‘দেড় মাসে কামাই হইছে মাত্র ১৩০০ টাকা’

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪: ২৬
Thumbnail image

বেলা পৌনে ১টা। সূর্য ঠিক মাথার ওপরে। পেছনে বাঁশের তৈরি ডালি, বাউঙ্কা (বাকুয়া) ও কোদাল বেঁধে সাইকেল চালিয়ে রংপুর নগরী থেকে গঙ্গাচড়ার দিকে যাচ্ছেন কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষ। প্রচণ্ড গরমে তাঁদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঘাম গড়িয়ে পড়ছে।

রংপুর নগরীর কদমতলী এলাকায় গতকাল রোববার দেখা তাঁদের সঙ্গে। চাচা আজকে কোনো কাজ পান নাই? জিজ্ঞেস করতে মমিনুর ইসলাম (৩৯) নামের এক দিনমজুর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন, ‘বাবা আর কন না বাহে, কাতি মাস নাই আসতে মনে হয় অভাব শুরু হইছে। প্রায় দেড় মাস, থাকি শহরত। আসা-যাওয়া করি চোল কেনো কাম নাই। মনে হয় শহরতও অভাব নাগছে। কী যে হয় চোল দ্যাশত কিছু বুঝবার পাই চোল না।’ 

কথা বলে জানা গেল, মমিনুর ইসলামের বাড়ি গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া এলাকায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তাঁর চার সদস্যের সংসার। তিস্তার ভাঙনে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার পর তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মাঝাপাড়া এলাকায় চলে আসেন। নিজের কেনো আবাদি জমি না থাকায় রংপুর শহরে বিভিন্ন স্থানে কাজ করে সংসার চালান। 

গঙ্গাচড়া মেডিকেল মোড় এলাকায় সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকাএকই ইউনিয়নের ধামুর এলাকার সুবল চন্দ্র দাস (২৮) বলেন, ‘যখন থাকি দ্যাশত গণ্ডগোল শুরু হইছে, তখন থাকি কাম-কাজ নাই। খুব টানটুন করি সংসার চালাই চোল। শহরের যে মানুষগুলা কাম করাইবে, সেই মানুষগুলায় কয় কাম করাই কেমন করি, ব্যাংক টাকা দেয় না, আর যে টাকা আছে বাজার খরচ করি খাই, না কামে করাই। দ্যাশ আগত স্বাভাবিক হোক তখন দেখা যাইবে।’ এ সময় সুবল চন্দ্র দাস চোখেমুখে হতাশার ছাপ নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে দাদা, এই দেড় মাসে কামাই হইছে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা। গতকাইল ৫ হাজার টাকা লাভের ওপর নিছি, জীবন তো বাঁচা নাগবে।’ 

শুধু মমিনুর ইসলাম ও সুবল চন্দ্র দাসেই নয়, জীবিকা নির্বাহের জন্য এই উপজেলার প্রায় কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে কাজের সন্ধানে যান। ১৫-২০ জন শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে আন্দোলন শুরুর পর থেকে শহরে কাজ-কর্ম কমে যাওয়ায় একরকম কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখনো কাজ মেলে না অনেক দিনই। এই উপজেলার কয়েক হাজার দিনমজুর। কাজ-কর্ম না থাকায় ধারদেনা করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনো রকমে দিন পার করছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত