Ajker Patrika

মন্ত্রণালয়ের চাকরি ছেড়ে সফল খামারি বগুড়ার শহিদুল

গনেশ দাস, বগুড়া
মন্ত্রণালয়ের চাকরি ছেড়ে সফল খামারি বগুড়ার শহিদুল

গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। চাকরি করতেন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে কার্য সহকারী পদে। সরকারি চাকরির বেতনে তাঁর পোষাচ্ছিল না। তিন বছর পর চাকরি ছেড়ে চলে যান গ্রামে। বাড়িতে তার এখন ৩০টি কোয়েল পাখির খামার এখন বছরে চার কোটি টাকার পাখি, বাচ্চা এবং ডিম কেনা-বেচা করেন তিনি।

শুধু তাই নয় কোয়েল পাখির খামার করে কয়েক বছরে নিজে কোটিপতি হওয়ার পাশাপাশি গ্রামের ৪০ জন বেকারের কর্মসংস্থান করেছেন শহিদুল ইসলাম।

গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রামের কৃষক দিরাজ প্রামাণিকের দুই সন্তানের মধ্যে ছোট শহিদুল।

সরেজমিনে তাদের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বসতবাড়ির সাড়ে তিন শতাংশ জায়গা ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই তাদের। ২০০৫ সালে এসএসসি পাসের পর উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়ন করতে থাকতেন শহরের ছাত্রাবাসে। অর্থাভাবে ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনার খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে উঠলে খণ্ডকালীন চাকরি করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এইচএসসি পাসের পর মাসখানেক পোশাক কারখানায় চাকরি করে আবার ফেরেন সেই খণ্ডকালীন চাকরিতে। পাশাপাশি কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপাড়াও চালিয়ে যেতে শুরু করেন।

শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১০ সালের শহরের সাতমাথায় কোয়েল পাখির সিদ্ধ ডিম বিক্রি দেখে কোয়েল পাখি পালনের পরিকল্পনা করেন। মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকায় ১০০ কোয়েল পাখি দিয়ে শুরু করেন খামার। শুরুতে পরিবারের সদস্যরা এ নিয়ে তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতেন।

ইতিহাস বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করা শহিদুল ২০১৬ সালে চাকরি পান ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের কার্য সহকারী পদে। কিন্তু চাকরির বেতনে নিজেকে অসচ্ছল মনে হচ্ছিল তাঁর। এ কারণে তিন বছর পর চাকরি ছেড়ে ফিরে আসেন গ্রামে। সেখানে আগের খামারের সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলেন। বর্তমানে তাঁর ৩০টি খামারে পাখির সংখ্যা ৭০ হাজার।

শহিদুল জানান, তাঁর খামারে জাপানি জাতের কোয়েল পাখি থেকে ডিম উৎপাদন করেন। ২ টাকা থেকে ৩ টাকা করে মাসে ৬ লাখ পিস ডিম বিক্রি, নিজস্ব ইনকিউবেটরে প্রতি মাসে দেড় লাখ বাচ্চা উৎপাদন, খাবার উপযোগী পাখি বিক্রি করেন প্রতি মাসে ৪৫ হাজার পিস। ২৫ থেকে ৩০ দিনে ২৪ টাকার খাবার খেয়ে একটি পাখি ২২০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজন হয়। খাবার উপযোগী এসব পাখি প্রতি পিচ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়।

৪৫ থেকে ৬০ দিনের একটি পাখি বছরে ৩ শতাধিক ডিম দেয়। ইনকিউবেটরে ১৮ দিনে বাচ্চা ফুটিয়ে তা ৭ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করেন বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের কাছে। রাজধানী ঢাকাসহ সিলেট চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি পাখি সরবরাহ করে থাকেন।

শহিদুল জানান, দুই বিঘা জমি কিনে সেখানে গড়ে তুলেছেন ছোট বড় ৩০টি কোয়েল পাখির খামার। পাশাপাশি বাড়ি করেছেন খামারের আয় থেকেই।

চাকরির পেছনে না ঘুরে বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার গড়ে তোলা “মা কোয়েল অ্যান্ড হ্যাচারিতে’’ কমপক্ষে ৪০ জন বেকারের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আরও অনেকেই চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। অনেকে আবার এখান থেকে কাজ শিখে নিজেই খামার গড়ে তুলেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইড্রোসেফালাসে আক্রান্ত আয়শার চিকিৎসা বন্ধ, অর্থাভাবে মানবেতর জীবন

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশু আয়শাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তার মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পাগলাটারী গ্রামের আশেক আলী ও সুমি বেগম দম্পতির আট বছর বয়সী মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগের জীবন কাটাচ্ছে। জন্মের পর থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বড় হতে থাকে তার মাথা। দারিদ্র্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আয়শার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে দরিদ্র এই পরিবারের সবটুকু সম্বল ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে অর্থের অভাবে বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে অস্বাভাবিক বড় মাথা ও তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছোট্ট আয়শা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আয়শা বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। মাথার ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সে নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানা করাতে হলে দুজন তাকে ধরতে হয়।

আয়শার মা সুমি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথার ওজন এতটাই বেড়ে গেছে যে একা ধরে রাখা যায় না। নাকে মাংস বেড়ে যাওয়ায় ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেছেন। অপারেশনে খরচ হবে প্রায় ৭ লাখ টাকা, অন্যান্য খরচসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। তাই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে।’

জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে (নয়া দিগন্ত) আয়শার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুজন প্রবাসী ব্যক্তি ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন। সেই অর্থে কিছুদিন চিকিৎসা চললেও পরে আর তা সম্ভব হয়নি।

আয়শার বাবা আশেক আলী ও মা সুমি বেগম বলেন, ‘দেশের কোনো বিত্তবান কিংবা প্রবাসী মানবিক মানুষ যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমাদের অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম।’

এলাকাবাসীও আয়শার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সবজি গ্রামে শীতকালীন চাষে ব্যস্ত গোপালগঞ্জের কৃষকেরা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, সিলনা ও গুয়াধানা এবং টুঙ্গীপাড়া উপজেলার রুপাহাটি, গোপালপুর, মিত্রডাঙ্গা ও বন্যাবাড়ি গ্রামের কৃষকেরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমভেদে সারা বছরই এসব গ্রামের কৃষকেরা নানা ধরনের শাকসবজি আবাদ করে থাকেন।

চলতি শীত মৌসুমে জমি ও মাছের ঘেরপাড়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, ব্রকলিসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। নিজেদের কষ্টার্জিত বিষমুক্ত ও বালাইমুক্ত নিরাপদ সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করছেন তাঁরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। রঘুনাথপুর, সিলনা, গুয়াধানা, গোপালপুর ও মিত্রডাঙ্গা গ্রামের মাঠজুড়ে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো, মুলা, পালংশাকসহ নানা ধরনের শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু জমিতে নয়, মাছের ঘেরপাড়েও লাউ, করলা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে।

কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চারা রোপণ, সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষেতখামারে। এসব গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হলো সবজি চাষ। শাকসবজির ফলনেই নির্ভর করে হাজারো কৃষকের জীবন-জীবিকা।

এ বছর এসব গ্রামে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা থেকেও ব্যাপারীরা এসে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারি বাজারে মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং লাউ ২০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলনা গ্রামের কৃষক প্রমথ ওঝা বলেন, ‘আমরা মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ করি। শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, টমেটো ও শাকসবজি চাষ করে সংসারের খরচ ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয় মেটাই। এই ফসলের ওপরই আমাদের জীবন।’

সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচ ও আগাছা পরিষ্কারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

একই গ্রামের শিলা ওঝা বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে সবজি চাষ করেছি। ফসল ভালো হয়েছে, লাভও ভালো হবে। এই চাষ করেই আমরা ভালো আছি।’

সিলনা গ্রামের কিষানি রিতা কীর্তনিয়া বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে সবজি চাষ করছি। ভাসমান বেডেও নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করি। এতে ভালো লাভ হচ্ছে। গোপালগঞ্জসহ বাইরের জেলার ব্যাপারীরা এসেও আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেয়।’

সিংগারকুল গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘেরপাড়ে টমেটো ও শসা চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং শসা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জের উপপরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, ‘জেলার প্রায় ৪০ শতক জমি নিচু হওয়ায় কৃষকেরা সারা বছর ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করেন। রবি মৌসুমে জমিতে ব্যাপকভাবে সবজি আবাদ হয়। এ বছর প্রায় ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এরই মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেব: ঝিনাইদহে অ্যাটর্নি জেনারেল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ বাজারে কথা বলছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ বাজারে কথা বলছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা ধানের শীষে ভোট করব। ২৮ ডিসেম্বর আমাদের মনোনয়ন জমা দেব। আমি সেই মনোনয়ন জমা দিতে যাব আপনাদের সঙ্গে নিয়ে, আপনাদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে। দল ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ আমি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে এসে আপনাদের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা আগামী দিনগুলোতে সময় কাটাব, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আজ যাঁরা উপস্থিত হয়েছেন, অনেকের সঙ্গে হয়তোবা হাত মেলানো হবে না। কিন্তু আমি কথা দিচ্ছি, ২৮ ডিসেম্বরের পর থেকে আমি ২৪ ঘণ্টা আপনাদের মাঝে থাকব, পাশে থাকব, সবার সঙ্গে আমি হাত মেলাব, পাশে দাঁড়াব, বুক মেলাব, কথা বলব, কেউ বঞ্চিত হবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষে ভোট চাওয়ার জন্য আপনারা কিছু কথা ভোটারদের কানে কানে পৌঁছে দেবেন। সন্ত্রাসকবলিত শৈলকুপাকে গত ১৬ মাসে আমরা সন্ত্রাসমুক্ত করেছি। আপনারা যাঁরা ভোট চাইতে যাবেন। প্রত্যেক মা-বোনদের বলবেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক পরিবারের মহিলাদের জন্য একটি করে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু করা হবে। প্রত্যেক কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আমরা বরাদ্দ করব। যত দিন তিনি জীবিত থাকবেন তত দিন তিনি পাবেন। আমাদের আরেকটি অঙ্গীকার থাকবে কৃষক কার্ড।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল আমরা শুনতে পাচ্ছি তাদের মহিলা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছেন। আপনারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন, এটা আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা। এটা কোরআনের বাণীর বিপরীতের কথা। যদি এখন বেহেশতের টিকিট দেওয়া হয়, তাহলে রোজ কিয়ামতের দিন কী হবে। এই জিনিসটা আপনারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমার জন্য আপনাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই। আপনি খালি নিশ্চিত করবেন প্রতিটা ভোটার যাতে তার ভোট প্রয়োগ করতে পারে। আমি ভোট চুরির এমপি হতে চাই না। আমি দুর্নীতি করার জন্য এমপি হতে চাইনি। আমি আলিশান বাড়ি, প্রাডো গাড়ি কেনার জন্য এমপি হতে চাইনি। আল্লাহ আমাকে বাড়ি-গাড়ি দিয়েছেন। আমার সন্তান দিয়েছেন। আমি এমপি হতে চেয়েছি এই সমাজকে পরিবর্তন করার অঙ্গীকার নিয়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি থেকে ট্রাকসহ ৫ যান নদীতে, নিহত ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় ধলেশ্বরী নদীতে ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ চালু হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়। এই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বক্তাবলী ও নরসিংপুর ঘাটের মাঝামাঝি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, নরসিংপুর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা একটি ফেরি বক্তাবলী ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। ফেরিটি মাঝনদীতে পৌঁছালে এতে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ স্টার্ট হয়ে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি সামনে থাকা দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি রিকশাভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ফেরির রেলিং ভেঙে ট্রাকসহ পাঁচটি যান নদীতে পড়ে যায়।

দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী রফিক গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে রিকশাভ্যানচালক স্বাধীন (২৫) ও মাসুদ নামের দুজন দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে রাতেই নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে স্বাধীন ও মাসুদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

দুর্ঘটনার পর ফেরির কয়েকজন যাত্রী ও চালক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।

বক্তাবলী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রকিবুজ্জামান বলেন, ‘ফেরিতে থাকা ট্রাকটি হঠাৎ নিজে থেকেই স্টার্ট হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়। এতে ফেরির রেলিং ভেঙে যানবাহনগুলো নদীতে পড়ে যায়। এই ঘটনায় একজন হাসপাতালে মারা গেছেন এবং পরে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত