Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতা‌লে ২ মিনিটের পরীক্ষা এক ঘণ্টায়

সাদ্দাম হো‌সেন, ঠাকুরগাঁও
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ৫৩
ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতা‌লে ২ মিনিটের পরীক্ষা এক ঘণ্টায়

ম্যানুয়ালি; অর্থাৎ হাতে রক্ত পরীক্ষা করতে সময় লাগে এক ঘণ্টা। হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন দিয়ে সময় লাগে মাত্র দুই মিনিট। অথচ ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের এই মেশিন এক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না।

রক্ত পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক (রিএজেন্ট) না থাকায় সচল মে‌শিনটি অব্যবহৃত পড়ে আছে। এতে দ্রুত ও নির্ভুল রিপোর্ট পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকছে রোগী‌রা। প্রতিদিন বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা বলছেন, বহির্বিভাগে চি‌কিৎসক দে‌খি‌য়ে পরীক্ষা করতে সময় পে‌রিয়ে গেলে ওই দিন আর চি‌কিৎসক‌ দেখাতে পারেন না। এতে একদিকে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে, অন্যদিকে বেড়েছে ভোগান্তি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দ্রুত সময়ে নির্ভুল ও নিখুঁতভাবে রক্ত পরীক্ষা শনাক্তকরণের জন‌্য ২০২৩ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থেকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালকে এক‌টি হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন দেওয়া হয়। হস্তান্তরের এক মাস পরেই যন্ত্র‌টির প্রয়োজনীয় রাসায়নিক (রিএজেন্ট) সংকট দেখা দেয়। প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও যন্ত্রটির রিএজেন্ট সংগ্রহ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে সচল যন্ত্র‌টি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না।

গত বৃহস্প‌তিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্যাথলজি বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড়। আশরাফুল নামে এক ব‌্যক্তি বলেন, ‘ভিড়ের কারণে সকাল ১০টায় টিকিট কেটে লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর পৌনে ১টায় ডাক্তারের কক্ষে ঢোকার সুযোগ পেয়েছি। চি‌কিৎসক রক্ত পরীক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষার পর ডাক্তার দেখাতে পার‌ব কি না, জানি না।’

আসমা বেগম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘মাকে ডাক্তার দে‌খিয়ে রক্ত পরীক্ষা ক‌রিয়ে‌ছি। দুই ঘণ্টা পর এখন রিপোর্ট দিচ্ছে। আরও দ্রুত সময়ে রিপোর্ট দিলে চি‌কিৎসককে স‌ঠিক সময়ে দেখানো যে‌ত।’

হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব ইনচার্জ) ফ‌নিন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, যেখানে টেকনোলজিস্টদের ম্যানুয়ালি পরীক্ষা করতে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো, সেখানে মাত্র দুই ‌মি‌নিটে হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিন দিয়ে শতভাগ নিখুঁত রিপোর্ট দেওয়া যায়। এ ছাড়া হাতের পরীক্ষায় ১০-২০ শতাংশ ভুল ফল আসতে পারে। আর হেমাটোলজি অ্যানালাইজার মে‌শিনে প্রতি‌দিন গড়ে ১ হাজার রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা সম্ভব।’ ল্যাব ইনচার্জ জানান, প্যাথলজি বিভাগ স্থাপনের এক মাস পর এটির সেবা বন্ধ হয়ে যায়। রিএজেন্টের অভাবে এটি আর চালু করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে‌ ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম আজকের প‌ত্রিকাকে বলেন, ‘টেন্ডার দেওয়া হয়েছে; রিএজেন্ট পেলে মে‌শিন‌টি আবার চালু হবে।’

গুরুত্বপূর্ণ এই মেশিন এক বছর ধরে পড়ে ছিল; এর মধ্যে রিএজেন্ট কেনা হয়নি কেন জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘হাসপাতালে আমার যোগদানের তিন মাস হয়েছে।

এর মধ্যে রিএজেন্টের জন‌্য টেন্ডার সাব‌মিট করে‌ছি। আগে কেন কেনা হয়‌নি, সে বিষয়ে আমি বলতে পার‌ব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত