Ajker Patrika

নিয়োগ-চাঁদাবাজি ছিল আফতাবের কবজায়

  • ডিমালা আ.লীগের সভাপতি ছাড়াও তিনবার এমপি ছিলেন আফতাব
  • এমপি হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করেছেন
  • তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন অনেকের জমি দখল করেছেন
মাসুদ পারভেজ রুবেল, (ডিমলা) নীলফামারী
আফতাব উদ্দিন সরকার
আফতাব উদ্দিন সরকার

আফতাব উদ্দিন সরকার ১৯৯৬ সাল থেকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সেই সঙ্গে ২০১৪ থেকে টানা তিনবার নীলফামারী-১ (ডোমার ও ডিমলা) আসন থেকে সংসদ সদস্য হন। এই দুই পদের দাপটে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এলাকার অন্যতম প্রধান নিয়ন্ত্রক। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নিয়োগ, জমি দখল, বালু ব্যবসা, ঠিকাদারি, চাঁদাবাজি—সবকিছুই ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে।

সাধারণ মানুষ ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ভাষ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে সংসদ সদস্য (এমপি) আফতাব ডোমার-ডিমলার গডফাদার হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর রাজত্বে সবাই ছিলেন প্রজা। তাঁর অনিয়মের বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে ভয় পেত। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ নানা ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।

ডিমলা উপজেলা সদরের বাবুরহাট বাজারে প্রায় দেড় একর জায়গার ওপর আফতাবের বাড়ি। সেখানে গুদামঘর, মিল-চাতাল ও পেট্রলপাম্প রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেখানে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ লোকজন। আফতাবের বাড়ি, অফিস, পাম্পসহ তাঁর স্বজনদের বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আগেই তিনি পরিবার নিয়ে সটকে পড়েন। তারপর থেকে তাঁকে আর এলাকায় দেখা যায়নি।

নিয়োগ-বাণিজ্য: আফতাব এমপি হওয়ার পর থেকে দুই উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেছেন। উপজেলার জেলা পরিষদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অন্তত ১০ জন শিক্ষক জানান, ২০১৫ সালে তাঁদের প্রতিষ্ঠানে ৩২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ পেয়েছেন। এ জন্য সাবেক এমপিকে ৩ থেকে ৮ লাখ টাকা করে দিয়েছেন তাঁরা।

ডিমলা আলিম মাদ্রাসার সাবেক সুপার সাহিদুল ইসলাম জানান, তাঁর ছেলের চাকরির জন্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আফতাবকে ৪ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া বেপারিটোলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এমপির সঙ্গে সমঝোতা করে তাঁর প্রতিষ্ঠানের ছয় পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ জন্য এমপিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে।

জমি দখল: আফতাব ও তাঁর পরিবারের লোকজন গত ১৬ বছরে অনেকের জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবেশী রুমি দত্ত ও তাঁর কিশোর ছেলেকে ২০১৭ সালে আফতাবের বাড়িতে তুলে নিয়ে লিখে নেওয়া হয় তাঁদের বাড়ির ৪২ শতাংশ জমি। রুমি বলেন, ‘প্রাণভয়ে ও সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে দলিলে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হই। আড়াই কোটি টাকা মূল্যের জমি লিখে নিয়ে আফতাব এমপি আমাকে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়েছি।’

এ ছাড়া জমি হারানো ঝেল্লাপাড়া গ্রামের বিষ্ণু রায় আক্ষেপ করে বলেন, ‘আদালতের রায় পেলেও তাঁদের ক্ষমতার কাছে আমরা অসহায়। এত বড় অন্যায় নীরবে মেনে নিতে হয়েছে।’

খাসজমি বিক্রি: পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭ বিঘা আবাদি জমি প্রতারণার মাধ্যমে ব্যক্তিমালিকানা দেখিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন সাবেক এই এমপি ও তাঁর ভাইয়েরা। এসব জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন রামডাঙ্গার বাসিন্দা আতিকুর রহমান। এ ছাড়া আফতাব সভাপতি থাকার সুযোগ নিয়ে ডিমলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের জমি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বালু উত্তোলন: বুড়িতিস্তা নদীর রামডাঙ্গা-কুটিরডাঙ্গা এলাকায় শতাধিক কৃষকের জমি খনন করে বালু ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে আফতাবের বিরুদ্ধে। এতে বাধা দেওয়ায় স্থানীয়দের নামে মামলাও দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষক আলম জানান, বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় এমপির পালিত সন্ত্রাসীরা নির্যাতন করে তাঁর বাঁ চোখ নষ্ট করে দেয়

কমিশন: দুই উপজেলায় সব প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই বরাদ্দের ২০ শতাংশ কমিশন নিতেন সাবেক এমপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, বরাদ্দ পেয়ে কাজ না করারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ঠিকাদারি ও চাঁদাবাজি: আফতাবের ছেলে আশরাফুল ইসলাম জুয়েল ডিমলা সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, জুয়েল সরকারি কলেজের শিক্ষক হয়েও বাবুরহাট ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতির পদ দখল করেন। তিনি অটোরিকশার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন।

খালিশা চাপানি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল চৌধুরী বলেন, ‘ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব দরপত্র ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করতেন এমপির ছেলে জুয়েল। তাঁর মাধ্যমে কার নামে কাজ হবে, তা আগেই ঠিক করা হয়। তিনি বেশির ভাগ কাজ বাগিয়ে নিতেন।’

রংপুর শহরে ছয়তলা ভবনের বাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক জুয়েল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে রংপুর শহরে বাড়ি থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।

এদিকে সরকার পতনের পর আফতাব আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, তাঁর পৈতৃক বাড়ি ভারতের কোচবিহারে হওয়ায় তিনি সীমান্ত অতিক্রম করে সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন। কেউ আবার বলছেন, দেশেই আত্মগোপনে আছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত