চাঁপাইনবাবগঞ্জে-১ (শিবগঞ্জ) আসনে এক শিশুর শরীরে গরম চা ঢেলে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকার এক সমর্থকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার রাতে মরদানা এলাকায়।

আহত শিশু লালচান আলীকে (১২) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পৌর এলাকার মরদানা গ্রামের মো. সুমন আলীর ছেলে সে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আহত শিশু লালচানের চাচাতো ভাই আব্দুল হক বলেন, ‘শিশু লালচানের বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ট্রাক প্রতীকের সমর্থক। শিশুটি ভুল করে বাড়ির পাশে নৌকার অফিসে যায়। এ সময় নৌকা প্রতীকের সমর্থক রুহুল আমিন নামের এক যুবক গরম চা ঢেলে দেয় শিশুটির শরীরে। এতে মারাত্মক আহত হয় শিশুটি। পরে পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে।’ 

শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ নাজমুল কবির মুক্তা বলেন, ‘একটি শিশু যেকোনো প্রার্থীর প্রচার অফিসে যেতেই পারে। সে তো কোনো দল বোঝে না। তারপরও শরীরে গরম চা ঢেলে চরম অন্যায় করেছে। শিশুটি এখন মৃত্যুর মুখে রয়েছে।’ ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। 

শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকার সমর্থকেরা এতটাই বেপরোয়া হয়েছে, তার উদাহরণ শিশুর প্রতি সহিংসতা। প্রশাসনের উচিত নাশকতাকারী, সহিংসতাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা।’ 

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আলমগীর কবির বলেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কী পরিমাণ তার শরীর পুড়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি। 

এ বিষয়ে জানতে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

ঘটনার পর থেকে নৌকা প্রতীকের সমর্থক রুহুল আমিন পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তৌহিদুল আলম টিয়া বলেন, ‘শিশুর শরীরে চা ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি আমাদের জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করা হবে।’ 

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘শিশুর প্রতি সহিংসতার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমরা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উল্লেখ্য, এমপি সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল নৌকার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর সৈয়দ নজরুল ইসলাম ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।