চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়কের গাছ কেটে ফেলায় দ্বিগুণ লাগানোর দাবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ৩০

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিভিন্ন সড়কের দুই পাশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে দ্বিগুণ গাছ লাগানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তাঁরা। 

আজ শনিবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার মরিচাডাঙ্গা এলাকার গোমস্তাপুর-রহনপুর সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সড়কের পাশে বিভিন্ন চারা লাগিয়ে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। 

পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের আয়োজনে আজ সকালে মানববন্ধন হয়। এতে গোমস্তাপুর-রহনপুর সড়কের মরিচাডাঙ্গা ও বাচ্চামারী-রামদাস বিল সড়কের প্রায় পাঁচ হাজার গাছ প্রশাসন ও অজ্ঞাতরা কেটে নেওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয়। এ কারণে দুই সড়কে ১০ হাজার গাছের চারা লাগানোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে অধিক পরিমাণে বনভূমি থাকার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে অধিক হারে বৃক্ষ নিধনের ফলে এর খেসারত দিচ্ছি আমরা। ফলাফল হিসেবে প্রকৃতি আমাদেরকে দিচ্ছে অনাবৃষ্টি, খরা, দাবদাহ। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় বেশি করে গাছ লাগানো। কিন্তু তা না করে সড়কের দুই ধারে থাকা ২০-৩০ বছর বয়সী এসব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কাটা গাছের দ্বিগুণ গাছ লাগানোর নিয়ম থাকলেও, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। 

পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. বকুল আলী বলেন, ‘পরিবেশের বিপর্যয় রোধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে এক কোটি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অথচ এখানে অপরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে।’ 

গোমস্তাপুর-রহনপুর সড়কের মরিচাডাঙ্গা ও বাচ্চামারী-রামদাস বিল সড়কের পাশে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনপরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গ্রিন ভয়েস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি মো. সামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখছি, সড়কের পাশ দিয়ে বিদ্যুতের সংযোগ লাইন দেওয়ার নামে অনেক গাছ কাটা হচ্ছে। আমাদের দাবি, কৃষি জমি দিয়ে ফাঁকা জায়গার ওপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন দেওয়া হোক।’ 

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হাসান, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী কাউসার আলী, রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. রাইহান বাবু, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের গোলাম কিবরিয়া সালমান, রাজশাহী সিটি কলেজের দর্শন বিভাগের মো. আনাস আলীসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সড়কে থাকা শুধুমাত্র আমগাছগুলো আমাদের। তবে বনজ ও অন্যান্য গাছ জেলা পরিষদের। আমাদের গাছ কাটা হয়নি। আর যেসব গাছ কাটা হয়েছে সে বিষয়ে জেলা পরিষদ বলতে পারবে।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘সড়কের দুই ধারে যেসব গাছ কাটা হয়েছে, সেখানে পুনরায় নতুন করে গাছ লাগানো হবে। এ নিয়ে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচনসহ বিভিন্ন কারণে গাছ লাগাতে দেরি হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত