আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
পরিবারের সবাই যখন ঈদ আনন্দে মশগুল, তখন দূর নির্জন গ্রামে প্রিয়জন ছাড়া নিভৃতে বৃদ্ধাশ্রমে চোখের জল ফেলছেন একদল মানুষ। এ মানুষগুলোর মধ্য অনেকেই বুকভরা আশায় ছিলেন এবার ঈদে হয়তো ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন কেউ না কেউ আসবে। সকাল পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়ালেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি!
গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে ছোট সোহাগী গ্রাম। গ্রামটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। ২০১৭ সালে স্বেচ্ছাশ্রমে গড়ে উঠেছে মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রম। মানুষের অনুদানে চলে এটি। বর্তমানে এখানে বাবা-মা আছেন ৪২ জন। তাঁদের মধ্যে বৃদ্ধা রয়েছেন ২৬ জন, আর বৃদ্ধ ১৬ জন। অনেককে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা হয়েছে এখানে। এ বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরত মানুষগুলো কারও বাবা, কারও মা, কারও দাদ-দাদি, কারও নানা-নানি।
জবেদ আলী। বয়স এক শর বেশি। একসময় তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। দুই ছেলে, এক মেয়ে। যখন পরিবার নিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কেটেছে তাঁর। সন্তানদের বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। স্ত্রীর নামে সামান্য জমি ছিল, সেটি দুই ছেলেকে লিখে দেন। এর মাঝে জবেদ আলীর বয়সের ভারে অক্ষম হয়ে পড়েন। ছেলেরা তখন আলাদা হয়ে যায়। শুরু হয় জীবনের এক কঠিন অধ্যায়।
সন্তানদের অবহেলা আর ছেলেদের স্ত্রীর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়তে হয় তাঁকে। স্ত্রীকে নিয়ে ভবঘুরে জীবন কাটিয়েছেন কিছুদিন। অবশেষে জবেদ আলীর ঠাঁই হয়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমে। কিছুদিন পর স্ত্রীও তাঁকে একা রেখে চিরবিদায় নেন।
নিঃসঙ্গ হয়ে বৃদ্ধাশ্রমের চার দেয়ালের আড়ালে মুখ লুকিয়ে নীরবে চোখের পানি ফেলছেন জবেদ আলী। ঈদের দিন সেসব স্মৃতিচারণা করলেন তিনি। বাড়ি তাঁর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কালিডোবা গ্রামে।
জবেদ আলী জানান, ছেলেরা বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় থেকেছেন। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে অবশেষে মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমে আসেন। প্রায় ছয় বছর এখানেই আছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে জবেদ আলী বলেন, ‘বেশ ভালোই আছি, সন্তানদের ছাড়া ঈদ, এ কষ্ট সে ছাড়া, কেউ অনুভব করতে পারবে না। এমন সন্তান যেন, আর কারও না হয়। এটুকুই চাওয়া।’
আজ বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার দিন বিকেলে ছোট সোহাগী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমের গিয়ে কথা হয় জবেদ আলীসহ নিজ পরিবার থেকে আসা কয়েকজন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সঙ্গে।
বেশ কিছু ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন মজিরুননেছা। বয়স প্রায় এক শ। স্বামী মারা যাওয়ার পর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে দুই ছেলে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কেউ মায়ের খোঁজ রাখে না। কয়েক দিন রাস্তায় পড়েছিলেন। এরপর ঠাঁই হয় এ বৃদ্ধাশ্রমে। ছেলেমেয়ে থেকেও তিনি যেন নিঃসন্তান। আরেকজন ভরশী মাহমুদ (১০৮)। একই উপজেলার চক বিরাহীমপুর গ্রামে বাড়ি। এক ছেলে, বৃদ্ধ বাবার কোনো খোঁজ রাখেন না। এখানে প্রায় চার বছর ধরে আছেন।
এই বৃদ্ধাশ্রমের আরেক আশ্রিত জাহানারা বলেন, ‘এখানে থাকা-খাওয়ার সমস্যা নেই। ঈদের দিনে ভালো পোশাক আর খাবার দেওয়া হয়েছে। কোরবানিও করা হয়েছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।’
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একটি স্বেচ্ছাশ্রমের প্রতিষ্ঠান। এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা সবাই বৃদ্ধ মা-বাবা। আমরা তাঁদের সঙ্গে মা-বাবার মতো আচরণ করি। অনেকেই অসুস্থ আছেন। সময়মতো তাঁদের গোসল করাতে হয়। মাঝেমধ্যে অনেককে খাইয়ে দিতে হয়। প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও অন্যদের অনুদানে চলে এটি। মানুষের দেওয়া অনুদানে হয় বৃদ্ধ মা-বাবার ঈদের দিনের নতুন পোশাক ও খাবার।’ তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
পরিবারের সবাই যখন ঈদ আনন্দে মশগুল, তখন দূর নির্জন গ্রামে প্রিয়জন ছাড়া নিভৃতে বৃদ্ধাশ্রমে চোখের জল ফেলছেন একদল মানুষ। এ মানুষগুলোর মধ্য অনেকেই বুকভরা আশায় ছিলেন এবার ঈদে হয়তো ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন কেউ না কেউ আসবে। সকাল পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়ালেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি!
গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে ছোট সোহাগী গ্রাম। গ্রামটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। ২০১৭ সালে স্বেচ্ছাশ্রমে গড়ে উঠেছে মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রম। মানুষের অনুদানে চলে এটি। বর্তমানে এখানে বাবা-মা আছেন ৪২ জন। তাঁদের মধ্যে বৃদ্ধা রয়েছেন ২৬ জন, আর বৃদ্ধ ১৬ জন। অনেককে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা হয়েছে এখানে। এ বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরত মানুষগুলো কারও বাবা, কারও মা, কারও দাদ-দাদি, কারও নানা-নানি।
জবেদ আলী। বয়স এক শর বেশি। একসময় তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। দুই ছেলে, এক মেয়ে। যখন পরিবার নিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কেটেছে তাঁর। সন্তানদের বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। স্ত্রীর নামে সামান্য জমি ছিল, সেটি দুই ছেলেকে লিখে দেন। এর মাঝে জবেদ আলীর বয়সের ভারে অক্ষম হয়ে পড়েন। ছেলেরা তখন আলাদা হয়ে যায়। শুরু হয় জীবনের এক কঠিন অধ্যায়।
সন্তানদের অবহেলা আর ছেলেদের স্ত্রীর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়তে হয় তাঁকে। স্ত্রীকে নিয়ে ভবঘুরে জীবন কাটিয়েছেন কিছুদিন। অবশেষে জবেদ আলীর ঠাঁই হয়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমে। কিছুদিন পর স্ত্রীও তাঁকে একা রেখে চিরবিদায় নেন।
নিঃসঙ্গ হয়ে বৃদ্ধাশ্রমের চার দেয়ালের আড়ালে মুখ লুকিয়ে নীরবে চোখের পানি ফেলছেন জবেদ আলী। ঈদের দিন সেসব স্মৃতিচারণা করলেন তিনি। বাড়ি তাঁর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কালিডোবা গ্রামে।
জবেদ আলী জানান, ছেলেরা বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় থেকেছেন। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে অবশেষে মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমে আসেন। প্রায় ছয় বছর এখানেই আছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে জবেদ আলী বলেন, ‘বেশ ভালোই আছি, সন্তানদের ছাড়া ঈদ, এ কষ্ট সে ছাড়া, কেউ অনুভব করতে পারবে না। এমন সন্তান যেন, আর কারও না হয়। এটুকুই চাওয়া।’
আজ বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার দিন বিকেলে ছোট সোহাগী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত মেহেরুননেছা বৃদ্ধাশ্রমের গিয়ে কথা হয় জবেদ আলীসহ নিজ পরিবার থেকে আসা কয়েকজন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার সঙ্গে।
বেশ কিছু ধরে বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন মজিরুননেছা। বয়স প্রায় এক শ। স্বামী মারা যাওয়ার পর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে দুই ছেলে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কেউ মায়ের খোঁজ রাখে না। কয়েক দিন রাস্তায় পড়েছিলেন। এরপর ঠাঁই হয় এ বৃদ্ধাশ্রমে। ছেলেমেয়ে থেকেও তিনি যেন নিঃসন্তান। আরেকজন ভরশী মাহমুদ (১০৮)। একই উপজেলার চক বিরাহীমপুর গ্রামে বাড়ি। এক ছেলে, বৃদ্ধ বাবার কোনো খোঁজ রাখেন না। এখানে প্রায় চার বছর ধরে আছেন।
এই বৃদ্ধাশ্রমের আরেক আশ্রিত জাহানারা বলেন, ‘এখানে থাকা-খাওয়ার সমস্যা নেই। ঈদের দিনে ভালো পোশাক আর খাবার দেওয়া হয়েছে। কোরবানিও করা হয়েছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।’
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একটি স্বেচ্ছাশ্রমের প্রতিষ্ঠান। এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা সবাই বৃদ্ধ মা-বাবা। আমরা তাঁদের সঙ্গে মা-বাবার মতো আচরণ করি। অনেকেই অসুস্থ আছেন। সময়মতো তাঁদের গোসল করাতে হয়। মাঝেমধ্যে অনেককে খাইয়ে দিতে হয়। প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও অন্যদের অনুদানে চলে এটি। মানুষের দেওয়া অনুদানে হয় বৃদ্ধ মা-বাবার ঈদের দিনের নতুন পোশাক ও খাবার।’ তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা পৌর বাস টার্মিনাল চালু হয়নি পাঁচ বছরেও। ফলে সন্ধ্যা হলে সেখানে বসে মাদকসেবী আর বখাটেদের আড্ডা। অন্যদিকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। তাঁদের ব্যস্ততম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে ওঠানামা করতে হচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতিহত করতে সোচ্চার ছিলেন ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের নেতারাও। তবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) গত চার মাসে এ ধরনের কোনো তৎপরতা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে ববিতে মামলা, হামলা, মারধরের শিকার..
৮ ঘণ্টা আগেফলজাতীয় পণ্যের ওপর আরোপ করা অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক আগামী চার দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন যশোরের ব্যবসায়ীরা। দাবি পূরণ না হলে তাঁরা বিদেশ থেকে ফল আমদানি বন্ধ করে দেবেন।
৮ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের নান্দাইলে টহল পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নান্দাইল-হোসেনপুর সড়কের উদং মধুপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৮ ঘণ্টা আগে