দাবি মানার আশ্বাসে সিকৃবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার, প্রক্টর অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
Thumbnail image
প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ভিসিসহ অর্ধশত শিক্ষক, কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনভর বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ভিসিসহ অর্ধশত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করার পর ৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

এ কারণে আগামীকাল বুধবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিবেন তাঁরা। এরই মাধ্যমে তিন দিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সোহেল আহমেদ অয়ন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ৮ দফা দাবির মধ্যে মূল দাবি ছিল প্রক্টরের পদত্যাগ। উপাচার্য আমাদেরকে এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবি যে কারণে ছিল সেটি ভুলক্রমে হয়েছে। এজন্য তারা ক্ষমা চেয়েছে এবং আমরা মেনে নিয়েছি এবং তারা বাকি দাবিগুলোও মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী প্রক্টর ড. মোজাম্মেল হককে সাময়িক অপসারণ করা হয়েছে। আপাতত অন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় তারা আন্দোলন স্থগিত করেছে। বুধবার থেকে যথারীতি ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।

তিনি বলেন, ঘটনার রাতে প্রক্টর দায়িত্ব অবহেলা করেছেন কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবে। এ ছাড়া বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ড. মোজাম্মেল তাঁর প্রক্টরিয়াল দায়িত্ব পালন না করলেও ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন।

এর আগে, তৃতীয় দিনের মতো আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে টিএসসিতে জড়ো হোন শিক্ষার্থীরা। টিএসসি থেকে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের দিকে এগিয়ে যান এবং উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করলে বাইরে দিয়ে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। দিনভর সেখানে অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

sylhet-2

পরবর্তীতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নিচে নেমে আসেন সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলিমুল ইসলাম। এ সময় শিক্ষার্থীরা একে একে দাবিগুলো আবার পেশ করলে উপাচার্য সেগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর সিকৃবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি ক্যাম্পাস এলাকায় ছাত্রদলের একটি ব্যানার টাঙানো হয়। এ ঘটনায় প্রশাসনকে জানিয়েও প্রতিকার পাননি বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। এই ব্যানার নিয়ে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার (২৪ অক্টোবর) রাতে সিকৃবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনাকে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ’ বলা; তাঁদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং ব্যানার ছেঁড়ার ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, প্রশাসনিক ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত