উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২১ ঘণ্টা ধরে অনশনে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫২
Thumbnail image

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ২১ ঘণ্টা ধরে অনশনে আছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এখনো পর্যন্ত পদত্যাগ নিয়ে কোনো সদুত্তর না আসায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এদিকে দীর্ঘ সময় অনশনে থাকায় অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দুজনকে রাগিব রাবেয়া মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। 

গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে স্বেচ্ছায় অনশন শুরু করেন তাঁরা। অনশনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৯ জন ও ছাত্র ১৫ জন।

আজ বেলা ১১টায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের মেডিকেল চেকআপ করানো হয়েছে। এরপর সাড়ে ১১টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে আন্দোলনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ঘটনা পাঠ করে শোনান তাঁরা। 

সরকারে পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত কমিটি করা হলে তারা মেনে নেবেন কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে তাঁরা বলেন, এখন তাঁরা সেই পরিস্থিতিতে নেই। তাঁদের একটাই দাবি, উপাচার্যের পদত্যাগ। 

কিন্তু গতকাল রাতে শতাধিক সিনিয়র শিক্ষক তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। কিন্তু দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো সম্মতি না দেওয়ায় তাঁরা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান।  

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এসেছিলাম আমাদের শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে। আমরা তাদের কাছে সেই সময়টুকু চেয়েছি, যেন এ ঘটনার পেছনে কারা জড়িত সেটা খুঁজে বের করতে পারি। শিক্ষার্থীরা আমাদের ওই সুযোগটা দেয়নি। আমরা আবার চেষ্টা করব, যেন তাদের বোঝাতে পারি।’ 

এ সময় শিক্ষকেরা আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীদের স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছে এক দফা দাবির সঙ্গে একমত কি না, তা ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’—এই দুটির যেকোনো একটি জানতে চান। 

আমরণ অনশনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরাশিক্ষার্থীরা বলেন, ‘যদি আপনারা আমাদের এক দফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তাহলে আমরা আপনাদের সঙ্গে কথা বলব। এ ছাড়া আমরা আপনাদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি নই।’ 

শিক্ষকদের কথা বলার সুযোগ কেন দেওয়া হচ্ছে না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের দাবির সঙ্গে শিক্ষকেরা একাত্মতা পোষণ করছেন না। তাঁদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলেই তাঁরা সব ধরনের আলোচনায় বসবেন। 

উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে শাবিপ্রবির একটি আবাসিক হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার রাতে আন্দোলনরতদের ওপরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। পরদিন হামলার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সড়ক অবরোধ করেন।

রোববার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ কার্যালয় থেকে বের হলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ এসে তাদের লাঠিপেটা করে। পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থীসহ অনেকে আহত হন। এ ঘটনার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের জন্য বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে পদত্যাগ না করায় গতকাল থেকে অনশনে বসেন তাঁরা।

শাবিপ্রবি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত