নাজমুল হাসান সাগর, বগুড়া থেকে
জনপ্রতিনিধিদের কাছে চাওয়া-পাওয়ার হিসাবের নিষ্পত্তি না হতেই নতুন করে বারবার নেতৃত্ব বাছাইয়ের পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছে বগুড়া সদরবাসীদের। যেন ভোট দিতে দিতেই ‘ক্লান্ত’ দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দখলে থাকা এই আসনের ভোটাররা। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় রাজনীতির বাইরে সদ্য পদত্যাগী বিএনপির সংসদ সদস্য জিএম সিরাজ বগুড়া সদরের মানুষের চাওয়া তেমন পূরণ করেননি।
রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য তৃতীয়বারের মতো ভোট দেবেন বগুড়া-৬ সদর আসনের ভোটাররা। পাঁচ বছর না গড়াতেই তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন, উপনির্বাচন নিয়ে অনেকটা বিরক্তই তাঁরা। একের পর এক ভোটাররা ভোট দিয়ে যাচ্ছেন; কিন্তু ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদ পর্যন্ত যেতে পারছেন না শুধু দলীয় রাজনীতি চিন্তা করে। দলীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচে নেতৃত্বশূন্য হয়ে অনেকটাই শোকাতুর, ক্ষুব্ধ ও হতাশ এই আসনের মানুষ। সংসদে গিয়ে তাঁদের চাওয়া-পাওয়া ও দাবি-দাওয়ার কথা বলার মতো কেউ নেই বলে আক্ষেপও জানিয়েছেন বগুড়া সদরের মানুষ।
বগুড়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা সাতমাথা। কাছেই বগুড়া জেলা স্কুলের মূল ফটক। এই ফটকের পাশেই বেশ কিছু চায়ের দোকান। সেখানে নির্বাচন নিয়ে তুমুল আলাপে মজেছেন নানা বয়সী মানুষ। তবে তাঁদের আলোচনায় আগামীকালের ভোটের থেকে বিগত কয়েকবার ভোট দিয়ে তাঁরা কী পেলেন এসব নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল বেশি।
এই এলাকাতেই ছোটখাটো ব্যবসা করেন এমদাদুল হক। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বললেন, ‘এইবারের মেয়াদে (বর্তমান সংসদ) আমরা তিনবার ভোট দেব এমপি নির্বাচনের জন্য। কিন্তু আমাদের লাভটা কী? প্রথম যে নির্বাচিত হলো সে তো শপথই নিল না। তারপর যে নির্বাচিত হলো, কিন্তু সে সংসদে গেছে কয় দিন? এখন আবার দলের রাজনীতির জন্য পদত্যাগ করছে। আমরা ভোট দেব। আবার কেউ নির্বাচিত হবে। কিন্তু তাঁরা নির্বাচিত হলেইবা কী হবে! এক বছরও সময় নাই। এই ভোট দিয়েইবা কী হবে!’
অপেক্ষাকৃত বয়সে ছোট এক যুবক এমদাদুলের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বললেন, ‘আপনি আছেন গত চার বছরের আলাপ নিয়ে। গত ১২-১৩ বছরে এই এলাকায় কী হয়েছে? এখন থেকে ১৫ বছর আগে বগুড়া উন্নত ছিল এইটা ঠিক। কিন্তু তখন অন্যান্য যে জেলা শহর বগুড়ার থেকে অনুন্নত ছিল, সেগুলো এখন বগুড়ার থেকে অনেক অনেক বেশি উন্নত। আমরা এক জায়গায় দাঁড়ায় আছি। তাই শুধু গত চার বছরে না, আমরা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বঞ্চিত। আমাদের জন্য কথা বলার মানুষ নাই। আমরা ভোট দিয়ে যাঁদের নির্বাচিত করি তাঁরা আমাদের কথা বলেন না।’
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ তোলেন কিনা উল্লাহ নামে বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি। উদ্দেশ্যহীনভাবে তিনি বলছিলেন, ‘এবার ভোট দিলে আমরা এমপি পাব বড়জোর সাত মাসের জন্য। শপথ নিতে নিতেই তাঁদের সময় শেষ হয়ে যাবে। তাঁরা আমাদের নিয়ে ভাবারই সময় পাবেন না। আমরা যেই হতভাগা সেই হতভাগাই থাকব।’ এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে এমদাদুল হক আবার বললেন, কেউ কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না। খালি ভোট চাচ্ছে। কোনো প্রার্থীর কোনো ম্যান্ডেট নাই। নিয়ম রক্ষার নির্বাচন এইটা। এসব কথাই যেন বগুড়া-৬ আসনের প্রতিটি সাধারণ ভোটারের মনের কথা।
এবারের উপনির্বাচনে বগুড়া-৬ আসনে মোট প্রার্থী ১১ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঁচজন। আলোচনায় আছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের আব্দুল মান্নান আকন্দ এবং একতারা প্রতীক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত আশরাফুল আলম (হিরো আলম)।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় টানানো পোস্টারেও উল্লেখিত প্রার্থীদের কোনো প্রতিশ্রুতি দেখা যায়নি। সাধারণ ভোটারদের এসব ক্ষোভ, হতাশা, প্রত্যাশা ও প্রশ্ন নিয়ে আলোচনায় থাকা প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়া সদরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত এটা সত্য কথা। তবে ভোট দিতে দিতে তাঁরা বিরক্ত এটার সঙ্গে আমি একমত নই। বরং মানুষ তাঁদের ভোটটা দিতে পারবেন কি না। এটা নিয়েই মনে হয় তাঁরা বেশি শঙ্কিত। কাল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হবে কি না এটা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত।’
জনগণের জন্য কী প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচন করছেন? এমন প্রশ্নে তাঁর কৌশলী উত্তর, ‘আমি আগেও পার্লামেন্টে ছিলাম। এবার যেতে পারলে পুরোনো কাজগুলো সম্পন্ন করব। নতুন করে কিছু ভাবিনি।’ তবে তাঁর নির্বাচনী পোস্টারে ‘আধুনিক সদর উপজেলা গড়ার’ কথা লেখা আছে।
একই প্রশ্ন নিয়ে কথা হয় একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের (হিরো আলম) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার বঞ্চিত বগুড়াবাসীর সঙ্গে কথা বলার জন্য সংসদে হিরো আলম যাবে। আমি নির্বাচিত হলে যথাসাধ্য কাজের চেষ্টা করব।’
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে হিরো আলম বলেন, ‘আমার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। এই সাত মাসে আমি নির্বাচিত হলে জনগণের জন্য কিছুই করতে পারব না। অযথা জনগণকে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছু করতে না পারলে সেটা বেইমানি হবে। তবে, এই এলাকায় যদি বড় বড় ১০টা সমস্যা থাকে, তাহলে সেখান থেকে একটা আমি বেছে নেব এবং সেটা সমাধানের চেষ্টা করব।’
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসানের সঙ্গে সকালে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়ে পরে কথা বলার অনুরোধ করেন, দুই ঘণ্টা পরে কল দিতে বলেন। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা হয় বগুড়ার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি হওয়ায় বর্তমান ক্ষমতাসীনদের এই এলাকা নিয়ে এক ধরনের অ্যালার্জি রয়েছে। আমাদের বগুড়া সদরের হয়ে কোনো সংসদ সদস্য, মন্ত্রী বা নেতা নেই যাঁরা এই এলাকার জনগণের হয়ে কথা বলবেন, সমস্যাগুলো সংসদে তুলে ধরবেন। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আমরা বগুড়া সদরবাসী নিদারুণ কষ্টে আছি।’
বারবার সংসদ নির্বাচন ও উপনির্বাচন নিয়ে মানুষের হতাশা ও বিরক্তি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধরেন, একটা ধারণা বলি। এটা হবে কি হবে না, সেটা পরের ব্যাপার। এই যে হিরো আলম, দুই আসনে নির্বাচন করছেন। যদি দুই আসনেই হিরো আলম নির্বাচিত হন, নির্বাচিত হওয়ার পর যদি সদর আসন ছেড়ে দেন, তাহলে তো এখানে আবার নির্বাচন হবে। হবে না? আসলে বর্তমানে বগুড়া সদর আসন হাসির খোরাক হয়ে গেছে। আসলে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দলের পক্ষ থেকে ভোট বর্জন, পদত্যাগ বা শপথ না নেওয়ার মতো কাজ করেন নেতারা। কিন্তু এগুলো জনগণ ভালোভাবে নেয় না।’
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকেই যে কয়টি সাধারণ নির্বাচন হয়েছে, সব সময় বিএনপির দখলে ছিল এই আসন। বেশির ভাগ সময় নির্বাচিত হয়েছেন দলটির প্রধান খালেদা জিয়া। এবার বগুড়া-৬ আসনে মোট ১৪৩টি ভোটকেন্দ্র। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে সকাল থেকেই। এখন শুধু দিন গড়িয়ে রাত পোহানোর অপেক্ষা।
জনপ্রতিনিধিদের কাছে চাওয়া-পাওয়ার হিসাবের নিষ্পত্তি না হতেই নতুন করে বারবার নেতৃত্ব বাছাইয়ের পরীক্ষায় পড়তে হচ্ছে বগুড়া সদরবাসীদের। যেন ভোট দিতে দিতেই ‘ক্লান্ত’ দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দখলে থাকা এই আসনের ভোটাররা। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় রাজনীতির বাইরে সদ্য পদত্যাগী বিএনপির সংসদ সদস্য জিএম সিরাজ বগুড়া সদরের মানুষের চাওয়া তেমন পূরণ করেননি।
রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য তৃতীয়বারের মতো ভোট দেবেন বগুড়া-৬ সদর আসনের ভোটাররা। পাঁচ বছর না গড়াতেই তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন, উপনির্বাচন নিয়ে অনেকটা বিরক্তই তাঁরা। একের পর এক ভোটাররা ভোট দিয়ে যাচ্ছেন; কিন্তু ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদ পর্যন্ত যেতে পারছেন না শুধু দলীয় রাজনীতি চিন্তা করে। দলীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচে নেতৃত্বশূন্য হয়ে অনেকটাই শোকাতুর, ক্ষুব্ধ ও হতাশ এই আসনের মানুষ। সংসদে গিয়ে তাঁদের চাওয়া-পাওয়া ও দাবি-দাওয়ার কথা বলার মতো কেউ নেই বলে আক্ষেপও জানিয়েছেন বগুড়া সদরের মানুষ।
বগুড়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা সাতমাথা। কাছেই বগুড়া জেলা স্কুলের মূল ফটক। এই ফটকের পাশেই বেশ কিছু চায়ের দোকান। সেখানে নির্বাচন নিয়ে তুমুল আলাপে মজেছেন নানা বয়সী মানুষ। তবে তাঁদের আলোচনায় আগামীকালের ভোটের থেকে বিগত কয়েকবার ভোট দিয়ে তাঁরা কী পেলেন এসব নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল বেশি।
এই এলাকাতেই ছোটখাটো ব্যবসা করেন এমদাদুল হক। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বললেন, ‘এইবারের মেয়াদে (বর্তমান সংসদ) আমরা তিনবার ভোট দেব এমপি নির্বাচনের জন্য। কিন্তু আমাদের লাভটা কী? প্রথম যে নির্বাচিত হলো সে তো শপথই নিল না। তারপর যে নির্বাচিত হলো, কিন্তু সে সংসদে গেছে কয় দিন? এখন আবার দলের রাজনীতির জন্য পদত্যাগ করছে। আমরা ভোট দেব। আবার কেউ নির্বাচিত হবে। কিন্তু তাঁরা নির্বাচিত হলেইবা কী হবে! এক বছরও সময় নাই। এই ভোট দিয়েইবা কী হবে!’
অপেক্ষাকৃত বয়সে ছোট এক যুবক এমদাদুলের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বললেন, ‘আপনি আছেন গত চার বছরের আলাপ নিয়ে। গত ১২-১৩ বছরে এই এলাকায় কী হয়েছে? এখন থেকে ১৫ বছর আগে বগুড়া উন্নত ছিল এইটা ঠিক। কিন্তু তখন অন্যান্য যে জেলা শহর বগুড়ার থেকে অনুন্নত ছিল, সেগুলো এখন বগুড়ার থেকে অনেক অনেক বেশি উন্নত। আমরা এক জায়গায় দাঁড়ায় আছি। তাই শুধু গত চার বছরে না, আমরা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বঞ্চিত। আমাদের জন্য কথা বলার মানুষ নাই। আমরা ভোট দিয়ে যাঁদের নির্বাচিত করি তাঁরা আমাদের কথা বলেন না।’
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ তোলেন কিনা উল্লাহ নামে বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি। উদ্দেশ্যহীনভাবে তিনি বলছিলেন, ‘এবার ভোট দিলে আমরা এমপি পাব বড়জোর সাত মাসের জন্য। শপথ নিতে নিতেই তাঁদের সময় শেষ হয়ে যাবে। তাঁরা আমাদের নিয়ে ভাবারই সময় পাবেন না। আমরা যেই হতভাগা সেই হতভাগাই থাকব।’ এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে এমদাদুল হক আবার বললেন, কেউ কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না। খালি ভোট চাচ্ছে। কোনো প্রার্থীর কোনো ম্যান্ডেট নাই। নিয়ম রক্ষার নির্বাচন এইটা। এসব কথাই যেন বগুড়া-৬ আসনের প্রতিটি সাধারণ ভোটারের মনের কথা।
এবারের উপনির্বাচনে বগুড়া-৬ আসনে মোট প্রার্থী ১১ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঁচজন। আলোচনায় আছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের আব্দুল মান্নান আকন্দ এবং একতারা প্রতীক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত আশরাফুল আলম (হিরো আলম)।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় টানানো পোস্টারেও উল্লেখিত প্রার্থীদের কোনো প্রতিশ্রুতি দেখা যায়নি। সাধারণ ভোটারদের এসব ক্ষোভ, হতাশা, প্রত্যাশা ও প্রশ্ন নিয়ে আলোচনায় থাকা প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়া সদরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত এটা সত্য কথা। তবে ভোট দিতে দিতে তাঁরা বিরক্ত এটার সঙ্গে আমি একমত নই। বরং মানুষ তাঁদের ভোটটা দিতে পারবেন কি না। এটা নিয়েই মনে হয় তাঁরা বেশি শঙ্কিত। কাল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হবে কি না এটা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত।’
জনগণের জন্য কী প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচন করছেন? এমন প্রশ্নে তাঁর কৌশলী উত্তর, ‘আমি আগেও পার্লামেন্টে ছিলাম। এবার যেতে পারলে পুরোনো কাজগুলো সম্পন্ন করব। নতুন করে কিছু ভাবিনি।’ তবে তাঁর নির্বাচনী পোস্টারে ‘আধুনিক সদর উপজেলা গড়ার’ কথা লেখা আছে।
একই প্রশ্ন নিয়ে কথা হয় একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের (হিরো আলম) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার বঞ্চিত বগুড়াবাসীর সঙ্গে কথা বলার জন্য সংসদে হিরো আলম যাবে। আমি নির্বাচিত হলে যথাসাধ্য কাজের চেষ্টা করব।’
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে হিরো আলম বলেন, ‘আমার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। এই সাত মাসে আমি নির্বাচিত হলে জনগণের জন্য কিছুই করতে পারব না। অযথা জনগণকে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছু করতে না পারলে সেটা বেইমানি হবে। তবে, এই এলাকায় যদি বড় বড় ১০টা সমস্যা থাকে, তাহলে সেখান থেকে একটা আমি বেছে নেব এবং সেটা সমাধানের চেষ্টা করব।’
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসানের সঙ্গে সকালে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়ে পরে কথা বলার অনুরোধ করেন, দুই ঘণ্টা পরে কল দিতে বলেন। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা হয় বগুড়ার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিনের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি হওয়ায় বর্তমান ক্ষমতাসীনদের এই এলাকা নিয়ে এক ধরনের অ্যালার্জি রয়েছে। আমাদের বগুড়া সদরের হয়ে কোনো সংসদ সদস্য, মন্ত্রী বা নেতা নেই যাঁরা এই এলাকার জনগণের হয়ে কথা বলবেন, সমস্যাগুলো সংসদে তুলে ধরবেন। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আমরা বগুড়া সদরবাসী নিদারুণ কষ্টে আছি।’
বারবার সংসদ নির্বাচন ও উপনির্বাচন নিয়ে মানুষের হতাশা ও বিরক্তি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধরেন, একটা ধারণা বলি। এটা হবে কি হবে না, সেটা পরের ব্যাপার। এই যে হিরো আলম, দুই আসনে নির্বাচন করছেন। যদি দুই আসনেই হিরো আলম নির্বাচিত হন, নির্বাচিত হওয়ার পর যদি সদর আসন ছেড়ে দেন, তাহলে তো এখানে আবার নির্বাচন হবে। হবে না? আসলে বর্তমানে বগুড়া সদর আসন হাসির খোরাক হয়ে গেছে। আসলে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দলের পক্ষ থেকে ভোট বর্জন, পদত্যাগ বা শপথ না নেওয়ার মতো কাজ করেন নেতারা। কিন্তু এগুলো জনগণ ভালোভাবে নেয় না।’
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকেই যে কয়টি সাধারণ নির্বাচন হয়েছে, সব সময় বিএনপির দখলে ছিল এই আসন। বেশির ভাগ সময় নির্বাচিত হয়েছেন দলটির প্রধান খালেদা জিয়া। এবার বগুড়া-৬ আসনে মোট ১৪৩টি ভোটকেন্দ্র। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে সকাল থেকেই। এখন শুধু দিন গড়িয়ে রাত পোহানোর অপেক্ষা।
ঝিনাইদহ সদরের নতুন বাড়ি এলাকায় দুই ট্রাকের সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামের এক ট্রাকচালকের নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন আরও ৩ জন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৩৩ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাজেদুল লস্কর (৩২) নামের এক ব্যক্তির লাঠির আঘাতে তার চাচাতো ভাই আপেল লস্করের (৫০) মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি লস্কর পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সাজেদুল লস্করকে আটক করেছে পুলিশ। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আউয়াল কবির বিষয়টি নিশ
১ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুখাইজুড়ি নদী একসময় প্রবহমান ছিল। এতে এলাকার মানুষ গোসল দিত, মাছ ধরত ও হাঁস পালন করত। সেই নদী দখল করে বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে ছোট ছোট ঘের তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
১ ঘণ্টা আগেকুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার একটি রেস্তোরাঁর কর্মী তোফাজ্জল হোসেন। অর্থের অভাবে লেখাপড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি তাঁর। ১৩ বছর বয়সে কাজ শুরু করেন রেস্তোরাঁয়।
১ ঘণ্টা আগে