Ajker Patrika

বাউত উৎসবে শৌখিন মৎস্যশিকারিদের ভিড়, মাছ না পাওয়ার হতাশা

­­শাহীন রহমান, পাবনা
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ২৬
ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে মাছ শিকারে ব্যস্ত শিকারিরা। ছবি: শাহীন রহমান।
ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে মাছ শিকারে ব্যস্ত শিকারিরা। ছবি: শাহীন রহমান।

পাবনায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মাছ শিকারে মেতেছিলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। পলো, জালসহ বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দল বেঁধে বিলে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছিলেন বিভিন্ন বয়সী হাজারো মানুষ। কিন্তু এ বছর কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না পেয়ে হতাশ মাছ শিকারিরা। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা চায়না জাল আর গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছ ধরে নেওয়ায় বছরে বছরে কমছে মাছের উৎপাদন। ফিকে হয়ে আসছে বাউত উৎসবের রং।

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অবৈধ জালের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি বাউত উৎসবে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন শৌখিন মৎস্য শিকারিদের।

ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে বাউত উৎসবে এবারের পরিস্থিতি দেখতে গতকাল শনিবার ভোর ৬টায় বিলে হাজির হন এই প্রতিবেদক।

পাবনা-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কোল ঘেঁষে পাটুলিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা। সেই মাদ্রাসাসংলগ্ন চিকন পাকা রাস্তা ধরে কিছু দূর এগোলেই বাঁয়ে কাঁচা রাস্তা নেমে গেছে রহুল বিলে। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে আসতে শুরু করেছে মানুষ। আকাশ মেঘলা থাকায় তখনো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বিলের মুখে ঢুকতেই খাবারের দোকান সাজিয়ে বসেছেন কয়েকজন। সেখানে অল্প দামে পাওয়া গেল খিচুড়ি, রুটি, ডিম ও ডাল। অনেকে সেরে নিচ্ছেন সকালের নাশতা।

হেমন্তে সকালে মেঘ সরিয়ে ঝলমলে সূর্যের মুখ দেখার সঙ্গে সঙ্গে বিলপাড়ে হাজির নানা বয়সী হাজারো মানুষ। সবার হাতে পলো, বিভিন্ন রকম জালসহ মাছ ধরার নানান উপকরণ। বিলের ময়লা-আবর্জনায় ভরা পানি থেকে ত্বক রক্ষায় অনেকে শরীরে সরিষার তেল মালিশ করে নিচ্ছেন। কেউ আবার সকালের মিষ্টি রোদে একটু আরাম করে শরীর গরম করে নিচ্ছেন।

শীত ঠান্ডা উপেক্ষা করে বিলের পানিতে নেমে মাছ শিকারে ব্যস্ত শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শীত ঠান্ডা উপেক্ষা করে বিলের পানিতে নেমে মাছ শিকারে ব্যস্ত শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

একপর্যায়ে হঠাৎ হইহই করে বিলের পানিতে নেমে পড়েন বাউতেরা। মৎস্য শিকারিদের আঞ্চলিক ভাষায় বাউত বলা হয়। তারপর একসঙ্গে বিলে নেমে লোকজ রীতিতে মনের আনন্দে চলে মাছ শিকার। দল বেঁধে মাছ শিকারের এই আয়োজনের নামই মূলত বাউত উৎসব—এমনটাই জানালেন মাছ শিকারে আসা ফরিদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামের প্রবীণ মাছ শিকারি আব্দুস সালাম।

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বিলের দিকে ছুটছেন মৎস্য শিকারিরা। শনিবার সকালে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বিলের দিকে ছুটছেন মৎস্য শিকারিরা। শনিবার সকালে পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার রুহুল বিলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলে এমন উৎসব চলছে প্রায় শত বছর ধরে। পাবনার রুহুল বিল, ডিকশির বিল, রামের বিলসহ বিভিন্ন বিলে চলে এই বাউত উৎসব। নভেম্বর মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে শুরু হয় মাসব্যাপী মাছ শিকারের এই উৎসব। নির্ভর করে বিলে পানি কতটুকু থাকে তার ওপর। প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে মাছ শিকার।

মাছ না পেয়ে অনেকে বিল থেকে উঠে আসেন। তখন কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থেকে আসা মৎস্যশিকারি আব্দুল মোমিন (৪৫) বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই এখানে বাউত উৎসবে আসি। কমবেশি ভালো মাছ পাই। কিন্তু এবারের অবস্থা খুব খারাপ। মাছ নাই বললেই চলে।’

প্রচণ্ড ঠান্ডা বিলের পানিতে নেমে কাঙ্ক্ষিত মাছের খোঁজে চলছে। । ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রচণ্ড ঠান্ডা বিলের পানিতে নেমে কাঙ্ক্ষিত মাছের খোঁজে চলছে। । ছবি: আজকের পত্রিকা

চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা গ্রামে মৎস্য শিকারি আকবর আলী (৬৫) বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে মাছ ধরি। এহেনে প্রত্যেক বছরই আসি। মাছ পাওয়া না-পাওয়া ওডা সমস্যা লায়। সবাই যে একসাথে আনন্দ করি, মাছ ধরি এটাই বড় বিষয়। তবে মাছ পালি মনের ভিতর আনন্দ বেশি ঠ্যাহে।’

পাবনায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মাছ শিকারে মেতেছেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মাছ শিকারে মেতেছেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আরেক মাছ শিকারি নাটোর থেকে আসা ওয়াসিম উদ্দিন (৪০) বলেন, ‘আমরা খুব হতাশ, বিলে আগের মতো মাছ নাই। প্রভাবশালীরা বিল দখলে রেখে চায়না জাল ও গ্যাস ট্যাবলেট ব্যবহার করে মাছ ধরে নেয়। পানি পচে মাছ, কীটপতঙ্গ সব মরে গেছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো ও বিলগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ ছাড়ার দাবি জানান তিনি।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাউত উৎসবের নামে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যের চরম ক্ষতি হয়। এদিকে শৌখিন মৎস্য শিকারিদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। আর মাছের উৎপাদন বাড়াতে জলা মৎস্য বিভাগ প্রতিবছরই বিলগুলোতে মাছের পোনা অবমুক্তকরণসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। গ্যাস ট্যাবলেট বা অবৈধ জাল ব্যবহারের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইড্রোসেফালাসে আক্রান্ত আয়শার চিকিৎসা বন্ধ, অর্থাভাবে মানবেতর জীবন

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পাগলাটারী গ্রামের আশেক আলী ও সুমি বেগম দম্পতির আট বছর বয়সী মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগের জীবন কাটাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে তার মাথা। দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আয়শার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে দরিদ্র এই পরিবারের সবটুকু সম্বল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে অর্থের অভাবে বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে অস্বাভাবিক বড় মাথা ও তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছোট্ট আয়শা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আয়শা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। মাথার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানা করাতে হলে দুজন তাকে ধরতে হয়।

আয়শার মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথার ওজন এতটাই বেড়ে গেছে যে একা ধরে রাখা যায় না। নাকে মাংস বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশনে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে।’

জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে (নয়া দিগন্ত) আয়শার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুজন প্রবাসী ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন। সেই অর্থে কিছুদিন চিকিৎসা চললেও পরে আর তা সম্ভব হয়নি।

আয়শার বাবা আশেক আলী ও মা সুমি বেগম বলেন, ‘দেশের কোনো বিত্তবান কিংবা প্রবাসী মানবিক মানুষ যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমাদের অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম।’

এলাকাবাসীও আয়শার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সবজি গ্রামে শীতকালীন চাষে ব্যস্ত গোপালগঞ্জের কৃষকেরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, সিলনা ও গুয়াধানা এবং টুঙ্গীপাড়া উপজেলার রুপাহাটি, গোপালপুর, মিত্রডাঙ্গা ও বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমভেদে সারা বছরই এসব গ্রামের কৃষকেরা নানা ধরনের শাকসবজি আবাদ করে থাকেন।

চলতি শীত মৌসুমে জমি ও মাছের ঘেরপাড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। নিজেদের কষ্টার্জিত বিষমুক্ত ও বালাইমুক্ত নিরাপদ সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করছেন তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর ও মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মাঠজুড়ে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, মুলা, পালংশাকসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু জমিতে নয়, মাছের ঘেরপাড়েও লাউ, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে।

কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চারা রোপণ, সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেতখামারে। এসব গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো সবজি চাষ। শাকসবজির ফলনেই নির্ভর করে হাজারো কৃষকের জীবন-জীবিকা।

এ বছর এসব গ্রামে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা থেকেও ব্যাপারীরা এসে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লাউ ২০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলনা গ্রামের কৃষক প্রমথ ওঝা বলেন, ‘আমরা মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ করি। শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো ও শাকসবজি চাষ করে সংসারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয় মেটাই। এই ফসলের ওপরই আমাদের জীবন।’

সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের শিলা ওঝা বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে সবজি চাষ করেছি। ফসল ভালো হয়েছে, লাভও ভালো হবে। এই চাষ করেই আমরা ভালো আছি।’

সিলনা গ্রামের কিষানি রিতা কীর্তনিয়া বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে সবজি চাষ করছি। ভাসমান বেডেও নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করি। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। গোপালগঞ্জসহ বাইরের জেলার ব্যাপারীরা এসেও আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেয়।’

সিংগারকুল গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘেরপাড়ে টমেটো ও শসা চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জের উপপরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় ৪০ শতক জমি নিচু হওয়ায় কৃষকেরা সারা বছর ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করেন। রবি মৌসুমে জমিতে ব্যাপকভাবে সবজি আবাদ হয়। এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেব: ঝিনাইদহে অ্যাটর্নি জেনারেল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ বাজারে কথা বলছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ বাজারে কথা বলছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা ধানের শীষে ভোট করব। ২৮ ডিসেম্বর আমাদের মনোনয়ন জমা দেব। আমি সেই মনোনয়ন জমা দিতে যাব আপনাদের সঙ্গে নিয়ে, আপনাদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে। দল ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আমি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে এসে আপনাদের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা আগামী দিনগুলোতে সময় কাটাব, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আজ যাঁরা উপস্থিত হয়েছেন, অনেকের সঙ্গে হয়তোবা হাত মেলানো হবে না। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, ২৮ ডিসেম্বরের পর থেকে আমি ২৪ ঘণ্টা আপনাদের মাঝে থাকব, পাশে থাকব, সবার সঙ্গে আমি হাত মেলাব, পাশে দাঁড়াব, বুক মেলাব, কথা বলব, কেউ বঞ্চিত হবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষে ভোট চাওয়ার জন্য আপনারা কিছু কথা ভোটারদের কানে কানে পৌঁছে দেবেন। সন্ত্রাসকবলিত শৈলকুপাকে গত ১৬ মাসে আমরা সন্ত্রাসমুক্ত করেছি। আপনারা যাঁরা ভোট চাইতে যাবেন। প্রত্যেক মা-বোনদের বলবেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক পরিবারের মহিলাদের জন্য একটি করে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু করা হবে। প্রত্যেক কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আমরা বরাদ্দ করব। যত দিন তিনি জীবিত থাকবেন তত দিন তিনি পাবেন। আমাদের আরেকটি অঙ্গীকার থাকবে কৃষক কার্ড।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল আমরা শুনতে পাচ্ছি তাদের মহিলা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছেন। আপনারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন, এটা আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা। এটা কোরআনের বাণীর বিপরীতের কথা। যদি এখন বেহেশতের টিকিট দেওয়া হয়, তাহলে রোজ কিয়ামতের দিন কী হবে। এই জিনিসটা আপনারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমার জন্য আপনাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই। আপনি খালি নিশ্চিত করবেন প্রতিটা ভোটার যাতে তার ভোট প্রয়োগ করতে পারে। আমি ভোট চুরির এমপি হতে চাই না। আমি দুর্নীতি করার জন্য এমপি হতে চাইনি। আমি আলিশান বাড়ি, প্রাডো গাড়ি কেনার জন্য এমপি হতে চাইনি। আল্লাহ আমাকে বাড়ি-গাড়ি দিয়েছেন। আমার সন্তান দিয়েছেন। আমি এমপি হতে চেয়েছি এই সমাজকে পরিবর্তন করার অঙ্গীকার নিয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি থেকে ট্রাকসহ ৫ যান নদীতে, নিহত ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। এই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বক্তাবলী ও নরসিংপুর ঘাটের মাঝামাঝি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, নরসিংপুর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা একটি ফেরি বক্তাবলী ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। ফেরিটি মাঝনদীতে পৌঁছালে এতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ স্টার্ট হয়ে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি সামনে থাকা দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি রিকশাভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ফেরির রেলিং ভেঙে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়।

দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী রফিক গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে রিকশাভ্যানচালক স্বাধীন (২৫) ও মাসুদ নামের দুজন দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে রাতেই নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে স্বাধীন ও মাসুদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

দুর্ঘটনার পর ফেরির কয়েকজন যাত্রী ও চালক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।

বক্তাবলী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রকিবুজ্জামান বলেন, ‘ফেরিতে থাকা ট্রাকটি হঠাৎ নিজে থেকেই স্টার্ট হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়। এতে ফেরির রেলিং ভেঙে যানবাহনগুলো নদীতে পড়ে যায়। এই ঘটনায় একজন হাসপাতালে মারা গেছেন এবং পরে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত