লক্ষ্মী রানীর মাংসের দোকান

বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১৬: ২৮
Thumbnail image

নিজের ইচ্ছায় মাংস বিক্রির পেশা বেছে নিয়েছেন লক্ষ্মী রানী শর্মা। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৪ নং শহরগ্রাম ইউনিয়নের ফুলবাড়ী বাজারে তাঁর মাংসের দোকান। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি খাসির মাংস বিক্রি করেন বলে জানান লক্ষ্মী রানী। 

স্থানীয় লোকজন তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকেও সনাতন ধর্মের মানুষেরা মাংস কিনতে আসেন তাঁর দোকানে। চাহিদা এতই বেশি যে অনুষ্ঠানের জন্য মাংস কিনতে চাইলে অর্ডার করতে হয় কয়েক দিন আগে। 

দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ফুলবাড়ী বাজারের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে প্রায় আট বছর ধরে খাসির মাংস বিক্রি করে আসছেন লক্ষ্মী রানী শর্মা। শুধু বিক্রি নয় চামড়া ছাড়ানো, মাংস কাটাসহ কসাইয়ের সব কাজ নিজেই তত্ত্বাবধান করেন তিনি। স্বামী উষা দেব শর্মা বিভিন্ন হাটে ঘুরে খাসি সংগ্রহ করেন। দৈনিক ভোর থেকে কাজ শুরু করেন তিনি। 

পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে স্বামীর উৎসাহে এমন কঠিন কাজ অনায়াসে করে যাচ্ছেন লক্ষ্মী রানী। দুই সন্তান ও পরিবার নিয়ে বর্তমানে বেশ সুখেই আছেন তিনি। 

বোচাগঞ্জ উপজেলা থেকে মাংস কিনতে আসা সুধীর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্মী রানীর দোকান থেকে মাংস কিনি। এখানে সঠিক ওজন এবং পানি ছাড়া মাংস পাওয়া যায়। যেভাবে চাই সেভাবেই তিনি মাংস দেন। এ জন্য আমি শুধু নই, এই দূর-দূরান্ত থেকে সনাতন ধর্মের মানুষ সকাল থেকেই মাংস কিনতে লক্ষ্মী রানীর দোকানে ভিড় করেন।’ 

লক্ষ্মীর মাংসের দোকানের কর্মচারী প্রাণ নাথ বলেন, ‘আমরা দুইজন কর্মচারী আছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা লক্ষ্মী রানীর সঙ্গে কাজ করি। বিভিন্ন উপজেলার লোক এসে এখানে মাংস কেনে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র, সোম ও বুধবার প্রচুর ভিড় থাকে। লক্ষ্মী রানীর সঙ্গে থেকে আমাদের সংসার ভালোই চলে।’ 

বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘লক্ষ্মী রানী একজন সাধারণ নারী। প্রতিদিন বাজারে খাসির মাংস বিক্রি করেন। আমি তাঁকে বহুদিন ধরে এ কাজে দেখছি। একজন নারী হয়ে ব্যবসা করেন এর জন্য সবাই তাঁর প্রশংসা করেন।’ 

শহরগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াহেদ আলী বলেন, ‘খুব পরিষ্কার ও যত্ন সহকারে লক্ষ্মী রানী মাংস বিক্রি করেন। ধীরে ধীরে সে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং নারী কসাই এই অঞ্চলে বিরল। একজন নারী হয়ে সে পুরুষের থেকেও বেশি কাজ করতে পারেন এটি আমাদের এলাকার জন্য পাওয়া।’ 

লক্ষ্মী রানী জানান, এক দিনে সর্বোচ্চ ৩১টি খাসির মাংস বিক্রির রেকর্ড রয়েছে তাঁর। অর্থাৎ এক দিনে ১০ থেকে ১২ মণ মাংস বিক্রি করেছেন তিনি।

নারী উদ্যোক্তা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত