সৌদি থেকে লাশ হয়ে ফিরলেন নাটোরের হারুন 

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২২, ১১: ২২

সংসারের চাকা সচল রাখতে ১৫ বছর আগে সৌদি আরবে যান নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার হারুন অর রশিদ (৪৫)। বেশ ভালোই আয়রোজগার করছিলেন তিনি। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা সবকিছু এলোমেলো করে দিল। গত আগস্টের মাঝামাঝিতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনি মারা যান। গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরেছে তাঁর মরদেহ। হারুনের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। 

হারুনের ছেলে পারভেজ রশিদ জানায়, জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল মঙ্গলবার সকালে মরদেহ দেশে ফিরেছে। এই নভেম্বরেই বাবার দেশে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি এলেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে। প্রতিদিন অন্তত একবার মোবাইলে কথা হতো। কিন্তু আগস্টের পর থেকে তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। সৌদি থেকে বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা বলছিলেন। পরে গত ২৫ আগস্ট ফোন করে জানানো হয়, ‘ইয়োর ফাদার ইজ লস্ট’। 

পারভেজ রশিদ বলেন, ‘আমরা নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, বাবা আগস্টের মাঝামাঝি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সৌদিতে মারা গেছেন। পুড়ে যাওয়া শরীরের কিছু অংশ সেখানকার মর্গে রাখা আছে। পরে দূতাবাসের আবেদনে সেখানকার কর্তৃপক্ষ লাশ ফেরত পাঠাতে সম্মত হয়। সেই থেকে আমরা দিন গুনছিলাম। অবশেষে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিমানে ঢাকায় আসে। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সন্ধ্যা ৬টায় কফিনবন্দী লাশ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার মালিপাড়া মহল্লার নিজ বাড়িতে আসে।’ 

বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন, ‘কফিনবন্দী হয়ে হারুন বাড়িতে এলেও একনজর দেখতে পাননি তাঁর স্বজনেরা। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ায় তাঁর শরীরের অধিকাংশ ছাই হয়ে গেছে। অবশিষ্ট দেহাবশেষ বিশেষ ব্যাগে করে আনা হয়েছে, যা দেখার মতো নয়। ছেলে পারভেজ রশিদ বিমানবন্দর থেকেই বাবার কফিন ধরে আছে।’ 

স্ত্রী পারভিন আক্তার জানান, সংসারের উন্নতির জন্য তাঁর স্বামী ১৫ বছর ধরে প্রবাসে ছিলেন। এবার একমাত্র ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তিনি এই নভেম্বরে একবারে দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। ফিরে এলেন, কিন্তু লাশ হয়ে। 

হারুনের ভাই আল আমিন জানান, তাঁর ভাই দীর্ঘদিন বিদেশে চাকরি করেছেন। কিন্তু মৃত্যুর পর তেমন কোনো আর্থিক সুবিধা পরিবারকে দেওয়া হয়নি। এমনকি বিমার টাকাও পরিবার পায়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের দেখার অনুরোধ করেন তিনি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত