Ajker Patrika

‘বেশি দামের লোভে’ পাকার আগেই দিনাজপুরের বাজারে লিচু 

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২৩, ১৭: ২৪
‘বেশি দামের লোভে’ পাকার আগেই দিনাজপুরের বাজারে লিচু 

রসালো ও সুস্বাদু ফল লিচুর কথা আসলেই প্রথমেই চলে আসে দিনাজপুরের নাম। জ্যৈষ্ঠ শুরু হতে আরও কিছুদিন বাকি, এরই মধ্যে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর বাজারে দেখা মিলছে লিচুর। প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। আর এসব অপরিপক্ব লিচু কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। 

ব্যবসায়ীরা বলছে, আগাম লিচু বিক্রি করলে দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। কৃষি অধিদপ্তর বলছে, লিচুর প্রকৃত সময় আসতে এখনো দুই সপ্তাহ বাকি। আর বর্তমানে বাজারে যেসব লিচু উঠেছে সেগুলো অপরিপক্ব হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। 

এ দিকে চিকিৎসকেরা বলছেন, অপরিপক্ব লিচু খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ মারাত্মক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। 

আজ মঙ্গলবার সকালে ফুলবাড়ী পৌর বাজারে এসব লিচু বিক্রি করতে দেখা যায়। এই লিচু দেখে অনেকেই আগ্রহ করে কিনছেনও। অনেকে হাতে নিয়ে দেখছেন, দামও করছেন। কেউ কেউ মুখে দিয়েই, না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার অল্প হলেও কিনছেন। 

ক্রেতাদের অনেকেই বলছে, এই লিচুর স্বাদও নেই আবার টক। এখনো লিচুগুলো কাঁচা। রোদের তাপে ওপরে একটু লাল রং ধারণ করেছে। যারা কিনেছেন তাঁরা বলেন, বছরের প্রথম হিসেবে অপরিপক্ব হওয়া সত্ত্বেও তারা কিনছেন। 

ফুলবাড়ী পৌর বাজারের লিচু বিক্রেতা মোন্তা ও মহসিন জানান, বছরের প্রথম বাজারে লিচু নিয়ে এসেছি। এসব লিচু উপজেলার স্থানীয়। বোম্বাই জাতের। তারা বিভিন্ন এলাকায় লিচুর বাগান কিনে লিচু সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। আগাম লিচু বিক্রি করলে দাম একটু বেশি পাওয়া যায় বলেও জানান তারা। 

ফল ব্যবসায়ী মহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর বাগান কন্ট্রাক্টে কিনে পরিচর্যা করি। তারপর সেখান থেকে পেড়ে এনে বিক্রি করি। আপাতত আন্দাজ করে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে লিচু বিক্রি করছি।’ 
 
আগাম লিচুর বিষয়ে আজকের পত্রিকার কথা হয় ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘উপজেলায় ৬৮ হেক্টর লিচু বাগান রয়েছে। তবে প্রথমে ফুল দেখে মনে হচ্ছিল বাম্পার ফলন হবে। তবে অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে কিছু লিচু ঝড়ে গেছে।’ 

রুম্মান আক্তার আরও বলেন, ‘লিচুর পরিপক্ব হতে এখনো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। এখন বাজারে যেসব লিচু বিক্রি হচ্ছে তা অপরিপক্ব (কাঁচা)। এই লিচু না খাওয়াই ভালো।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাকিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপরিপক্ব লিচু খেলে কিডনি ফেল করতে পারে, ডায়রিয়াসহ আরও মারাত্মক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অপরিপক্ব লিচু না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির।’ 

এ বিষয়ে দিনাজপুর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যদি ফলে কেমিক্যাল ব্যবহার করে এবং প্রমাণসহ পাই তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত