বিরামপুরে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগী, চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
Thumbnail image
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক ডায়াবেটিস রোগী। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপজেলায় ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে নারী রোগীর হারই বেশি। রয়েছে শিশুও। এদিকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে ওষুধ। অনেকের আবার সামর্থ্য না থাকায় নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারছে না। ফলে বাড়ছে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা।

আগামীকাল ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। ‘সুস্থতা হোক আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগানে এবারের দিবসটি পালিত হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় বারডেম পরিচালিত বিরামপুর ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারিভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ে কাজ করছে ডায়াবেটিক অ্যান্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, পপুলার ডায়াবেটিক সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল ও আইডিয়াল ডায়াবেটিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

ডায়াবেটিক অ্যান্ড হেলথ কেয়ার সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের এ সেন্টারে ১০ হাজার ৩৩৫ জন নিবন্ধিত (রেজিস্টার্ড) ডায়াবেটিস রোগী আছে। তাদের অধিকাংশই নারী। ডায়াবেটিস চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল। ফলে নিম্নমধ্যবিত্ত রোগীরা চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকছে।’

বিরামপুর আইডিয়াল ডায়াবেটিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, এখানে নিবন্ধিত রোগীর সংখ্যা ৩০০ জন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসে ৫০-৬০ জন। তিনি বলেন, অনিয়মিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস ও পরিশ্রম কম করার কারণে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ।

বিরামপুর ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতালের চিকিৎসক মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমিতির আওতায় ৪ হাজার ৮৮৬ জন রেজিস্টার্ড রোগী আছে। তাদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা ৫৫ শতাংশ, পুরুষ রোগী ৪৫ শতাংশ এবং শিশু থেকে যুবক পর্যন্ত ৫ শতাংশ।’ তিনি বলেন, একজন ব্যক্তিকে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতেই হবে।

বিরামপুর প্রফেসরপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী মতিয়ার রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আমার ডায়াবেটিস। প্রতি মাসে আমাকে ২ হাজার ৮০০ টাকার ওষুধ খেতে হয়; যা সংসারের জন্য একটি বাড়তি চাপ।’

শহরের পূর্বপাড়া মোড়ের ডেন্টিস্ট বুলবুল বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আমি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। আমাকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকার ওষুধ খেতে হয়। সংসারের খরচ ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যয় মেটানোর পর ওষুধ কেনা আমার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া প্রতিনিয়তই ওষুধের দাম বাড়ছে।’

রাইয়ান হেলথ কেয়ার হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টারের পুষ্টিবিদ লিনা আকতার বলেন, বর্তমানে তরুণ-তরুণীরাও আশঙ্কাজনক হারে ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এটি শুধু স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে না, মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, শর্করাজাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ স্থূলতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়। শিশু-কিশোরেরা ঠিকমতো খেলাধুলা করছে না। এ ছাড়া ডিভাইসে আসক্তি, অপর্যাপ্ত ঘুম, স্থূলতা ও হরমোনের সমস্যার কারণে এ রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা গোলাম রসুল রাখি বলেন, হাসপাতালের ১০৪ নম্বর কক্ষে নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডি) মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীর বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা এবং ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগীকে সেবা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত