Ajker Patrika

গ্রামের রাস্তায় দোতলা বাস কেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দুষছেন সাকিবের স্বজনেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ১৩
বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত জোবায়ের আলম সাকিব। ছবি: সংগৃহীত
বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত জোবায়ের আলম সাকিব। ছবি: সংগৃহীত

গ্রামের রাস্তায় দোতলা বাস নিয়ে কেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পিকনিকে নিয়ে গিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়া শিক্ষার্থী জোবায়ের আলম সাকিবের স্বজনেরা। এই দুর্ঘটনার জন্য তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরই গাফিলতি দেখছেন।

আজ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) পিকনিকের দোতলা বাস বিদ্যুতায়িত হয়, এতে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এঁদের একজন জোবায়ের আলম সাকিব। তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত সপ্তাহেই বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন সাকিব।

সাকিবের বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। বাড়ি রাজশাহী নগরের বাকীর মোড়ে। সাকিবের মা ফজলেতুন্নেসা সেফা জেলার পবা উপজেলার মুরারিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এই দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে ছোট ছিলেন সাকিব।

বড় মেয়ে নাইমাতুল জান্নাত শিফা একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ফাইনাল দিয়েছেন। শিফা থাকেন শ্বশুরবাড়ি। আর পড়াশোনার জন্য গাজীপুরে থাকতেন সাকিব।

সাকিব রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি এবং রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আইইউটিতে।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় বাকীর মোড়ে সাকিবদের চারতলা বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়-স্বজনেরা ছুটে এসেছেন সাকিবের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়ে। সাকিবের মা-বাবা আর বোন গাজীপুরে গিয়েছেন তাঁর মরদেহ আনতে। মাঝেমধ্যেই বাড়িটিতে আত্মীয়–স্বজনদের কান্নার রোল উঠছে।

সাকিবের চাচি বিউটি বেগম বললেন, ‘সাকিবের মতো এত ভালো ছেলে আর হয় না।’ তিনি সাকিবের ঘরে নিয়ে গিয়ে দেখালেন, বিছানার ওপর এখনো জায়নামাজ পড়ে আছে। শেলফে থরে থরে সাজানো বই। একটা কম্পিউটার।

বিউটি বললেন, ‘সব পড়ে থাকল, ছেলেটাই আর থাকল না। তার মায়ের নানা রকম অসুখ। অসুস্থ মানুষটা এই শোক সইবে কী করে।’

নিহত সাকিবের বাড়িতে তাঁর আত্মীয়স্বজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত সাকিবের বাড়িতে তাঁর আত্মীয়স্বজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাকিবের বোনের শ্বশুর নজরুল ইসলাম নওগাঁর মান্দার একটি কলেজের অধ্যক্ষ। বললেন, ‘গ্রামের মধ্যে সফর করবে তো দোতলা বাস কেন? গ্রামের রাস্তায় গাছের ডাল থাকবে, বিদ্যুতের লাইন থাকবে—এটাই তো স্বাভাবিক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চরম গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে দোতলা বাস ভাড়া করে। এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

গ্রামের সরু সড়কে দ্বিতল বাস চলার অনুমতি ছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আইইউটির ভিসি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেছেন, যারা পিকনিকের আয়োজন করেছে, তারা কেন দ্বিতল বাস নিল এবং সে রাস্তায় তা চলাচলে অনুমতি ছিল কি না তা তাঁর জানা নেই।

উল্টো তিনি বিআরটিসির ওপর দায় চাপিয়ে বলেছেন, ‘এটা তো ভালো জানার কথা বিআরটিসির। কারণ, তারা বাস ভাড়া দেয়। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

খামেনিকে চিঠি দিয়ে যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারী বাধ্যতামূলক ছুটিতে, মামলা এখন আদালতের এখতিয়ারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত