নবীগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯: ০২
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ২০: ২৬

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বকেয়া বেতন, রেশন, চিকিৎসা, স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে চার দিন ধরে কর্মবিরতিতে রয়েছেন ইমাম ও বাওয়ানী চা-শ্রমিকেরা। সেই সঙ্গে আজ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন তাঁরা। আজ মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের রোকনপুর বাজারে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে এই দুই চা-বাগানের দুই হাজার শ্রমিক অংশ নেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানের দুই হাজার নারী-পুরুষ চা-শ্রমিকের কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে দুটি বাগানে ম্যানেজার ছাড়া চলছে কার্যক্রম। প্রায় চার সপ্তাহ ধরে ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানের দুই হাজার শ্রমিকের মজুরি, রেশনের ১৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ সালের শ্রমিকদের এরিয়া বোনাসের ২৩ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২০২২ সালের এরিয়া বোনাসের ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করছে না মালিকপক্ষ। বিষয়টি বাংলাদেশ চা বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানান চা-শ্রমিকেরা। কিন্তু তাতেও মেলেনি সমাধান। বাধ্য হয়ে গত (৩০ ডিসেম্বর) থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন দুই বাগানের চা-শ্রমিকেরা। কোনো সুরাহা না হওয়ায় আজ দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তাঁরা। এ সময় আধা ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, চার সপ্তাহ ধরে চা-শ্রমিকদের বেতন-রেশন দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। ফলে চা-শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিষয়টির দ্রুত সমাধান না হলে বড় আকারে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। 

এ নিয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে প্রসঙ্গে ইমাম ও বাওয়ানী চা-বাগানের মালিক জি কে মাইনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাগানে এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ব্রোকাররা আমাদের টাকা না দেওয়ায় দুই সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা তাঁদের রেশন দিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা হবে। কাজ বন্ধ রাখার কারণে চা-পাতা নষ্ট হচ্ছে। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান শাহরীয়ার বলেন, ‘বাগানের মালিকপক্ষ চা-শ্রমিকদের বেতন, এরিয়া বোনাস না দেওয়ার কারণে চা-শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। দুটি চা-বাগানে ২৭৫টি চা-শ্রমিক পরিবারের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এই দুই চা-বাগানের মালিকপক্ষের কাছে সরকারের খাজনা বাবদ প্রায় ৬৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত