অপহরণকারীর চোখে গুল মেরে চলন্ত পিকআপ থেকে ঝাঁপ দিয়ে বাঁচল কিশোর

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ০০
Thumbnail image
হাসপাতালে সামিউল হক। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের বদরগঞ্জে চলন্ত পিকআপ থেকে ঝাঁপ দিয়ে অপহরণকারীদের থেকে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী রক্ষা পেয়েছে বলে জানা গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই শিক্ষার্থীকে সন্ধ্যায় বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। তার নাম সামিউল হক (১৪)। সে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কাশিগঞ্জ গ্রামের দিনমজুর শহীদ আলীর ছেলে। সামিউল স্থানীয় এহিয়াগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

কিশোর ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সামিউলের মা মাসুদা বেগম বদরগঞ্জ পৌর শহরের একটি বাসায় ঝিয়ের কাজ করেন। আজ শুক্রবারও সকালে মা মাসুদা বেগম কাজে যান। সামিউল বেলা ১টার দিকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে নিজ বাড়ি থেকে মেলার মাঠ হয়ে বদরগঞ্জ পৌর শহরে যাচ্ছিল। এ সময় একটি পিকআপ ভ্যান তার সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর একজন পিকআপ থেকে নেমেই সামিউলের নাক রুমাল দিয়ে চেপে ধরে, পরে একটি ইনজেকশন দেন কোমরে। এরপর তাকে পিকআপ ভ্যানে উঠে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামিউল ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘যখন আমাকে পিকআপে তোলা হয়, তখন আমার নাকে রুমাল চেপে ধরা হয়, পরে কোমরে ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আর কিছু বলতে পারি না।’

সে আরও বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে দেখি আমার পাশে ১২–১৪ জন আমার বয়সী ছেলে মেয়ে পিকআপ ভ্যানে শুয়ে আছে। সেখানে একজন ব্যক্তি আমাদের তদারকি করছিলেন। চালকের সঙ্গে আর দুজন বসা ছিল। আমাদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি চালককে বলছিলেন, ‘এটা বদরগঞ্জ ময়নাকুড়ি, বৈরামপুর হয়ে পীরগঞ্জের দিকে গাড়ি টান দেন। তখন গাড়ি দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। এ সময় গাড়িতে থাকা ব্যক্তি মুখে গুল দিচ্ছিল। আমি সেই গুল তার কাছ থেকে নিয়ে তার চোখে ছুড়ে মারি। পরে ওই ব্যক্তি দুই হাত চোখে দিয়ে থাকায় আমি তাকে ফেলে চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেই।’

সামিউল বলে, ‘এ সময় একটি মেয়েও চেতন ছিল। সে আমাকে বলছিল, ‘‘আমার শরীর দুর্বল, ঝাঁপ দিতে পারব না, তুমি ঝাঁপ দাও।’ ’ যেখানে ঝাঁপ দেই সেখানে একটি বাঁশের ঝোপ ছিল। পরে আমি ধানখেত দিয়ে বদরগঞ্জ পৌর শহরে মায়ের কাছে আসি।’

মা মাসুদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মোর ছইল যদি বুদ্ধি খাটিয়ে অপহরণকারীর চোখে গুল দিতে না পারত, তাহলে আজ ওরা মোর ছইলোক হয়তো নিয়া মারি ফেলাইতো। ভাগ্যিস আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।’

তার বাবা শহীদ আলী বলেন, ‘মোর ছইল এখনো ঠিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারছে না। তার মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাজ করছে।’

বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাবিবা সুলতানা বলেন, সামিউলের শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের জন্য হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার চোখে-মুখে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তার পুরোপুরি সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত