চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদের জন্য প্রস্তুত ৫০ হাজার হেক্টর জমি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৯

গেল বছর ধানের ভালো দাম পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে ব্যাপকভাবে বোরো আবাদে নেমেছেন চাষিরা। এরই মধ্যে বোরো চাষাবাদকে ঘিরে মাঠে মাঠে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে। কৃষকেরা বলছেন, ধানের ভালো দাম পেয়ে উৎসাহ নিয়ে আবাদ করছেন তারা। এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। 

সরেজমিনে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা, ইসলামপুর, সুন্দরপুর, শিবগঞ্জ, ভাঙ্গা ব্রিজ, শ্যামপুর, বিনোদপুর, সোনামসজিদ, খাষেরহাট, গোমস্তাপুর, রহনপুর, লালকপরাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা। কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ থেকে চলছে পানি সেচ। ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে জমি চাষের কাজ। মই দিয়ে মাঠ সমান করার কাজও চলছে। 

আবারও বোরো ধানের রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কেউ জমিতে হাল চাষ করছেন, কেউ জমির আইলে কোদাল কোপাচ্ছেন। কেউ আবার জৈব সার দিতে ব্যস্ত, কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ বা পাম্পের জন্য ঘর তৈরি করছেন। অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। কেউ আবার বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে তা রোপণ করছেন। সব মিলিয়ে বিভোর আনন্দে রয়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা। 

গোমস্তাপুর উপজেলার বংপুর গ্ৰামের বোরো ধান চাষি কলিমুদ্দিন বলেন, গত বছর আমন চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছি। এবারও সেই আশায় চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছি। বোরো ধান রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। দুদিনের মধ্যে সব জমি প্রস্তুত করে ধান রোপণ করব। 

ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা উৎসাহ নিয়ে আবাদ করছেনসদর উপজেলার সুন্দরপুর এলাকার বোরো চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, গত আমন মৌসুমে ব্রি-৮১, জিরাশাইলসহ বিভিন্ন ধানের ফলন ও বাজারমূল্য ভালো ছিল, তাই অনেক আয় করেছি। এ জন্য চলতি মৌসুমে আবাদ করতে ভালো লাগছে। সম্প্রতি আমার জমিতে সরিষা তুলে এখন বোরো ধান রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছি। কয়েক দিনের মধ্যে জমিতে বোরো ধান রোপণ করব। 

ইসলামপুর এলাকার সামিম আলী জানান, গত বছর ১০ কাঠা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছিলাম। এতে ১০ মণ ধান পেয়েছিলাম ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর খড় বিক্রি করেছি ৩ হাজার টাকার। এ খড় বিক্রির টাকায় খরচ উঠে গেছে। এবার ফের ২৫ কাঠা জমিতে বোরো ধান রোপণ করার জন্য জমি প্রস্তুত করছি। 

গোমস্তাপুর উপজেলার কমলা রানী জানান, গত বছর করোনা মহামারিতে অনেক বিপদগ্রস্ত হয়ে আছি। বাইরে কাজে যেতে পারিনি। এলাকায় তেমন কোন কাজ না থাকায় পরিবারের মধ্যে অভাব অনটন লেগেই আছে। তাই বোরো মৌসুমে সকালে কুয়াশা ও ঠান্ডার পরিমাণ বেশি হলেও বোরো ধান লাগাতে এসেছি। ধান রোপণ করে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি পাই। 

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর থেকে ধানের দাম ভালো হওয়ায় ধান চাষে মেতে উঠেছেন চাষিরা। জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার ২০০ হেক্টর জমি বোরো ধান চাষের জন্য প্রস্তুত করেছেন কৃষকেরা। তবে এর পরিমান আরও বাড়বে। গত বছর ৫০ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান ছিল। আশা করা যাচ্ছে, গত বছরের থেকে এবার অনেক বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত