সংস্কারের দুই দিন পরই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

মাসুদ পারভেজ রুবেল, ডিমলা (নীলফামারী)
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৪, ০৯: ০৪
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ১৫: ৩৯

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউপি থেকে কালিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দুই দিন পরেই কার্পেটিং (পিচ ঢালাই) উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধূলিমিশ্রিত নিম্নমানের স্থানীয় পাথর এবং পরিমাণে কম ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এদিকে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ অব্যাহত রাখার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার সকালে নির্মাণাধীন সড়কে এই মানববন্ধন করেন তাঁরা।

এ নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। প্রতিবাদ করায় উল্টো তাঁদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে পুলিশি হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা বলেন, ছয় মাস আগে রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। গত সোমবার রাস্তাটির কার্পেটিং শুরু করেন ঠিকাদার। কিন্তু বুধবার থেকেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়েই তুলে ফেলা যাচ্ছে পিচ। ঠিকাদার এলজিইডির প্রকৌশলীদের সঙ্গে মিলে নিম্নমানের ও কম সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করছেন। ধূলিমিশ্রিত স্থানীয় পাথর, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের সময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি। ঠিকাদার রাস্তার অনেক স্থানে খোয়ার পরিবর্তে মাটিও ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ তাঁদের।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৩০০ মিটার সড়কটির সংস্কারকাজ পেয়েছেন জামান ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজটি করছেন নাসিমুল একরাম নামের সাব ঠিকাদার।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো খোয়া ও কার্পেটিং ভালোভাবে না তুলেই আমদানি করা নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে রাস্তাটি কার্পেটিং করছেন ঠিকাদার। নির্মাণকাজে নিম্নমানের পাথর ও তিন থেকে ছয় ইঞ্চি বড় ইটের টুকরা ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দরপত্রে সড়কের প্রস্থ ১০ ফুট থাকলেও করা হচ্ছে ৯ ফুট ৯ ইঞ্চি।

778_1852024_52238320কাজে তো অনিয়ম আছেই। এর জন্য কি আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে মারামারি করব? অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 
শফিউল ইসলাম, প্রকৌশলী, ডিমলা উপজেলা

স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন ইসলামসহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা বলেন, রাস্তা সংস্কারকাজে নিম্নমানের এবং কম পরিমাণে খোয়া, পাথর ও বিটুমিন ব্যবহারের প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়েছেন ঠিকাদারের লোকজন। আগামী দুই-চার মাসের মধ্যেই এই রাস্তার কার্পেটিং পুরোপুরি উঠে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-ঠিকাদার নাসিমুল একরাম বলেন, ‘তাপমাত্রার কারণে পিচ জমাট বাঁধতে সময় লাগছে। আমি তো সেখানে যাই না। এলজিইডির লোকজনের উপস্থিতিতে রাস্তা কার্পেটিং ও সংস্কার করা হয়। থানা ইঞ্জিনিয়ার (উপজেলা প্রকৌশলী) ও অফিসের লোক সিদ্দিককে (উপসহকারী প্রকৌশলী) বলে দিয়েছি আপনারা দেখে নিয়ে কাজ করেন।’ আমদানি করা বিটুমিন ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশীয় বিটুমিন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, ‘কাজে তো অনিয়ম আছেই। এর জন্য কি আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে মারামারি করব? অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তারা নির্দেশনা দিলে আমরা পদক্ষেপ নেব।’ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা করা হবে। কাজে অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত