Ajker Patrika

ধামইরহাটে দাবদাহে গাছ থেকে ঝরছে লিচু, দিশেহারা চাষি

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি
ধামইরহাটে দাবদাহে গাছ থেকে ঝরছে লিচু, দিশেহারা চাষি

নওগাঁর ধামইরহাটে কয়েক মাস ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। এর সঙ্গে চলছে দাবদাহ। এসব কারণে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে লিচু। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লিচু চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখানে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে চায়না থ্রি, বোম্বে, মাদ্রাজি, বেদনা, মোজাফফরি ও দেশি জাতের লিচু বেশি চাষ হয়েছে।

ধামইরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নেউটা গ্রামের লিচু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় প্রতিদিন গাছ থেকে অনেক লিচু ঝরে পড়ছে। বিভিন্ন ওষুধ দিয়েও লিচুর ঝরে পড়া রোধ করা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে লিচু। আকারেও অনেক ছোট হচ্ছে। এই অবস্থায় ভরা মৌসুমেও লাভের মুখ দেখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লিচু চাষিরা।

নেউটা গ্রামের লিচু বাগানি আবু ইউসুফ মোর্তজা আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি ১৯৬ শতাংশ জমিতে লিচুর বাগান গড়ে তুলেছেন। এতে ১৬০টি চায়না থ্রি জাতের লিচুর গাছ রয়েছে। মুকুল ধরা থেকে লিচু বিক্রি পর্যন্ত শ্রমিক, কীটনাশক, সেচসহ প্রতিবাগানের পরিচর্যায় তাঁকে খরচ করতে হয়েছে ৫২ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে যেভাবে লিচু ঝরে পড়ছে তাতে তিনি খরচ তুলতে পারবেন কিনা আশঙ্কা করছেন।

বৈরী আবহাওয়া না থাকলে এবং ফলন ভালো হলে বাগান থেকে প্রতি মৌসুমে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান লিচু বাগানি আবু ইউসুফ।

ধামইরহাটের সদর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘অনাবৃষ্টির কারণে আমার বাগানের লিচু বড় হচ্ছে না। গাছের ডালে অনেক লিচু শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। ওষুধ ছিটিয়েও কোনো কাজে আসছে না। প্রতিদিন যেভাবে লিচু ঝরে পড়ছে এতে খরচের টাকা উঠবে কিনা সন্দেহ হচ্ছে।’ দু-চার দিনের মধ্যে বৃষ্টি দেখা দিলে লিচু ঝরে পড়া রোধ অনেকটা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আল জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি গাছে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। রোগ-বালাই তেমন নেই। তবে অতি খরায় গাছ থেকে লিচু ঝরে পড়া রোধে চাষিদের নিয়মিত পানি সেচ, বিভিন্ন ধরনের অণু খাদ্য ও কীটনাশক যেমন দস্তা, ইউরিয়া সার ও পটাশ ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত