২০০ গজের ব্যবধানে ৪০ টাকার আনারস ৮০ টাকায় বিক্রি

শিপুল ইসলাম, রংপুর
আপডেট : ৩০ মে ২০২৩, ১৭: ৫৯
Thumbnail image

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি কৃষক ভুট্ট মিয়ার সন্তান। তাই তিনি সিটি বাজারের ফল দোকানে ঘুরছিলেন আনারস কেনার জন্য। দাম না বনায় এক দোকান থেকে অন্য দোকানে যাচ্ছিলেন। কাছে জানতে চাইলে ভুট্টু মিয়া বলেন, ‘ছাওয়াটার খুব জ্বর, সর্দি ওই জন্য আনারস কিনার আসছু। কিন্তু এটে কেজি ছাড়া বেচাওছে না। আগোত তো হামরা পিচ দর কিনছন। একটা আনারস দেড় কেজি, এক কেজির বেশি। দামও ৮০ টাকা কেজি চাওছে। এতো টাকা নাই জন্য ছোট আনারস খোঁজোছু, পাইছু না।’

রংপুর সিটি বাজার থেকে ২০০ গজ পথ এগোলেই পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ। সেখানে আনারসের পাইকারি আড়ত। গতকাল সোমবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমণ আনারস পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতিকেজি আনারসের পাইকারি দাম পড়ে ৪০ টাকা। অথচ ২০০ গজ দূরেই খুচরা ফল বিক্রেতারা দ্বিগুণ দামে আনারস বিক্রি করছেন। লাভ থাকছে ৪০ টাকা।

পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের পাশে পাইকারি আনারস বিক্রেতা মো. শহিদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পরিবহন ব্যয় কমলে আনারসের পাইকারি দাম আরও কমত। এখন সবকিছু কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, আনারসও তাই কেজি দরে বেচতেছি। খুচরা বিক্রেতারা কত বিক্রি করবেন সেটা তাঁরাই নির্ধারণ করেন। বর্তমানে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

 রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ এলাকার আনারসের বাজার। গতকাল সোমবার তোলাসিটি বাজারে ফল কিনতে আসা নগরীর শাহীপাড়ার বাসিন্দা রোমান সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা জিম্মি। তরমুজের পর আনারসও কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়েছে। ইচ্ছা থাকলেও সাধারণ মানুষ এসব ফল এখন কিনে খেতে পারছেন না। অথচ একটা সময় ছিল পিচ হিসেবে বিক্রি হতো। আমরা সাধ্য অনুযায়ী একটা দুইটা পিচ কিনতাম। এখন সেই সুযোগ নেই। আনারসের দাম দ্বিগুণ।’

ওই বাজারে কথা হয় গুপ্তপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই পা বাড়ালে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ। সেখানে পাইকারিতে আনারসের কেজি ৪০ টাকা। আর এখানে ৮০ টাকা। দামের এমন অস্বাভাবিক ফারাক থাকলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।

রংপুর সিটি বাজারে খুচরা ফল বিক্রেতারা প্রতিকেজি আনারস ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গতকাল সোমবার তোলাদাম বেশির কারণ জানতে চাইলে সিটি বাজারের খুচরা বিক্রেতা সাফিন রহমান বলেন, ফল পচনশীল পণ্য। অনেক সময় ফল পচে গিয়ে লস হয়ে যায়। তাই একটু দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয়। তবে অর্ধেকে অর্ধেক লাভ এ কথা সত্য নয়।’

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রংপুরের সহকরী পরিচালক আফসানা পারভিন মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। আনারসের দাম অস্বাভাবিক হলে সেখানেও অভিযান চালানো হবে। দাম বেশি রাখার প্রশ্নই আসে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত