Ajker Patrika

বগুড়ায় শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার, তহমিনাকে রিমান্ডে নেওয়ার অপেক্ষায় পুলিশ

বগুড়া প্রতিনিধি
মাহাদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মাহাদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় শিশু মাহাদী হাসানের (৪) বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জনগণ তহমিনা নামের এক নারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। গতকাল শনিবার রাতের ফ্লাইটে তহমিনার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই শুক্রবার সকালে তাঁকে আটক করা হয়। ওইদিন সকালে ওই শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

বগুড়া শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে মাহাদী হাসান। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। শুক্রবার ভোরে প্রতিবেশী তহমিনার ঘরের পেছন থেকে তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার হয়। নিখোঁজ হওয়ার আগে শিশুটিকে তহমিনার সঙ্গে দেখা গেছে। এ কারণে স্থানীয় জনগণ তাঁকে আটক করে। পরে তাঁর ঘর তল্লাশি করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়ে তিন মাস ধরে নিশিন্দারা ধমকপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন তহমিনা। শনিবার রাতের ফ্লাইটে তহমিনা মালয়েশিয়া চলে যেতেন। তহমিনার বাবার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার জানগ্রামে। প্রথম স্বামী আনিস মণ্ডলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বিয়ে করেন বগুড়া সদরে ঘোলাগাড়ি গ্রামের আলিফ মিয়াকে।

তহমিনার মা আক্তার বানু বলেন, কয়েক বছর আগে তহমিনা বিদেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেয়। বগুড়া সদরের নামুজা এলাকার এক ব্যক্তিকে বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা দিলেও বিদেশ যেতে পারে না। এমনকি সেই টাকাও ফেরত পায় না। এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে স্বামী আলিফের সঙ্গে ঢাকায় চলে যায়। সেখানে দুই বছর গার্মেন্টসে কাজ করে বগুড়ায় ফিরে আসে। আলিফ গ্রামের বাড়িতে উঠলেও তহমিনা নিশিন্দারা ধমকপাড়ায় আলিফের বোনের সহযোগিতায় সায়েদ আলীর বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। সেখানে মাঝেমধ্যে আলিফ যাতায়াত করত এবং সংসার খরচ চালাত।

আক্তার বানু আরও বলেন, আলিফের খালাতো বোন নিহত শিশু মাহাদীর মা রুবি বেগম। তাঁর এক ছেলে মালয়েশিয়া থাকে। সেই ছেলে তহমিনাকে টুরিস্ট ভিসায় সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা পাঠায়। শনিবার রাতের ফ্লাইটে তহমিনার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার তিনি ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু তার আগে মাহাদীকে হত্যার অভিযোগে জনগণ আটকের পর মারধর করে তাঁকে পুলিশ দেয়। তিনি দাবি করেন, এই হত্যার সঙ্গে তহমিনা জড়িত না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। অন্য কেউ শিশুটিকে হত্যা করে তহমিনাকে ফাঁসিয়েছে। তহমিনা মালয়েশিয়া গিয়ে কাজ করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার কথা ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার দিনই শিশু মাহাদীর বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তহমিনা কারাগারে রয়েছেন। তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কিন্তু জনগণের মারধরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। ওসি আরও বলেন, পুলিশ বিভিন্ন কৌশলে কাজ করছে। লাশ উদ্ধারের পরদিন ভাড়া বাসার ছাদে শিশুটির স্যান্ডেল পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত