড়া একটি পোড়া মাটির শঙ্খের ভগ্নাংশ, বিভিন্ন রঙের পাথর ও পাথরের মালা পেয়েছেন আরিফ। খবরটি জানতে পেরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মীরা গত শনিবার থেকে মথুরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে খোঁজ নেন, কিন্তু মাথাটি এখনো উদ্ধার হয়নি। 

জানতে চাইলে আরিফ বলেন, ‘পোড়ামাটির মূর্তির মাথাটি ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। সেখান থেকে পাওয়া একটি পুঁতি বিক্রি করেছি ৪০ হাজার টাকায়। এখনো যেসব পুঁতি রয়েছে, সেগুলো কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে।’

ওই মূর্তির মাথার ছবি দেখে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মূর্তির মুকুটের ওপর যক্ষ বা কুবেরের প্রতিকৃতি রয়েছে। পোড়ামাটির তৈরি বলে মনে হচ্ছে। মূর্তিটি পাল অথবা সেন আমলের হবে।’

মাটির নিচে পাওয়া দামি পাথর ও প্রত্নসামগ্রী বেচে দিচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকাএ নিয়ে জানতে চাইলে বগুড়া সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাছিম রেজা বলেন, ‘মহাস্থানের মথুরা গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত দুটি ট্রাকও।’ 

এদিকে গত ৪ জানুয়ারি বিকেলে মহাস্থানগড় এলাকার অদূরে দিঘলকান্দী গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে বস্তায় মোড়ানো পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি বিষ্ণুমূর্তি পাওয়া যায়। এক মিটার লম্বা ও ৪৫ সেন্টিমিটার চওড়া ওই মূর্তি উদ্ধার করে স্থানীরা পুলিশের জিম্মায় দেয়। পরে সেটি মহাস্থান জাদুঘরের জিম্মায় দেওয়া হয়। 

স্থানীয়দের ধারণা, উদ্ধার করা মূর্তির মাথাটিও মথুরা গ্রামে ঢিবি কাটতে গিয়ে মাটির নিচে পাওয়া গেছে। পাচার করার জন্যই মূর্তিটি নদীর পাড়ে বস্তায় মুড়িয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত