আদমদীঘিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে প্লাস্টিক কারখানা 

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৭: ৩৯

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে পরিবেশ অধিদপ্তরে কোনো প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা। সান্তাহার পৌর শহরের হবির মোড় নামক এলাকায় গড়ে ওঠা এই কারখানাটি শিশু-কিশোর শ্রমিক দিয়ে চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

কারখানা মালিক দাবি করেছেন, ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে, শিগগিরই অনুমতি মিলবে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে পৌর শহরের হবির মোড় এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পের দক্ষিণে সড়ক ঘেঁষে কারখানাটির সাইনবোর্ড ঝুলছে। সেখানে লেখা ‘জি এস প্লাস্টিক ফ্যাক্টরি’। ভেতরে কাজ করছেন শ্রমিকেরা। রিসাইক্লিংয়ের জন্য রোদে শুকাতে দেওয়া পলিথিনগুলো কয়েকজন মিলে বাছাই করছেন। সামান্য বাতাস হলেই এসব পলিথিন উড়ে যাচ্ছে পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও সড়কে। ফলে নষ্ট হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই কারখানায় কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান, সান্তাহার পৌর শহরের লকো পশ্চিম কলোনির সোলায়মান সরদারের চাতাল ভাড়া নিয়ে গোপীনাথ সরকার নামে এক ব্যবসায়ী তাঁর স্ত্রী উজ্জলা রাণী সরকারের নামে শুধুমাত্র পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি ছাড়পত্র নিয়ে কারখানাটি চালু করেছেন। প্রথম দিকে কারখানাটিতে শিশু শ্রমিক ব্যবহার করলেও বর্তমানে কয়েকজন কিশোর এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। এ দিকে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র থাকলেও কারখানায় কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা হয়নি।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানাওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নেহাল আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেই। উৎপাদনগত ছাড়পত্রও নেই। কারখানা মালিক সম্পদশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পায় না। এ কারণে তিনি অবৈধভাবে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলন’ এর আদমদীঘি উপজেলা সভাপতি গোলাম রব্বানী দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি বিধি-নিষেধ না মেনেই গড়ে ওঠা কারখানাটিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন উৎপাদন হওয়ায় সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। তাই জনস্বার্থে অবৈধ কারখানাটি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।’

আদমদীঘি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের ইনচার্জ রুহুল আমীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানকে ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই সঙ্গে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এসব বিষয়ে কারখানা মালিক গোপীনাথ সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারখানা চালুর পর শিশু-কিশোরেরা কাজ করেছিল। কিন্তু কিছুদিন পর কাজ থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। কারখানার পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। শিগগিরই সে সব কাগজপত্র হাতে পাওয়া যাবে।’
 
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টুকটুক তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। তবে ছাড়পত্র ছাড়া কারখানাটি পরিচালনা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত