অভিযোগ তদন্তে দুদক কাউকে ছাড় দেবে না: দুদক সচিব

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ২২: ০২
Thumbnail image

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেছেন, ‘দুদক নৈমিক্তিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অনুসন্ধান ও তদন্তের ব্যাপারে দুদক কখনই কাউকে ছাড় দেবে না।’ 

আজ রোববার কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল পৌর অডিটরিয়ামে ‘রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

দুদক সচিব বলেন, ‘আমাদের গণশুনানিটি একটি প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষকে নির্ভয়ে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে কিছু কিছু অভিযোগের সমাধানও দেওয়া হয়েছে। আশা করি যে সমস্যাগুলোর সমাধান দেওয়া যায়নি, তা সাত দিনের মধ্যে দেওয়া হবে কিংবা এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হবে।’ 
 
দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, ‘দুদক লিখিতভাবে অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে, টোল ফ্রি নম্বর-১০৬–এর মাধ্যমেও যে অভিযোগগুলো আসে, তা সবই নথিভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে যে অভিযোগগুলো তফসিলভুক্ত, তা অনুসন্ধানের আওতায় নিয়ে এসে অভিযোগের সত্যতা থাকলে, তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ 
 
গণশুনানিতে একদিকে সেবাগ্রহীতা ও অপর দিকে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করা হয়। অডিটরিয়ামে উপস্থিত জনতার সামনে প্রকাশ্যে অভিযোগ শোনা ও প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয় দুদক ও জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

গণশুনানিতে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার, সেবাপ্রত্যাশী জনসাধারণ দৃঢ়তার সঙ্গে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ উত্থাপন করেন। 
 
বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে হয়রানি ও বসতবাড়ি থেকে বৈদ্যুতিক লাইনের খুঁটি স্থানান্তর ও জমিজমা–সংক্রান্ত কিছু অভিযোগের তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেন কর্মকর্তারা। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তীকালে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গণশুনানিতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বিএডিসি অফিস, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ ৪১টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে ৭৮টি অভিযোগ পায় দুদক। এর মধ্যে ৭২টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শুনানির জন্য সেবাপ্রার্থীরা সরাসরি উপস্থাপন করেন। ৭২টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি প্রাথমিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৫টির বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়। 
 
শুনানিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে আনা ৪টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। ভূমি অফিসের দুজন কর্মচারীকে বদলির জন্য তাঁদের দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে নির্দিষ্ট কার্যদিবসের মধ্যে নেওয়া পদক্ষেপের ওপর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য স্ব-স্ব দপ্তরকে নির্দেশ দেয় কমিশন। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় গণশুনানিতে আরও বক্তব্য দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. তালেবুর রহমান, কুড়িগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক, কুড়িগ্রাম জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. আফতাব উদ্দিন, কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত