স্কুলশিক্ষক ও ছেলের বিরুদ্ধে বাউলশিল্পীদের মারধরের অভিযোগ

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৫: ১৯
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৫: ৩১

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হাফিজুর রহমান নামে এক স্কুলশিক্ষক ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে দুই বাউলশিল্পী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান কাস্তা গ্রামের বাসিন্দা এবং কাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি ৭ নম্বর মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিলের বড় ভাই। 

স্থানীয়রা জানান, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের বাউলশিল্পী কামনা সরকার (২৮), তাঁর স্বামী বাবু সরকার, আরেক শিল্পী উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ঘোনা কালজানি গ্রামের রাঙা হোসেনের মেয়ে বন্যা খাতুনকে নিয়ে তাড়াশের ভোগলমান গ্রামের এক স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে কাস্তা বাজারে এসে নাজমুল নামে তাঁদের একজন যন্ত্রসংগীত বাদ্যকরের সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় সেখানে থাকা শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিল্পী কামনা সরকার ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বেশভূষা (সাজসজ্জা) নিয়ে কটূক্তি করেন। ওই শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে হাফিজুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের গালাগালি করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ওই শিক্ষকের ছেলে হৃদয় হোসেন (২৬) ঘটনাস্থলে এসে বাবার সঙ্গে মিলে শিল্পীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। 

ঘটনার সময় শিল্পী কামনা সরকার শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও তাঁর ছেলেকে সংযত হয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় হাফিজুর রহমান শিল্পী কামনার পেটে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পাশাপাশি বাবা-ছেলে মিলে দুই শিল্পীকে মারধর করেন। তাঁদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে এবং উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রাকিবুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে শিল্পী কামনা সরকারকে স্থানান্তর করেন। 

অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাউলশিল্পীরা আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। তাই আমার ছেলে তাঁদের দুই-একটি চড়-থাপ্পড় মেরেছে। তবে গুরুতর আহত হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ 

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আহত এক শিল্পীকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

অভিযোগের বিষয়ে মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল বলেন, ‘আমার বড় ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে শিল্পীরা গালাগালি করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে শিল্পী কামনা সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়েছি।’ 

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগও করেননি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত