Ajker Patrika

রাবিতে রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের পর ভোরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মে ২০২৪, ১৫: ০৬
রাবিতে রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের পর ভোরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর করা হয়েছে। আজ রোববার ভোরে হল গেটে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান আতিকের নেতৃত্বে তাঁকে মারধর করা হয়।

মারধরের শিকার নিরাপত্তাকর্মীর নাম মনিরুল ইসলাম। এ ঘটনায় জড়িত অন্য নেতা-কর্মীরা হলেন মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী সানি হাজারী ও মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী আজিজুল হক আকাশ।

সিসিটিভি ফুটেজ ও হল সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর ৬টা ২০ মিনিটে হলে ঢোকেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান আতিক। তিনি নিরাপত্তাকর্মী মনিরুল ইসলামকে ডেকে এনে হল গেটের ভেতরে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অভিযুক্ত অন্য নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে আকাশ তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আতিক কখন হলে আসে, কখন যায়, কখন কী করে—এসব তথ্য আমি নিয়াজকে পাঠাই এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আতিকের নেতা-কর্মীরা আমাকে মারধর করে। এরপর আমি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাড়িতে অবস্থান করছি। আমি হল প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আতিকুর রহমান বলেন, ‘ওই নিরাপত্তাকর্মী আমাদের তথ্য শিবির ও ছাত্রদলের কাছে পাচার করত। আমার ছোট ভাইয়েরা তাকে হাতে-নাতে আটক করে হল প্রাধ্যক্ষের হাতে তুলে দিয়েছে।’

তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেলেও অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অপর দুই অভিযুক্ত। অভিযুক্ত আকাশ ও সানি বলেন, ‘আমরা ওই সময় ঘুমাচ্ছিলাম। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আতিকের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাদের এক নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর করেছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

আতিকুর রহমান আতিক। ছবি: সংগৃহীতএর আগে গতকাল শনিবার রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় এক পক্ষ অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে। অপর পক্ষ মাদার বখ্শ হলের দিকে অবস্থান নিয়ে এই হামলা চালায়। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সংঘর্ষে জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু এবং শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের পক্ষ। তবে সংঘর্ষ চলাকালে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর হয়ে হামলা চালাতে দেখা গেছে।

আবাসিক হল ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, গেস্টরুমে বসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের গেস্টরুমে নিয়াজের কয়েকজন কর্মী বসে ছিলেন। এ সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান আতিক কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে গেস্টরুমে যান। আতিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। এ সময় আতিক নিয়াজের অনুসারীদের কিছুক্ষণের জন্য চলে যেতে বলেন।

কিন্তু নিয়াজের অনুসারীরা চলে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে আতিক নিয়াজকে ফোনে করে তাঁর অনুসারীদের যেতে বলেন। কিন্তু নিয়াজ তাঁর অনুসারীরা সেখানেই থাকবে বলে আতিককে জানান এবং সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে আতিক তাঁর অনুসারীদের নিয়ে সেখান থেকে চলে যান।

খবরটি জানাজানি হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারীরা বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল গেটে গিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীরাও যোগ দেন। একপর্যায়ে নিয়াজ ও তাঁর অনুসারীরা হলের ছাদ থেকে মিছিল নিয়ে সভাপতির অনুসারীদের ওপর ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিক্ষেপ করে হলগেট দখলে নিয়ে তালা দেন। কিছুক্ষণ পর মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও গালিবের অনুসারীরাও পাল্টা আক্রমণ চালান। এ সময় ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। এ ছাড়া দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের হাতে রামদা ও লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত