নাব্যতার সংকটে কৃষিপণ্য পরিবহনে ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৬
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৬

বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে নাব্যতার সংকটে চলে না নৌকা। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহনে একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি। কৃষকদের বসতবাড়ি চরাঞ্চলের জমি থেকে অনেক দূরে। তাই পায়ে হেঁটে কৃষ জমিতে যাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহনে তাদের একমাত্র অবলম্বন ঘোড়ার গাড়ি। 

জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দির ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটি ইউনিয়ন যমুনা নদীতে। এসব ইউনিয়নের ৭২টি চরাঞ্চলের কৃষকেরা তাঁদের কৃষিজমিতে ধান, পাট, মরিচ, ভুট্টা, চিনাবাদাম, সরিষা, মিষ্টি আলু, গোল আলু, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, বিভিন্ন জাতের ডাল, সবজিসহ নানা ধরনের ফসলের চাষ করেন। নদীর নাব্যতা না থাকায় এসব ফসল কৃষকেরা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজেদের বসতবাড়িতে নিয়ে আসেন। 

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৭০৫ হেক্টর জমিতে সর্বমোট ৬ হাজার ৩৮২ মেট্রিকটন শাক-সবজি, ১১ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে ৩০ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ফসলই সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের।

উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের বাওইটোনা চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বহু বছর আগে থেকে আমার বাপ-দাদারা নদী ভাঙার পর সদর ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বাড়ি থেকে আমাদের জমির দূরত্ব ৯ কিলোমিটার। বন্যার সময় নৌকায় জমিতে যেতাম। এখন বেশির ভাগ সময় পায়ে হেঁটেই জমিতে যাই। তবে ফসল বা কৃষিপণ্য বাড়িতে নিয়ে আসতে ঘোড়ার গাড়িই আমাদের একমাত্র ভরসা।’ 

উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের ঘোড়ার গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বেশির ভাগ সময় ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে আমি কৃষকদের মালামাল পরিবহন করি। চর থেকে গাড়িবোঝাই ফসল এলাকায় নিয়ে যেতে প্রতি ট্রিপে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা করে ভাড়া নেই। এতে আমার সংসার খুবই ভালো চলছে। আমার বাড়ি চরে হওয়ায় ঘোড়ার জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না। আশপাশের জমিগুলো থেকে ঘোড়া পর্যাপ্ত ঘাস খায়।’ 

উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের গেন্দা সরকার বলেন, ‘আগে নদীতে পানি আছিল, তাই ফসল ঘরে আনতে কোনো খরচই হয়নি। এখন নদীত পানি নাই। তাই ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে ফসল বাড়িত আনতে বাড়তি খরচ হচ্ছে।’ 

এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, নদীর নাব্যতার সংকটে কৃষকেরা তাঁদের ফসলাদি পরিবহনসহ নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত