মামুনের কারণে অশান্তিতে ছিলেন খায়রুন, দাবি আত্মীয়ের 

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৫: ২৪
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২২, ২৩: ৫৫

নাটোরের গুরুদাসপুরে কলেজছাত্র মো. মামুন হোসেনকে (২২) বিয়ের আট মাসের মাথায় কলেজশিক্ষক খাইরুন নাহারের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে আসেন খায়রুন নাহারের ভাগনে আমিরুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, মামুনের কারণেই অশান্তিতে ছিলেন তাঁর খালা।

আজ রোববার দুপুরে আমিরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত সে ৫ লাখ টাকা ও একটি পালসার মোটরসাইকেল নিয়েছে। সম্প্রতি ওই মোটরসাইকেল তার ভালো লাগছে না এমন কথা জানিয়ে আরও দামি মোটরসাইকেল চেয়েছে। এ নিয়ে তার খালামণি (খায়রুন) মানসিক চাপে ছিলেন।’

আটক মামুন একজন নেশাখোর জানিয়ে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি গুরুদাসপুরে মাদক নিয়ে কিছু বখাটের মধ্যে গোলমাল হয়। এসব বিষয় নিয়ে মানসিক, পারিবারিক ও বিভিন্ন চাপে অশান্তিতে ছিলেন খায়রুন। এসব ঘটনায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাঁকে হত্যা করা হয়েছে তা জানি না।’

আমিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বিয়ের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর থেকে নিজ আত্মীয়, সহকর্মী, পরিচিতজনেরা বিভিন্ন সমালোচনা করেছেন। কেউ এটাকে পজিটিভ আবার কেউ নেগেটিভভাবে নিয়েছেন। এ নিয়েও চাপে ছিলেন খাইরুন।’

কী কারণে খায়রুন আত্মহত্যা করতে পারেন, তা তাঁর বোধগম্য নয় জানিয়ে নাহিদ বলেন, খাইরুনের আগের স্বামী বা সন্তানের পক্ষ থেকে কোনো চাপের বিষয় তাঁরা শোনেননি। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার করার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন খাইরুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের হোসেন। রোববার সকালে ঘটনাস্থল থেকে সাবের হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে একটা কল আসে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। খবর শুনেই গুরুদাসপুর থেকে ছুটে আসি। এসে দেখি বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ রয়েছে। এতে মনে হচ্ছে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’ 

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা নাটোর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দীন জানান, ‘জেলা পুলিশ রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছে। আর পিবিআই ওই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছে জেলা পুলিশ।’ 

দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী থেকে সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। তবে তাঁরা এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন কথা বলেননি। 

এর আগে আজ রোববার সকাল ৭টার দিকে কলেজশিক্ষক খাইরুন নাহারের মরদেহ শহরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। 

গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে কলেজশিক্ষক খাইরুন নাহার ও ছাত্র মো. মামুন হোসেন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষ দিকে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। জানাজানি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। 

খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত