কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
‘বাড়িঘর সরামো কতবার? নদী তো আর সময় দেয় না। জমি, ঘরবাড়ি, বাপ-দাদার ভিটা সউগ ভাংগি যাবার নাইগছে। নদীভাঙনে হামার এই গ্রামটাকে শ্যাষ করি ফ্যালাইলবার নাগছে। এ্যালা হামরা বউ-ছাওয়াক নিয়া কোনটে যাম?’ তিস্তার তীরে দাঁড়িয়ে করুণ সুরে কথাগুলো বলছিলেন কৃষিশ্রমিক হাফেজ আলী। তাঁর বাড়ি কাউনিয়া উপজেলার ভাঙনকবলিত গদাই এলাকায়।
কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে কাউনিয়ায় তিস্তার পানি বাড়ছে। তীরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিস্তার তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। নদীভাঙনে শেষ আশ্রয়টুকু হারাতে যাওয়া এলাকাবাসীর দাবি ত্রাণ নয়, তাঁদের নদীভাঙন থেকে রক্ষা করা হোক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে ৫ শতাধিক পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে উপজেলার গদাই ও পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রাম। এ ছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে তালুকশাহাবজ, নিজপাড়া, ঢুষমারা, আরাজী হরিশ্বর, চরহয়বৎখাঁ ও চরগনাই। এসব গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিটি মুহূর্ত ভাঙনের ভয় আর উৎকণ্ঠায় কাটছে।
গত এক মাসে তিস্তার করাল গ্রাসে গদাই ও পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা ও প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, গত এক মাসে তিস্তার তীব্র ভাঙনে তাঁর ইউনিয়নের দুটি গ্রামের অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। তিস্তায় যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এতে তাঁর এলাকার তীরবর্তী গ্রামের কয়েক শ ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। বাঁশ পুঁতে ভাঙনরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এগুলো সাময়িক।
আনছার আলী বলেন, ‘ভাঙনরোধে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। কিন্তু তাতে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। পানির স্রোতে জিও ব্যাগ তলিয়ে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে নদীশাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।’
তিস্তার ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো গদাই গ্রামের বাসিন্দা মজিরন নেছা বলেন, ‘তিস্তা ভাঙে আর নদীর উপরা কোনোমতে মাথা গুঁজি থাকি। আবাদি জমি সউগ ভাংগি নিয়্যা গেইচে। এবারও নদীর পাড় ভাইংবার নাইগছে। অ্যালা যামো কটাই, মাথা গুজমো কটাই?’
তিস্তাপাড়ে বসবাসকারী খোকা মিয়া জানান, তাঁরা ত্রাণ চান না। বরং সরকার যেন নদীতে বাঁধ দিয়ে দেয়। বাঁধ না থাকায় নদী তাঁদের সবকিছু শেষ করে দিতে চলেছে।
গদাই গ্রামের ছাত্তার মিয়া বলেন, ‘কী করমো বাহে? হামার এলাকার সবার বাড়িঘর, আবাদি জমি সইগ তিস্তা নদী গিলি খাইল। তাও কায়েও দেখে না কী করি মানুষগুলা বাঁচি আছে। জীবন আর চলে না। কাম নাই, প্যাটত ভাত নাই। শেষ পর্যন্ত মাথা গুঁজি থাকার সম্বলটাও নদীত চলি যাওছে।’
ছাত্তার মিয়ার প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক জানান, নদীর তীরবর্তী এলাকার ঘরে ঘরে তিস্তার ভাঙনের আতঙ্ক। তাঁর প্রশ্ন, ঘরবাড়ি সরিয়ে যাবেনইবা কোথায়? তাঁদের বাপ-দাদার ভিটা ও আবাদি জমি সব নদীতে চলে গেছে। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ থেকে তাঁদের এখন পথের ফকির হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ঘরের কিনারায় নদী। পানির গর্জন আর ভাঙনের চিন্তায় রাতে চোখে ঘুম আসে না। বাড়ি সরানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
ভাঙনকবলিত গদাই এলাকার সুজা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, গত বছর থেকে নদী ভাঙছে। ওই বছর এলাকার প্রায় দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাউবো শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন ভাঙনকবলিত পরিবারের অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতঘর সরিয়ে নিচ্ছে। আবার কেউ নদীর কিনারায় বাঁশ পুঁতে শেষ আশ্রয়টুকু রক্ষার চেষ্টা করছে।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের তিস্তার ভাঙনে প্রতিবছর ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে চলে যায়। তিস্তা খনন, সংরক্ষণ ও মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে রংপুর পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমরা সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির ও নদীভাঙনের খোঁজখবর রাখছি। গত বছর কাউনিয়ায় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। চলতি মৌসুমে গদাই এলাকায় তিস্তার ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
পাউবো ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন হলে তিস্তা অববাহিকায় আর সৃষ্ট বন্যা এবং নদীভাঙন থাকবে না।
‘বাড়িঘর সরামো কতবার? নদী তো আর সময় দেয় না। জমি, ঘরবাড়ি, বাপ-দাদার ভিটা সউগ ভাংগি যাবার নাইগছে। নদীভাঙনে হামার এই গ্রামটাকে শ্যাষ করি ফ্যালাইলবার নাগছে। এ্যালা হামরা বউ-ছাওয়াক নিয়া কোনটে যাম?’ তিস্তার তীরে দাঁড়িয়ে করুণ সুরে কথাগুলো বলছিলেন কৃষিশ্রমিক হাফেজ আলী। তাঁর বাড়ি কাউনিয়া উপজেলার ভাঙনকবলিত গদাই এলাকায়।
কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে কাউনিয়ায় তিস্তার পানি বাড়ছে। তীরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিস্তার তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। নদীভাঙনে শেষ আশ্রয়টুকু হারাতে যাওয়া এলাকাবাসীর দাবি ত্রাণ নয়, তাঁদের নদীভাঙন থেকে রক্ষা করা হোক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে ৫ শতাধিক পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে উপজেলার গদাই ও পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রাম। এ ছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে তালুকশাহাবজ, নিজপাড়া, ঢুষমারা, আরাজী হরিশ্বর, চরহয়বৎখাঁ ও চরগনাই। এসব গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিটি মুহূর্ত ভাঙনের ভয় আর উৎকণ্ঠায় কাটছে।
গত এক মাসে তিস্তার করাল গ্রাসে গদাই ও পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা ও প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, গত এক মাসে তিস্তার তীব্র ভাঙনে তাঁর ইউনিয়নের দুটি গ্রামের অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। তিস্তায় যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এতে তাঁর এলাকার তীরবর্তী গ্রামের কয়েক শ ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। বাঁশ পুঁতে ভাঙনরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এগুলো সাময়িক।
আনছার আলী বলেন, ‘ভাঙনরোধে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে। কিন্তু তাতে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। পানির স্রোতে জিও ব্যাগ তলিয়ে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে নদীশাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।’
তিস্তার ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো গদাই গ্রামের বাসিন্দা মজিরন নেছা বলেন, ‘তিস্তা ভাঙে আর নদীর উপরা কোনোমতে মাথা গুঁজি থাকি। আবাদি জমি সউগ ভাংগি নিয়্যা গেইচে। এবারও নদীর পাড় ভাইংবার নাইগছে। অ্যালা যামো কটাই, মাথা গুজমো কটাই?’
তিস্তাপাড়ে বসবাসকারী খোকা মিয়া জানান, তাঁরা ত্রাণ চান না। বরং সরকার যেন নদীতে বাঁধ দিয়ে দেয়। বাঁধ না থাকায় নদী তাঁদের সবকিছু শেষ করে দিতে চলেছে।
গদাই গ্রামের ছাত্তার মিয়া বলেন, ‘কী করমো বাহে? হামার এলাকার সবার বাড়িঘর, আবাদি জমি সইগ তিস্তা নদী গিলি খাইল। তাও কায়েও দেখে না কী করি মানুষগুলা বাঁচি আছে। জীবন আর চলে না। কাম নাই, প্যাটত ভাত নাই। শেষ পর্যন্ত মাথা গুঁজি থাকার সম্বলটাও নদীত চলি যাওছে।’
ছাত্তার মিয়ার প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক জানান, নদীর তীরবর্তী এলাকার ঘরে ঘরে তিস্তার ভাঙনের আতঙ্ক। তাঁর প্রশ্ন, ঘরবাড়ি সরিয়ে যাবেনইবা কোথায়? তাঁদের বাপ-দাদার ভিটা ও আবাদি জমি সব নদীতে চলে গেছে। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ থেকে তাঁদের এখন পথের ফকির হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ঘরের কিনারায় নদী। পানির গর্জন আর ভাঙনের চিন্তায় রাতে চোখে ঘুম আসে না। বাড়ি সরানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
ভাঙনকবলিত গদাই এলাকার সুজা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, গত বছর থেকে নদী ভাঙছে। ওই বছর এলাকার প্রায় দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাউবো শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন ভাঙনকবলিত পরিবারের অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতঘর সরিয়ে নিচ্ছে। আবার কেউ নদীর কিনারায় বাঁশ পুঁতে শেষ আশ্রয়টুকু রক্ষার চেষ্টা করছে।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের তিস্তার ভাঙনে প্রতিবছর ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে চলে যায়। তিস্তা খনন, সংরক্ষণ ও মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে রংপুর পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমরা সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির ও নদীভাঙনের খোঁজখবর রাখছি। গত বছর কাউনিয়ায় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। চলতি মৌসুমে গদাই এলাকায় তিস্তার ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
পাউবো ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন হলে তিস্তা অববাহিকায় আর সৃষ্ট বন্যা এবং নদীভাঙন থাকবে না।
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। মধ্য রাত থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করে। সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারপাশ। এ সময় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে যানবাহন। এমন অবস্থায় ভোগান্তি বেড়েছে অটোরিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষের।
১৮ মিনিট আগেরাজধানীর জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় বেলা পৌনে ১২টা থেকে ঢাকা-পদ্মা সেতু রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে চালকেরা অবরোধ তুলে নিলে ৩ ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
৩১ মিনিট আগেপ্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সংস্কৃতির নতুন রূপ হচ্ছে সিনেমা, যা সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রেখে চলেছে। সিনেমার মাধ্যমে একটি জাতিকে উজ্জীবিত করা যায়। তাই ভালো সিনেমা বিনির্মাণের বিকল্প নেই।
৪২ মিনিট আগেচট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে কক্সবাজারগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শাহ আমানত সেতুর টোলবক্সের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে পড়ে। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে।
১ ঘণ্টা আগে