বাধামুক্ত পরিবেশে সবার মধ্যে সমঝোতা থাকবে, দাবির প্রয়োজন হবে না: রাবি উপাচার্য

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ০৯

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র তৈরি করতে পারলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে মেধাবী ছাত্ররা। তবে এই সুবিধার পেছনে যত মানুষের রক্ত আছে তারা সবাই বুয়েট থেকে পাস করা ছাত্র না। এ কারণে তাদের ভুলে যাওয়া চলবে না। শহীদদের এই রক্তের ঋণ আগামী বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে শোধ করতে হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত ‘২৪ অভ্যুত্থানের আকাঙ্কা: বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার কোন পথে?’ শীর্ষক ছাত্র-শিক্ষক-নাগরিক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ‘উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সুতিকাগার’ এ সংলাপ সভার আয়োজন করে। 

অনুষ্ঠানে উপাচার্য আরও বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমি সন্তুষ্ট, কারণ তারা কথা বলছে। যে যেভাবে বলতে চায় সেভাবেই বলছে। কোথাও কোনো বাধা নেই। ছাত্ররা আলোচনা করছে সেখানে মাওলানা সাহেবরাও আসছেন, সেই আলোচনায় সমাজবাদীরাও আসছেন। আমরা একটা বাধামুক্ত, ভয়মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করব, যেখানে সবার অন্তর্ভুক্তি থাকবে, সমঝোতা থাকবে এবং সবাই একসাথে সামনে এগিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া শুরু করলে আলাদা করে আর কোনো দাবির কথা বলার প্রয়োজন হবে না।’ 

সংলাপ সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়য়ক উমামা ফাতেমা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে সাধারণ মানুষ যোগদান করেছে এবং লড়াই করেছে বিএনপি বা আরেক দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। বরং এ ব্যবস্থার সংস্কার আনতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে এনে সংস্কার দেবে এবং আমরা এ সংস্কারের ফল ভোগ করব। এটা আত্মঘাতী চিন্তা।’ 

এ সময় উত্তরণের প্রধান সমন্বয়কারী মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, ‘আগে একটা পাঠ্যচক্র আয়োজন করতে গেলেও গোয়েন্দা সংস্থার লোক শুনত। আমাদের চারদিকে ভয়ের দেয়াল গড়েছিল, আমরা ২৪ এর অভ্যুত্থানে এ সংস্কৃতি আমরা ভেঙে ফেলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার পূর্ণাঙ্গ তখন হবে যখন আমরা পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারব।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার পূর্ণাঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের দায়িত্বের সংস্কার, ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট ভেঙে নতুন সিন্ডিকেট নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য পরিবেশ পরিষদ গঠন, পূর্ণাঙ্গ সিনেট গড়তে রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট নির্বাচন, প্রশাসনিক কার্যক্রমে ছাত্র প্রতিনিধি বৃদ্ধি শিক্ষকদের জবাবদিহিতাসহ অনেক জায়গায় সংস্কার করতে হবে। 

সংলাপ সভাটি সঞ্চালনা করেন উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সুতিকাগারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফরিন জাহান মেরিন। এ সময় শিক্ষক প্রতিনিধি আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার সুজন, ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত