আফগানিস্তানে তালেবানের হাতে এখন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ মুদ্রা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১: ৫২

তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের মুদ্রা এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (ত্রৈমাসিক) আফগানিস্তানের মুদ্রা এমন অবস্থানে উঠে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে আফগান আফগানির (২০০৩ সালে প্রচলন করা আফগানিস্তানের মুদ্রা) দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দারিদ্র্যপীড়িত একটি দেশের জন্য এটি অস্বাভাবিক হলেও, বড় অর্জন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন মদদপুষ্ট সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এর মধ্য দিয়ে প্রায় দুই দশকের যুদ্ধ ও সংঘাতের অবসান ঘটে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ক্ষমতা দখলের পরপরই আফগানিস্তান থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তালেবান সরকার এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। 

এ ছাড়া তালেবান ক্ষমতায় আসার পরই নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে থাকা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মানবিক সহায়তা থেকে পাওয়া শত শত কোটি ডলার এবং এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের কল্যাণেই দ্বিতীয় প্রান্তিকে আফগানিস্তানের মুদ্রা বিশ্বব্যাপী র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছে। যেখানে আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় খারাপ। সেই সঙ্গে ভয়াবহ দারিদ্র্যপীড়িত একটি জনগোষ্ঠী নিয়ে এমন অবস্থানকে অস্বাভাবিকই ভাবা হচ্ছে।

দুই বছর আগে ক্ষমতা দখলের পর তালেবান সরকার নিজেদের মুদ্রা আফগানির অবস্থান শক্ত রাখতে একাধিক ব্যবস্থা চালু করেছে। এর মধ্যে স্থানীয় লেনদেনে ডলার এবং পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং দেশের বাইরে থেকে কাগজের নোট আকারে ডলার আনার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অন্যতম। আফগানিস্তান অনলাইন ট্রেডিং অবৈধ করেছে এবং নিয়ম লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ডের বিধান রেখেছে।

আফগানিস্তানে এখন বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয় মানি এক্সচেঞ্জারের মাধ্যমে। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় সারাফ। বিদেশি নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন সব ধরনের মুদ্রাই দেশটিতে প্রবেশ করে আফগানির মাধ্যমে। এমনকি দেশটির ভেতরে কোনো বিদেশি মুদ্রার কার্যক্রম চলে না। 

মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, নগদ প্রবাহ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্বিতীয় প্রান্তিকে আফগানির দাম প্রায় ৯ শতাংশ বাড়াতে সহায়তা করেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় আফগান মুদ্রা কলম্বিয়ার মুদ্রা পেসোকে (৩ শতাংশ দাম বেড়েছে) ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর আফগানির দাম বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ফলে কলম্বিয়া এবং শ্রীলঙ্কার মুদ্রার পেছনেই বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষ তৃতীয় অবস্থানে উঠে গেছে আফগানিস্তানের মুদ্রা।

২০২১ সালের মার্চে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ৭৭ দশমিক ৩০ আফগানি। তালেবানের ক্ষমতা দখলের একদিন আগে বিনিময় হার ছিল ৮৮ আফগানি। সেখানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর ২০২১ সালের নভেম্বরে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১৩০ আফগানিতে পৌঁছায়। 

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারের বিনিময় হার অনুযায়ী, বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার চেয়ে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের মুদ্রা। ৭৭ আফগানিতে মিলছে ১ মার্কিন ডলার। যেখানে বাংলাদেশি মুদ্রায় ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত