গভীর রাতে তুলে নেওয়া শিক্ষার্থীদের দুপুরে ছাড়িয়ে আনলেন শাবি শিক্ষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
Thumbnail image

সিলেটে গভীর রাতে তুলে নেওয়া তিন শিক্ষার্থীকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষকেরা। এর আগে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন নিহারীপাড়া এলাকার মেস থেকে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

ওই তিন শিক্ষার্থী হলেন, শাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মনির হোসেন, পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. সোহাগ এবং সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আনাস মিয়া। তাঁরা সবাই নিহারীপাড়ায় ব্লক সি-৭১ নম্বর বাসার একটি মেসে ভাড়া থাকেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষকেরা সিলেট মহানগরীর (এসএমপি) কোতোয়ালি থানায় যান। সেখানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা আলোচনা করে তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন। শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ আতিকুল হক ও পরিসংখ্যান বিভাগের খালিদুর রহমান।

মেসে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার্থী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘রাত সাড়ে ৩টায় পুলিশের ওয়াকিটকির শব্দে ঘুম ভাঙে। পুলিশ কক্ষে সবকিছু তল্লাশি করে। বাড়ি কোথায়, কেউ কোনো দল করে কিনা, সবাইকে জিজ্ঞেস করে। তারপর সবার মোবাইল চেক করে। পরে তিনজনকে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে নিতে চাইছিল। আমি পরীক্ষার্থী বলায় ছেড়ে দিছে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওরা রাতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে মেসে অবস্থান করছিল। আমাদের সন্দেহ হলে থানায় নিয়ে আসি। পরে শিক্ষকেরা এসে পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, এরা তাঁদের শিক্ষার্থী। তাঁদের জিম্মায় ওদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোর ৪টার দিকে তুলে নিয়ে যায়। বেলা ১১টায় আমরা খবর পাই। আমরা গিয়ে থানার ওসির সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলি। ওরা নিরীহ শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ আমাদের জিম্মায় শিক্ষার্থীদের ছাড়তে রাজি হয়।’

এদিকে শাবি এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে সাঈদুর মিয়া (১৭) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বিকেলে কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক সাঈদুর ওসমানীনগরের বুরঙ্গা গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে। সে বুরঙ্গা ইকবাল আহমেদ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবার পরীক্ষা দিচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালন করতে তাঁরা জড়ো হচ্ছিলেন। পরে সোয়া ৩টার দিকে কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন সড়কে জড়ো হতে চাইলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ পেছন থেকে ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় এসএমপির জালালাবাদ থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একে পরীক্ষার্থী তার ওপর বয়স বিবেচনা করে সাঈদুরকে তার বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত