সিলেট-সুনামগঞ্জে কমেছে নদ-নদীর পানি, ফিরছে স্বস্তি

সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২২, ২১: ১৪

গত দুদিন পর সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও কমতে শুরু করেছে সুরমা নদীর পানি। আজ শুক্রবার ভোররাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে এসব নদ-নদীর পানি কমতে দেখা গেছে। আবার দুপুরে আকাশে সূর্যের দেখা মেলায় বানভাসি মানুষের মাঝে স্বস্তি সঞ্চার হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমেছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ৮, শেওলা ৭, শেরপুর ৩ ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমেছে একই সময়ে। একইভাবে সিলেটের লোভা নদের লোভাছড়া পয়েন্টে ২২, সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে যাদুকাটার শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। তবে ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে সকাল বাড়লে সন্ধ্যায় কমে আগের অবস্থানে চলে যায়। 

এর আগে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট-সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। ফের দেখা দিয়েছিল বন্যার শঙ্কা। তবে সকাল থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল থেকে পানিও নেমেছে কিছুটা। 

সিলেট সুনামগঞ্জে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। আজ দুপুরে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে পানি নামতে না পেরে খালের পানি উপচে বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। এতে জলাবদ্ধ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর শাহজালাল উপশহর, তেররতন, যতরপুর, মিরাবাজার, সোবহানীঘাট, মেন্দিবাগ, মাছিমপুর, ছড়ার পাড়, কালীঘাট, মির্জাজাঙ্গাল, তালতলা, জামতলা এলাকায় পাড়া-মহল্লায় পানি রয়েছে।

সিলেট নগরীর ছড়ার পাড়ের বাসিন্দা রিয়াদ কামাল বলেন, ‘সকাল থেকে অনেক পানি কমেছে। এভাবে কমলে দু-এক দিনের মধ্যে সব জায়গা শুকিয়ে যাবে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে ঈদটা করতে পারবে। যদি বন্যায় অনেকেরই ঈদ আনন্দ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।’ 

সিলেটের গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর গ্রামের রুস্তুম আলী বলেন, ‘পানি তো কমতেছে আজ। কিন্তু আমরার তো কিচ্ছু নাই সব শেষ। তবুও পানি কমলে কাজ-কাম করতে পারমু। এই অবস্থা থাকলেও না খেয়ে মরতে হবে।’ 

সিলেট সুনামগঞ্জে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। সুনামগঞ্জ পৌরসভার মরাটিলা এলাকারা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘পানি সকাল থেকে অনেকটা কমেছে। তবে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি আছে। কয়েক দিন আগে যে ভয়াবহ বন্যা দেখেছি তা আর দেখতে চাই না। ঘরের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এসবের মধ্যে আবার পানি আসা দেখে ভয় পেয়েছিলাম। আজকে কিছুটা স্বস্তি লাগছে।’ 

তেঘরিয়া এলাকার সালমান আহমদ বলেন, ‘বৃষ্টি কমায় নদীর পানি কমছে। রাতে তেমন একটা বৃষ্টি হয়নি। আবার বৃষ্টি হলে পানি বাড়বে। আসলে এই জুন-জুলাই মাসটা আসলে আমরা ভয়ে থাকি। প্রতি বছর এখানে এই সময়টা পানি আসে।’ 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং আমাদের সিলেট-সুনামগঞ্জেও বৃহস্পতিবার তেমন একটা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে যদি আবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয় তাহলে নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে।’

প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘সিলেটে দুই-এক দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও বন্যার আশঙ্কা নেই। এ ছাড়া নদ-নদীর পানিও কমে যাচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত