ঠাকুরগাঁও ডিসি অফিসে ভাঙচুর চালালেন বৃদ্ধ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, ২১: ৫৫
Thumbnail image

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য সহায়তা কেন্দ্রে (হেল্পডেস্ক) লোহার রড দিয়ে ভাঙচুর করেছেন সুশান্ত কুমার দাস (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ। এতে হেল্পডেস্কের তিনটি গ্লাস ভেঙে পড়লেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার পর ওই বৃদ্ধকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। 

পুলিশের দাবি, পূর্বপরিকল্পিতভাবে এমনটি ঘটিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। তবে সুশান্ত কুমারের পরিবার দাবি, জমিসংক্রান্ত জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর করেছেন তিনি। 

আজ সোমবার দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। সুশান্ত কুমার ঠাকুরগাঁও সদরের রহমানপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকার হরিহরপুর গ্রামের মৃত প্রবীর চন্দ্র দাসের ছেলে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিকট শব্দে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখি এক বৃদ্ধ হেল্পডেস্কের গ্লাস ভাঙচুর করছেন। এ সময় সাদাপোশাক পরা একজন তাঁকে থামানোর চেষ্টা করে। তখন বৃদ্ধ চিৎকার করে বলছিলেন, এখানে কেন লেখা হয়েছে হেল্পডেস্ক? এখানে এসে তো আমি হেল্প পাই না। হেল্পডেস্কে যারা বসে আছে, কেউ আমার কথা শুনছে না।’ 

তবে হেল্পডেস্কে কর্মরত আলম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘ওই বৃদ্ধ সম্ভবত মানসিক ভারসাম্যহীন।’ ওই বৃদ্ধ তাঁদের কোনো কিছু জিজ্ঞাসা ছাড়াই ভাঙচুর করেছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে সুশান্ত কুমার দাসের ছেলে জয় কুমার দাস আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁর বাবা ২০১৩ সাল থেকে তাঁর নানার একটি জমিসংক্রান্ত জটিলতায় আদালতসহ বিভিন্ন দপ্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কোথাও কোনো সুরাহা না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। আজ জমিসংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় হেল্পডেস্কে কারও কাছ থেকে সদুত্তর না পেয়ে তিনি ভাঙচুর করেন। 

ভাঙচুর করা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হেল্পডেস্ক। ছবি: সংগৃহীতজেলা প্রশাসকের গোপনীয় শাখার অফিস সহকারী মামুনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হেল্পডেস্কের কাজ হলো জেলা প্রশাসকের কাছে আসা সকল আবেদন গ্রহণ করে, রিসিভ কপি দেওয়া। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সেই আবেদনের ওপর কাজ করে। এ ক্ষেত্রে হেল্পডেস্ক থেকে কোনো কাজ করে নেওয়ার সুযোগ নাই।’ 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। হামলার ঘটনাটি কী জন্য ঘটিয়েছে, তা বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’ 

ওই বৃদ্ধকে আটকের বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আটক সুশান্ত কুমার দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি পরিকল্পিতভাবে বাড়ি থেকে লোহার রড এনে হামলা করেছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অভিযোগ দেওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

প্রসঙ্গত, গত বছর ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে (ডিসি) হামলা, ভাঙচুর ও পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় নাসির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে সময় বেলচা দিয়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষ, সভাকক্ষ, মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, অভ্যর্থনা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কক্ষ, প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষসহ ৩১টি দরজা-জানালা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। ওই ব্যক্তিকে থামাতে গেলে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত