আবারও গ্রেপ্তার সেই ‘চেয়ারম্যান’, অভিযোগ ছিনতাইয়ের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৩, ২৩: ০৯
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১০: ০৩

আবারও গ্রেপ্তার হয়েছেন কুড়িগ্রামের মাদক ও অপরাধ জগতে ‘চেয়ারম্যান’ খ্যাত মফিজুল ইসলাম (৩৫)। এবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ চালককে অচেতন করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাইয়ের। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এক সহযোগীসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মফিজুলকে গ্রেপ্তারের নায়ক স্থানীয় কয়েক যুবক।

মফিজুল ইসলাম কুড়িগ্রাম সদরের বেলগাছা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সরা ভোগরাম গ্রামের বাসিন্দা। পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী মফিজুল মাদক দুনিয়ায় ‘চেয়ারম্যান’ নামে পরিচিত। তাঁকে এ নামেই চেনেন সাঙ্গপাঙ্গ ও লেনদেনকারীরা। তাঁর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগসহ অন্তত ছয়টি মাদকের মামলা রয়েছে। একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বেরিয়ে আবারও তিনি পুরোদস্তুর মাদক কারবারি! রাত হলেই তাঁর বাড়িতে শুরু হয় মাদকসেবীদের আনাগোনা। বর্তমানে তিনি হেরোইন ও ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালকের নাম নূর হোসেন। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরুয়াপাড়ার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, গত ৭ জুলাই মধ্যরাতে মফিজুল তিন সহযোগীসহ জেলা শহরের বাসিন্দা নূর হোসেন নামে এক চালককে অচেতন করে ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যান। স্থানীয় কিছু যুবক বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে গত সোমবার রাতে মফিজুল ও তাঁর সহযোগী মিজানুর রহমানকে (৩৬) আটক করেন। পরে ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালক নূর হোসেন ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করেন। এলাকাবাসীর সামনে মফিজুল ও তাঁর সহযোগী মিজানুর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।

মফিজুল ও তাঁর সহযোগী মিজানুর জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয়দের জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁরা যাত্রীবেশে শহরের পৌর বাজারের সামনে থেকে নূর হোসেনের ইজিবাইকে ওঠেন। কিছু দূর গিয়ে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ইজিবাইক চালক নূর হোসেনকে ঘুমের ট্যাবলেটের গুঁড়া মেশানো পানি ও ফলের জুস খাওয়ান। এরপর কিছু দূর যাওয়ার পর নূর হোসেন ঘুমে অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে সদরের পৌর এলাকার ডাকুয়াপাড়া গ্রামের একটি সড়কের পাশে ফেলে রেখে তাঁরা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান। পরে জোবায়ের নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। জোবায়ের উলিপুর উপজেলার বাসিন্দা। তবে তিনি বেলগাছা ইউনিয়নে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন বলে জানান অভিযোগ ওঠা ওই দুই ব্যক্তি।

অভিযোগ ওঠা ব্যক্তি মিজানুর বলেন, ‘আমি মফিজুলের মাদক বিক্রিকারী হিসেবে কাজ করি। মফিজুলের মাদক ব্যবসায় পুঁজির ঘাটতি হয়েছে। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তাঁর পরিকল্পনায় আমরা কয়েকজন মিলে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেই। জুস কেনা ও ঘুমের ওষুধ মেশানোর কাজ মফিজুল ও তার ভাগনে সিরাজুল করেছে। আর অটোর চালককে জুস খাওয়াইছে সিরাজুল।’

মফিজুলকে আটককারী যুবকদের একজন আতাউর বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে আমরা ছিনতাইকারীদের আটক করেছি। তাদের কাছে ইজিবাইকের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আমরা পুলিশে খবর দিয়েছি। পুলিশ ইজিবাইক উদ্ধারের আশ্বাস দিয়ে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।’ 

সদর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আখতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা মফিজুল ও মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ছিনতাই করা ইজিবাইকটি উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এর আগেও মাদক মামলায় মফিজুল একাধিকবার গ্রেপ্তার হন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত