Ajker Patrika

মাইকে তখন এশার আজান, আড্ডার মধ্যে হঠাৎ বোমা: প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখে দুই আ.লীগ নেতা হত্যার রোমহর্ষ বর্ণনা

মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৪, ২২: ৪৬
মাইকে তখন এশার আজান, আড্ডার মধ্যে হঠাৎ বোমা: প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখে দুই আ.লীগ নেতা হত্যার রোমহর্ষ বর্ণনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতা খুন হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগের আরও দুই কর্মী ছিলেন। আহতাবস্থায় পালিয়ে রক্ষা পাওয়া দুই ব্যক্তিরা ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে গতকাল বৃহস্পতিবারের হামলার রোমহর্ষ বর্ণনা। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে, ঘড়িতে সময় রাত ৮টা। চারদিকে মাইকে এশার আজান হচ্ছে। এমন সময় রাণীহাটি ডিগ্রি কলেজের সামনে চেয়ার পেতে গল্প করছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও হরিনগর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মতিন, আওয়ামী লীগ কর্মী টিটো ও আব্দুর রহিম বাদশা। 

এ সময় হঠাৎ তাঁদের ওপর এসে পড়ে একটি হাতবোমা। এতে গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন আব্দুস সালাম ও আব্দুল মতিন। আহতাবস্থায় পালিয়ে রক্ষা পান আব্দুর রহিম ও টিটো। এরপরই ছোড়া হয় গুলি। ২০-২৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সালাম ও মতিনের। এরপরেই তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

খবর পেয়ে সালামের মরদেহ নেওয়া হয় বাড়িতে ও মতিনের মরদেহ জেলা হাসপাতালে। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নয়ালাভাঙ্গা। 

ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আব্দুর রহিম বাদশা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সালামকে হত্যার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক। তাঁর নির্দেশেই হত্যা করতে রাতের অন্ধকারে প্রাইভেট কার ও বাড়িতে হামলা চালানো হয়। সে দুই দফায় প্রাণে বেঁচে যান সালাম। কিন্তু এবার বাঁচানো গেল না। পরিকল্পনা করেই হত্যা করা হলো।’ 

বাদশা বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে নিজ বাড়ি ফেরার পথে চৌধুরী মোড়ে সালামকে বহনকারী প্রাইভেট কারে অতর্কিত হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। ওই দিন প্রাইভেট কারটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবাই অক্ষত থাকি। এরপর আবারও হত্যার উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে বাড়ি ঘিরে ব্যাপক হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। সেদিনও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।’ 

নিহত সালামের ভাতিজা মো. রনি বলেন, ‘বিএনপি নেতা আশরাফ বহু মানুষকে খুন করেছে। যাকে মন চেয়েছে তাকেই পঙ্গু বানিয়েছে। সঠিক বিচার না হওয়ার কারণে বারবার পার পেয়ে গেছে। তার জন্যই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। সব কটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে তার ক্যাডার বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হতো না।’ 

সালামের রাজনৈতিক সহকর্মীরা জানান, স্থানীয় রাজনীতিতে আশরাফ প্রতিপক্ষ রাখতে চান না। তিনি যাকেই প্রতিপক্ষ মনে করেন, যেকোনো কৌশলে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেন। মানুষ খুন ও লুটপাটের জন্য তাঁর নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। যারা প্রায় সময় হাতে ককটেল নিয়ে ঘোরাফেরা করেন। তিনি হুকুম করলেই সংঘটিত হয় হত্যাসহ নানান অপরাধ। তাঁর হুকুমে সালাম ও মতিন হত্যার পর এখন তিনি পলাতক আছেন। সব হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। 

নিহত আব্দুস সালামের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি সদস্য আলম হোসেন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন আব্দুস সালাম। এ মামলাটি সমাধানের চেষ্টা করছিলেন সালামসহ দুপক্ষের লোকজন। কিন্তু আশরাফ মীমাংসার নামে নাটক করেছে। সে আমার স্বামীর ওপর হামলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আমার স্বামী হত্যায় আশরাফ মূল পরিকল্পনাকারী।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ছাইদুল হাসান বলেন, ‘কোনো হত্যাকাণ্ডই কাম্য নয়। পুলিশ সব অপরাধের তদন্ত করে বিচারের মুখোমুখি করে। সালাম ও মতিন হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হবে। যারা দোষী, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, নয়ালাভাঙ্গায় পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে রাত থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। 

এদিকে আজ শুক্রবার দুপুরে জেলা হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এতে সালামের রাজনৈতিক সহকর্মীসহ অসংখ্য মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। 

এ সময় বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ নজমুল কবির মুক্তা, সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান এডুসহ জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১৫ বছর পর চালু হলো টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া রেলস্টেশন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ ১৫ বছর প্রতীক্ষার পর টাঙ্গাইলের সোনালিয়া করটিয়া স্টেশন উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ফিতা কেটে ও সবুজ পতাকা নাড়িয়ে এই ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক আফজাল হোসেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক বলেন, ‘স্টেশনটি বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া গ্রামে ২০১০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছে। এটি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া এলাকার সীমান্তবর্তী। নাম জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে স্টেশনটি চালু হচ্ছিল না। দীর্ঘদিন পর আজ স্টেশনটি চালু হয়েছে। করটিয়া একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে সব আন্তনগর ট্রেন থামানোর পাশাপাশি আশপাশের সড়ক উন্নয়নের দাবি করছি। স্টেশনটি চালু হওয়ায় টাঙ্গাইল সদর, বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার মানুষের যাতায়াতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, উদ্বোধন হওয়া এই রেলস্টেশনে সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি নিশ্চিত করলে স্থানীয়রা অধিকতর রেলসেবা ভোগ করতে পারবে। তিনি রেলস্টেশনের সংযোগ সড়ক উন্নয়নের দাবি জানান।

সরকারি সা’দত কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি আজ পূরণ হয়েছে। এতে করে সা’দত কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার বাসিন্দারা এবং করটিয়া হাটের কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াতের সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে একটি ট্রেন দিয়ে যাত্রা শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রেলপথে নিরাপত্তা জোরদারের কথাও জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে পাকশী বিভাগের ব্যবস্থাপক লিয়াকত আলী খান শরিফ, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা গৌতম কুমার কুণ্ডু, করটিয়ার জমিদার সাবেক সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলী খান পন্নী, এইচ এম ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির স্মরণে নলছিটিতে অর্ধবেলা দোকানপাট বন্ধ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর নিজ এলাকা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাজুড়ে চলছে শোকের মাতম। পরিবার ও এলাকাবাসীর কান্না ও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। অল্প বয়সে শরিফ ওসমান হাদির এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনেরা।

শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে উপজেলার সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

এই উপলক্ষে সকালে নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শহরে মাইকিং করা হয়।

নলছিটি পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি নেওয়াজ হোসাইন বলেন, নলছিটি উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে সব ব্যবসায়ীরা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেছেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় বীর শরিফ ওসমান হাদির পরিচিতি ও সুখ্যাতি এখন আর শুধু নলছিটিতে সীমাবদ্ধ নয়, তা সারা দেশে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী শাহাদাত ফকির, রফিকুল ইসলাম ও জিয়াউল কবীর মিঠু বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি একজন জাতীয় বীর। তাঁর জন্মভূমি নলছিটি হওয়ায় আমরা গর্বিত। তাঁর স্মরণে ব্যবসায়ী সমিতির এই উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, চার দম্পতি ও ১ বৃদ্ধা আটক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জাবাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত গোলাম হোসেন (৬০) উপজেলার জাবাখালী গ্রামের মৃত হামিজ উদ্দীন মোড়লের ছেলে। আটক ব্যক্তিরা হলেন জাবাখালী গ্রামের সেলিম মোড়ল (৫০), সাইফুল মোড়ল (৩৫), ফারুক মোড়ল (৩২), রেজাউল মোড়ল (৪০), রেজাউলের স্ত্রী মাছুমা বেগম (৩৫), সেলিম মোড়লের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), সাইফুল মোড়লের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৩০), ফারুক মোড়লের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৩০) ও এমান আলীর স্ত্রী সফুরা বেগম (৬৫)। আটকের পর উত্তেজিত জনতা তাঁদের ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গোলাম হোসেনের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাড়ির সামনে চলাচলের পথের অনেকাংশ দখল করে রাখায় প্রতিবেশী রেজাউল মোড়ল, সাইফুল মোড়লসহ অন্যদের সঙ্গে গোলাম হোসেনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে গোলাম হোসেন সাতক্ষীরা আদালতে মামলা করেন। মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ায় প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শনিবার সকালে বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন গোলাম হোসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গোলাম হোসেনকে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, পথের জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি। শ্যামনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হত্যাসহ ১১ মামলার আসামি যশোরের

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা ‘টাক’ মিলন ঢাকায় গ্রেপ্তার

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত

যশোর যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর রামপুরা থেকে যশোর ডিবির একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ বলছে, মিলন যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

আজ শনিবার যশোর ডিবি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। বিকেলে পুলিশ মিলনকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে শহরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মিলন আত্মগোপনে ছিলেন।

যশোর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ রয়েছে। ডিবির একটি দল মিলনের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ডিবি ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দুবাই থেকে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দেশে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তিনি জামিনে বের হন। ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মদ্যপ অবস্থায় তিনজন সহযোগীসহ ফের গ্রেপ্তার হয়ে আবারও কারাগার থেকে জামিনে বের হন।

মিলনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে তাঁর নাম আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে রয়েল কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ক্যাসিনোর (জুয়া) কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে মিলনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে অন্তত ১০ বার ককটেল হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মিলনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দলটির নেতাদের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত