অবৈধভাবে যমুনার বালু তুলে বেচেই চলেছেন আ. লীগ নেতা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ২০

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে গাইবান্ধার সাঘাটায় ভিন্ন চিত্র। এখানে এখনো যমুনা নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করছে উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সুইট এবং তাঁর ছোট ভাই সুজাউদদৌলা সুজা এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তাঁদের দৌরাত্ম্য থামেনি।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের ভরতখালী বাজারের পাশে বাঁধের নিচে জমা করে রাখা বালু ট্রাক্টরে করে পাঠানো হয় জেলার বিভিন্ন স্থানে। যমুনা নদীতে পানি কিছুটা কম থাকায় চর থেকেও তোলা হচ্ছে বালু। প্রতিদিন অবৈধভাবে প্রায় ১০ লাখ টাকার বালু বিক্রি করা হচ্ছে। 

বালু পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক্টরের শ্রমিকেরা জানান, তাঁরা অনেক দিন থেকে চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাইয়ের বালু বিক্রির কাজ করেন। চেয়ারম্যানের হাত অনেক বড়। তিনি সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীর অনুসারী ছিলেন। আর এখন মাহমুদ হাসান রিপনের (সদ্য সাবেক এমপি) লোক তিনি। এখন এই নেতারা না থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা-পুলিশ তাঁদেরই লোক। 

স্থানীয় সূত্র বলেছে, মোশাররফ হোসেন সুইট ও সুজাউদদৌলা সুজার ক্ষমতার প্রধান উৎস ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাঘাটা-ফুলছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন। তাঁর প্রশ্রয়েই দুই ভাই নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। তাঁদের নানা অপকর্মের ফিরিস্তি সাঘাটা থানার ওসি এবং ইউএনও জানলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও এই দুই ভাই অবৈধভাবে বালু তুলে চলেছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহেল রানা বলেন, সুইট চেয়ারম্যান এবং তাঁর ভাই সুজা ১২ বছর ধরে অবৈধভাবে যমুনা থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন। নদীর কিনারা থেকে বালু তোলায় প্রতিবছর পাড় ভেঙে বহু মানুষ গৃহহীন হচ্ছেন। বহু মানুষের আবাদি জমি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু কেউ কথা বলার সাহস পান না। 

বিষয়টি নিয়ে সুজাউদদৌলা সুজা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের জন্য এসব বালু তোলা হচ্ছে। এলাকার মানুষকে নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই বারবার এখানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। যদি অত্যাচার করতেন, তাহলে তিনি চেয়ারম্যান হতে পারতেন না।’

সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন সুইট বলেন, ‘আমি দল হিসেবে জাতীয় পার্টি করতাম। তবে ডেপুটি স্পিকার ও রিপনের সঙ্গে রাজনীতি করতাম। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে কিছু লোক ফায়দা নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।’ বালু বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খুব বিপদে আছি, এসব নিউজ কইরেন না ভাই। আমি মরে যাব।’ 

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘মোশাররফ হোসেন সুইট দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে তিনি ভরতখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’ 

ইউএনও মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘আমরা এর আগে দুইবার ওই স্থানে অভিযান চালিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেসব ভিত্তিহীন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত