শিক্ষার্থী ১৫ জন হলেও উপবৃত্তি পায় ২৩ জন

ইয়াছিন সিথুন, ডোমার (নীলফামারী) 
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২: ৩১
Thumbnail image

পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫। কিন্তু সেখানে উপবৃত্তি পায় ২৩ জন। ভুয়া ৮ শিক্ষার্থীর নাম দিয়ে উপবৃত্তির টাকা ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের ওপর ক্ষিপ্ত হন। 

জানা গেছে, নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত নয়ানী বাগডোকরা শিমুলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রাতারাতি ১৫ জন শিক্ষার্থীর হাজিরা খাতাটি পরিবর্তন করে ২৩ জন শিক্ষার্থীর নাম লিপিবদ্ধ করে নতুন হাজিরা খাতা তৈরি করেন। 

শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও স্লিপের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকগণ। 

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়, কিন্তু উপবৃত্তির টাকা পাওয়া শিক্ষার্থী কল্যাণী রানীর বাবা কৃত্তিবাস রায় বলেন, ‘আমার মেয়ে আগে নয়ানী বাগডোকড়া শিমুলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ত। উপবৃত্তিও পেত। দুই বছর হলো অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এখনো ওই স্কুল থেকেই ছয় মাস পরপর ৯০০ টাকা উপবৃত্তি পায়। উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার সময় বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানকে ৩০০ টাকা দিতে হয়।’ 

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র চয়ন রায়, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র যতন রায়, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হরিপ্রসাদ রায় জানায়, ‘আগে উপবৃত্তি পেতাম। এখন আর পাই না।’ 

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুশীল রায় বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা পায় না, অথচ অন্য বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, এ রকম শিক্ষার্থীও উপবৃত্তি পায়। বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দের স্লিপের টাকার নিয়ম অনুযায়ী খরচ করে না। আমরা জানতে চাইলে সঠিক কিছু বলেন না প্রধান শিক্ষক।’ 

অভিভাবক নারায়ণ রায় বলেন, ‘আমরা অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোনো সমাধান হয় না। প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার জোর অনেক।’ 

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো জানার থাকলে শিক্ষা অফিস থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে আসবেন। তারপর জানাব।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস ছামাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী সপ্তাহে অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্ত চলছে। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত