Ajker Patrika

নাটোরে প্রধান শিক্ষককে হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন 

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে প্রধান শিক্ষককে হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন 

নাটোরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর লোক পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তির হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বড়াইগ্রাম উপজেলার রামেশ্বরপুর হাইস্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী, প্রধান শিক্ষকের ছেলে ও এলাকাবাসী। আজ বৃহস্পতিবার শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম মনির (২৩)। তিনি বড়াইগ্রাম উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের চৌকিদার হাবিবুর রহমান হবুর ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মনিরুল ইসলাম মনির মাত্র কয়েক বছর ঢাকায় অবস্থান করে এখন এলাকায় এসে বিলাস বহুল টয়োটা প্রিমিও গাড়ি কিনে চলাফেরা করেন। এরই মধ্যে মাইক্রোবাস, ট্রাক ও একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেছেন। বড়াইগ্রাম থানার সঙ্গে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা। তিনি নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে লোকজনকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা পুলিশ চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন। ২০১৮ সালে তাঁকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়েও চাকরি বা টাকা ফেরত না পাওয়ায় বিজয় সরকার নামে একজন চাকরি প্রার্থী যুবক আত্মহত্যা করেছেন। এ বিষয়ে বিজয় সরকারের বড় ভাই মারুফ সরকার জয় আদালতে মনির ও তাঁর ভাই বাবুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা এখনো চলমান রয়েছে।

২০১৪ সালে একই এলাকার চন্ডিপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে রেখার সঙ্গে বিয়ের কথা বলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে বিয়ে না করায় বিষপান করে আত্মহত্যা করে রেখা। আরও নানা জনের কাছে মনির চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গ্রাম প্রধান ও স্থানীয় হাইস্কুলের প্রধান হিসেবে এসব বিষয়ে বিচারের উদ্যোগ নেওয়ায় মনির হোসেন রামেশ্বরপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সরওয়ার হোসেন পিঞ্জুর ওপরে ক্ষিপ্ত হন। এই স্কুলে দুটি শূন্যপদে তাঁর পছন্দের লোক নিয়োগ দেওয়ার জন্যও চাপ সৃষ্টি করেন মনির।

এসব বিষয়ে বিরোধের জের ধরে থানা-পুলিশ দিয়ে এবং প্রকাশ্যে স্কুলে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চাপ দেওয়া শুরু করেন। মনির বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক আব্দুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে নিজের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়ান বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শামসুন্নাহার ও সহকারী শিক্ষিকা দিপ্তী রানী প্রামানিক বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই প্রধান শিক্ষক সরওয়ার হোসেন পিঞ্জু পুকুরে মাছ চাষ ও পোলট্রি ব্যবসা করতেন। এসব ব্যবসায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ায় তিনি অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে মনির প্রধান শিক্ষককে নানাভাবে হয়রানি করেন। এখন প্রধান শিক্ষক স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। কোনো মামলা না থাকলেও পুলিশ তাঁদের বাড়ি গিয়ে তাঁকে না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলে আসছে। গত ১০ দিন থেকে তিনি আর স্কুলেও আসছেন না। সরওয়ার হোসেন পিঞ্জু এলাকার একটি খাল খনন করতে গেলে মনির লোকজন নিয়ে সেখানেও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষকের ছেলে নিয়ামুল হোসেন নির্ঝর, বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সাহাবুল ইসলাম, প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম, রতন সরকার, রামেশ্বরপুর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ারা খাতুন, মেহেদী হাসান ও অফিস সহকারী সাইদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম মনির জানান, তাঁর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অসত্য। তিনি কারও নিকট থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেননি, কখনো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আত্মীয় বলে কোথাও পরিচয়ও দেননি।

এ নিয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আব্দুর রহিম মনিরের গাড়িতে ঘুরে বেড়ানোসহ তাঁর সঙ্গে সখ্যতার সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। ওসি জানান, সরওয়ার হোসেন পিঞ্জুর বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। মনিরের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই বলে তিনি দাবি করেন ওসি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

খামেনিকে চিঠি দিয়ে যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারী বাধ্যতামূলক ছুটিতে, মামলা এখন আদালতের এখতিয়ারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত