চা বিক্রেতা থেকে ইউপি সদস্য মাজেদা

পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫০

মাজেদা খাতুন ও সোবাহান প্রামাণিক দম্পতির ছেলে সন্তান নেই। ১৮ বছর আগে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বয়োবৃদ্ধ সোবাহান প্রামাণিক ঠিকমতো কাজ করতে পারতেন না। কী করবেন ভেবে না পেয়ে স্টেশনের পাশে একটি চায়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন মাজেদা। 

এরপর থেকে নিজের সংসারের ঘানি টেনে ধীরে ধীরে সচ্ছলতার মুখ দেখতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর মনে উঁকি দেয় তিনি মহিলা মেম্বার হয়ে মানুষের সেবা করার। সেই ইচ্ছা থেকে দুবার নির্বাচন করে অল্প ভোটে হেরে যান। তবুও দমে যাননি তিনি। অবশেষে তৃতীয়বার নির্বচন করে পেলেন সফলতার মুখ। 

নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য চা বিক্রেতা মাজেদা খাতুনগত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। চা বিক্রেতা থেকে কীভাবে জনপ্রতিনিধি হওয়া যায় তাঁর জ্বলন্ত উদাহরণ মাজেদা খাতুন। এ নিয়ে এলাকায় মানুষের মাঝে সাড়াও পড়েছে বেশ। 

আলাপকালে মাজেদা খাতুন জানান, তাদের সংসারে ছেলে সন্তান নেই। দুই মেয়ে হোসনে আরা রতনা ও ফরিদা পারভীনকে ১৮ বছর আগে বিয়ে দিয়েছেন। মেয়েদের বিয়ের পর থেকে একা হয়ে পড়েন স্বামী-স্ত্রী। বয়োবৃদ্ধ স্বামী সোবাহান প্রামাণিক কাজকর্ম তেমন করতে পারতেন না। সবার পরামর্শে চাটমোহর রেলস্টেশনের পাশে একটি ছোট্ট দোকান দিয়ে শুরু করেন চা বিক্রি। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ৫ থেকে ৬ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। 

নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য চা বিক্রেতা মাজেদা খাতুনমাজেদা বলেন, চায়ের দোকানে মানুষের মুখে মেম্বারদের নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। আক্ষেপের কথা শুনেছি। সেই থেকে ইচ্ছা জাগে জনপ্রতিনিধি হওয়ার। পরে সবার উৎসাহে দুবার ভোটে দাঁড়াই। কিন্তু অল্প ভোটে হেরে যাই। কষ্ট লাগলেও থেমে যাইনি। এবার ইউপি নির্বাচনে দাঁড়ালে সবাই ভোট দিয়ে আমাকে জিতিয়েছে। এখন খুব ভালো লাগছে। চা বিক্রি করি বলে কেউ অবহেলা করেনি। 

ইউপি সদস্য মাজেদা খাতুন বলেন, মানুষের এই ভালোবাসার প্রতিদান আমি দিতে চাই। গ্রামের অবহেলিত নারীদের পাশে থেকে আমার সাধ্য অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করব। তবে আমার যে চা বিক্রির ব্যবসা, সেটি আমি বন্ধ করব না। সকল কার্যক্রম শেষ করে সময় পেলেই আমি চা বিক্রি করব। 

মাজেদা খাতুনের দুই মেয়ে হোসনে আরা রতনা ও ফরিদা পারভীন জানান, তাদের মা অনেক কষ্ট করেছেন। সব সময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। তিনি মহিলা মেম্বার হওয়ায় তাঁরা খুব খুশি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত