বিধবা নারীকে বিয়ের শর্তে জামিন পেলেন সেই এসআই

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২২, ২৩: ২২

বিধবা নারীকে বিয়ে করার শর্তে জামিন পেলেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত কুড়িগ্রাম সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল। আজ বুধবার পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিয়ে করার শর্তে জামিন আবেদন করেন ওই পুলিশ সদস্য। পরে আদালত তাঁর জামিন আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে বিয়ের কাবিননামা দাখিলের পরে জামিন মঞ্জুর করেন ৷

জামিনের পরে জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী ভুক্তভোগী ওই বিধবা নারীকে বিয়ে করেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল। তাঁদের বিয়েতে ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। বিয়েতে দুই পক্ষের আইনজীবী, পরিবারের সদস্য ও অভিযুক্ত জলিলের প্রথম স্ত্রীসহ উপস্থিত ছিলেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি এই মামলায় এসআই জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে তিনি উচ্চ আদালতের রায়ে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। তাঁর জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত রবিবার দুপুরে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। পরে আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। 

ভুক্তভোগী ওই নারী (৪৩) বলেন, এতদিন আমি জলিলের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি তো দূরের কথা বিয়ের কাবিননামা চেয়েও পাইনি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতে মামলা করার পর আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমি আনন্দিত। 

মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান মিলন বলেন, আদালতের রায়ের প্রতি সন্তুষ্ট। মামলায় আমি ও আমার মক্কেল ন্যায় বিচার পেয়েছি। 

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এক নারী। সেই ডায়েরির তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক আব্দুল জলিল বিধবা ওই নারীর সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে তোলেন। এরপরে তিনি ভুয়া কাবিননামা করিয়ে নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে সংসার করতে থাকেন। একসময় ভুক্তভোগী নারী বিয়ের কাবিননামা চাইতে গেলে জলিল বিবাহের কথা অস্বীকার করেন। পরে ওই ভুক্তভোগী নারী ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পঞ্চগড় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন। গত ২০ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২৩ জানুয়ারি আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত